অমর একুশের গানের রচয়িতা, ভাষা সৈনিক, শক্তিমান কলামিস্ট, সাংবাদিক আব্দুল গাফফার চৌধুরীর মহাপ্রয়াণে এক স্মরণসভার আয়োজন করে ‘স্কলারস বাংলাদেশ’। শনিবার (২৮ মে) নিউইয়র্কে এ নাগরিক স্মরণসভার আয়োজন করা হয়।
প্রবীন সাংবাদিক সৈয়দ মোহাম্মদ উল্লাহর সভাপতিত্বে আলোচনা সভার সঞ্চালনা করেন হোস্ট সংগঠনের প্রধান এম ই চৌধুরী শামীম। শুরুতে রূপা চৌধুরীর নেতৃত্বে সমবেত কন্ঠে ‘আগুনের পরশমনি ছোঁয়াও প্রাণে-এ জীবন পুণ্য করো দহন-দানে’ পরিবেশিত হয়। এরপর অবিস্মরণীয় সেই ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি আমি কী ভুলিতে পারি’ গাইতে গাইতে উপস্থিত সকলে গাফফার চৌধুরীর প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ অর্পণ করেন। এসময় গোটা পরিবেশ ভিন্ন এক আমেজে আবর্তিত হয়।
কলামিস্ট-সাংবাদিক-কবি গাফফার চৌধুরীর জীবন-কর্ম নিয়ে আলোচনার ফাঁকে ‘সময়ের ঘড়ি’ নামক একটি গ্রন্থের মোড়ক উম্মোচন করেন অতিথিবৃন্দ। আব্দুল গাফফার চৌধুরীর লেখা ৮০/৯০টি কবিতার সংকলন এটি প্রকাশ করেছেন এম ই চৌধুরী শামীম। তিনি জানান, এটির মোড়ক উম্মোচন করার কথা ছিল গাফফার চৌধুরীর। কিন্তু তার আগেই আমাকে তাকে হারালাম এবং বইটি তার হাতে পৌঁছে দেয়াও সম্ভব হয়নি। অথচ এটি ছিল তার লেখা কবিতার একমাত্র সংকলন।
লেখক-সাংবাদিক হাসান ফেরদৌস বলেন, বহুমুখী প্রতিভার অধিকার ছিলেন এবং বহু পরিচয় ছিল আব্দুল গাফফার চৌধুরীর। সব পরিচয় ছাপিয়ে যে পরিচয়টি আমার চোখে ভাসে সেটি হচ্ছে তিনি ছিলেন আদ্যোপান্ত বাঙালি। তার সঙ্গে আমাদের একটা মিল আছে, মানে আমরা যারা প্রবাসী। ১৯৭৪ সাল থেকেই তিনি প্রবাসে ছিলেন। এবং তার হৃদয় জুড়ে বিরাজ করতো প্রিয় মাতৃভূমি-যা তার লেখনিতে প্রকাশ পেয়েছে।
আলোচনাকালে বিটিভি’র সাবেক প্রযোজক, চারণকবি বেলাল বেগ বলেন, আমাদের হৃদয়ে থাকবে একজন চন্ডিদাস, একজন রবীন্দ্রনাথ, একজন নজরুল এবং একজন গাফফার চৌধুরী। তার কারণ হচ্ছে তিনি বাঙালিত্বকে জাগ্রত রাখতে অবিস্মরনীয় একটি কবিতাটি লিখেছিলেন- যা বাঙালি বিশ্বে চিরভাস্বর হয়ে থাকবে।
এসময় গাফফার চৌধুরীর আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে স্মৃতিচারণ করেন নিউইয়র্কে বাংলাদেশের কন্সাল জেনারেল ড. মুনিরুল ইসলাম, বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা খান মিরাজ, লেখক-সাংবাদিক হাসান ফেরদৌস, বীর মুক্তিযোদ্ধা-কন্ঠশিল্পী তাজুল ইমাম, কম্যুনিটি লিডার মোর্শেদ আলম, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব সউদ চৌধুরী প্রমুখ।