মর্মান্তিক এক ঘটনা ঘটেছে ভারতের রাজস্থানে। বুধবার থেকে নিখোঁজ তিন বোনের লাশ উদ্ধার হয়েছে শ্বশুরবাড়ির কাছের কুয়া থেকে। ওই কুয়া থেকেই উদ্ধার হয়েছে বড় বোনের চার বছর ও ২২ দিনের দুই সন্তানের লাশ।
জানা গেছে, অন্য দুই বোনও গর্ভবতী ছিল। এই ঘটনায় শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের বিরুদ্ধে মামলা করে তদন্তে নেমেছে পুলিশ। নিহত তিন বোনের বাবার অভিযোগ, যৌতুকের জন্য অত্যাচার চালাত তার তিন মেয়ের স্বামীসহ পরিবারের অন্য সদস্যরা। তিন মেয়েকে পরিকল্পনা করে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি বাবার।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি জয়পুর জেলার দাদু এলাকার। শনিবার উদ্ধার হয় নিহত তিন বোন কালু মীনা (২৫), মমতা মীনা (২৩) ও কমলেশ মীনার (২০) লাশ। একই পরিবারে বিয়ে হয়েছিল তাদের।
নিহতদের বাবার অভিযোগ, যৌতুকের দাবিতে তিন বোনের ওপরে নিয়মিত নির্যাতন চালাত স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির অন্যরা। কিছু দিন আগেই ছোট বোন কমলেশ বাবাকে ফোন করে সেই কথা জানায়ও।
কমলেশ জানায়, তাদের মারধর করা হচ্ছে। প্রাণহানীর আশঙ্কা রয়েছে। এরপর ওই ব্যক্তি মেয়েদের শ্বশুরবাড়িতে হাজির হন। যদিও তাকে গালিগালাজ করে বাড়ি থেকে বের করে দেয়া হয়। এমনকি বলা হয়, তার মেয়েরা মারা গেছে। তিনি যেন এখনই বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান।
এরপরই ওই ব্যক্তির অভিযোগের ভিত্তিতে স্থানীয় থানায় অভিযোগ দায়ের করে পুলিশ। অন্যদিকে শ্বশুরবাড়ির কাছের কুয়া থেকে উদ্ধার হয় তিন বোন ও দুই শিশুর লাশ। দুই শিশু বড় বোন কালুর সন্তান। একজনের বয়স চার বছর, অন্য জনের বয়স ২২ দিন। জানা গেছে অন্য দুই বোনও ৭ ও ৮ মাসের গর্ভবতী ছিলেন। নিহতদের বাবার অভিযোগ, যৌতুকের জন্যই তার মেয়ে ও নাতিদের পরিকল্পনা করে হত্যা করা হয়েছে।
এদিকে এই ঘটনায় নড়চড়ে বসেছে সমাজকর্মীরা। পিপলস ইউনিয়ন ফর সিভিল লিবার্টিসের কবিতা শ্রীবাস্তবের বক্তব্য, পাঁচজন নয়, আসলে সাতজনকে খুন করেছে শ্বশুরবাড়ির লোকেরা। ছোট দুই বোনও গর্ভবতী ছিল। দোষীদের কড়া শাস্তির দাবি জানিয়েছেন কবিতা।
পুলিশ জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে একজন নিখোঁজ হওয়ার আগের রাতে হোয়াটঅ্যাপ স্টেটাসে শ্বশুরবাড়ির নির্যাতনের কথা জানিয়েছিল। ‘এর থেকে মরে যাওয়া ভালো’ এমন মন্তব্যও করেন তিনি। অভিযুক্ত শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের আটক করে ঘটনার তদন্তে নেমেছে পুলিশ।
সূত্র : সংবাদ প্রতিদিন