বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২:১২ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
ইসকন ইস্যুতে দেশি-বিদেশি ইন্ধন থাকতে পারে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা চট্টগ্রামে আইনজীবী হত্যা, যে নির্দেশ দিলেন প্রধান উপদেষ্টা স্বৈরাচার পালিয়ে গেলেও তাদের লেজ রেখে গেছে : তারেক রহমান আইনজীবীকে ‘কুপিয়ে হত্যা করল’ ইসকন সদস্যরা অনির্দিষ্টকালের জন্য সেন্ট গ্রেগরি হাইস্কুল বন্ধ ঘোষণা অহিংস গণঅভ্যুত্থানের আহ্বায়কসহ ১৮ জনকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ ঢাকা ও চট্টগ্রামে ১০ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন রাষ্ট্রদ্রোহের ঘটনায় যুক্ত থাকলে ছাড় দেয়া হবে না : আসিফ মাহমুদ চিন্ময়কে গ্রেফতারের নিন্দা জানিয়ে ভারতের বিবৃতি মানুষ কেন তাদের ওপর বিক্ষুব্ধ, গণমাধ্যমের তা স্পষ্ট করা উচিত : নাহিদ ইসলাম

তহবিল সঙ্কট বেড়ে যাওয়ায় বিপাকে আর্থিক প্রতিষ্ঠান

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারী, ২০২০
  • ২৪৬ বার

ঋণ আদায় কমে গেছে। সেই সাথে বেড়েছে অর্থ উত্তোলনের চাপ। এতে চরম বেকায়দায় পড়ে গেছে বেশির ভাগ আর্থিক প্রতিষ্ঠান। বিশেষ করে পিপলস লিজিং অবসায়নের পর এ সঙ্কট আরো ঘনীভূত হয়েছে। অনেকটা আস্থার সঙ্কটের কারণেই এসব প্রতিষ্ঠানের অর্থ উত্তোলনের চাপ বেড়ে গেছে।

পরিস্থিতি মোকাবেলায় একসাথে অর্থ উত্তোলন না করতে ব্যাংকগুলোকে পরামর্শ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আর সঙ্কট মেটাতে প্রতিষ্ঠানগুলোর শীর্ষ নির্বাহীরা সরকারের নীতিনির্ধারণী পক্ষের দ্বারস্থ হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এরই অংশ হিসেবে শিগগিরই অর্থমন্ত্রীর সাথে তারা সাক্ষাৎ করবেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।

এ বিষয়ে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন বাংলাদেশ লিজিং অ্যান্ড ফিন্যান্স কোম্পানিজ অ্যাসোসিয়েশনের (বিএলএফসিএ) চেয়ারম্যান ও ন্যাশনাল হাউজিং ফিন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মো: খলিলুর রহমান গতকাল নয়া দিগন্তকে জানিয়েছেন, দুই-একটি প্রতিষ্ঠানের কারণে কিছুটা আস্থার সঙ্কট দেখা দিয়েছে। কিছু প্রতিষ্ঠান গ্রাহকের অর্থ ফেরত দিতে পারছে না। এরই ধারাবাহিকতায় কিছু ব্যাংক তাদের তহবিল উত্তোলন করতে চাচ্ছে। এতে কিছু প্রতিষ্ঠানের তহবিল সঙ্কট দেখা দিয়েছে।

তবে পরিস্থিতি শিগগিরই কেটে যাবে বলে তিনি আশা করেন। কারণ ইতোমধ্যেই অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে নির্দেশনা এসেছে, তাদের তহবিল অর্ধেক সরকারি ব্যাংকে এবং বাকি অর্ধেক বেসরকারি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছে রাখতে। অপর দিকে পুঁজিবাজারেও লেনদেন বাড়ছে। সবমিলেই আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য সামনে সুদিনই আসছে বলে তিনি মনে করেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের এমডি গতকাল নয়া দিগন্তকে জানিয়েছেন, আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো বহুমুখী সঙ্কটে পড়ে গেছে। প্রথমত, কিছু কিছু প্রতিষ্ঠান আগ্রাসী ব্যাংকিং করেছিল। বুঝে, না বুঝে আমানতের বেশি ঋণ বিতরণ করেছে। কিন্তু যারা ঋণ নিয়েছিলেন তারা আর ঋণ ফেরত দিচ্ছেন না।

আবার কেউ কেউ সরকারি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে উচ্চ সুদে আমানত নিয়েছেন। আর ওই আমানতের অর্থ নামে-বেনামে প্রতিষ্ঠানের পরিচালকরা ভাগবাটোয়ারা করে নিয়েছেন। কিন্তু ওই অর্থ আর ফেরত দিচ্ছেন না। এতে সরকারি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে সংগৃহীত আমানত আর তারা ফেরত দিতে পারছেন না।

এতে দেখা দিয়েছে আস্থার সঙ্কট। আবার আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর অন্যতম অর্থের জোগান দেয় দেশের ব্যাংকগুলো। কিন্তু ব্যাংকগুলোর চাহিদা অনুযায়ী বেশির ভাগ আর্থিক প্রতিষ্ঠানই ফেরত দিতে পারছে না। এতে ব্যাংকগুলোর পক্ষ থেকে তাদের আমানতের অর্থ সংরক্ষণ করতে সংশ্লিষ্ট আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে অর্থ উত্তোলন করতে চাচ্ছে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট আর্থিক প্রতিষ্ঠান এখন আর ব্যাংকের অর্থ ফেরত দিচ্ছে না। এতে নতুন করে কোনো ব্যাংক আর আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে আমানত দিচ্ছে না। এভাবেই নগদ টাকার প্রবাহ কমে গেছে বেশির ভাগ আর্থিক প্রতিষ্ঠানের।

তহবিল সঙ্কটের কারণে বেশির ভাগ আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ঋণকার্যক্রম বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। এর সাথে দীর্ঘ দিন যাবৎ পুঁজিবাজারে মন্দার কারণে পুঁজিবাজার থেকে মুনাফানির্ভর আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোও বেকায়দায় পড়ে গেছে। এর বাইরে সাম্প্রতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান রিলায়েন্স ও এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের সাবেক এমডি প্রশান্ত কুমার হালদারের ঋণকেলেঙ্কারির ঘটনা লিজিং প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর ভরসার স্থান আরো প্রশ্নের মুখে পড়েছে।

সবমিলিয়েই অনেক প্রতিষ্ঠানের এখন ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা। অনেক প্রতিষ্ঠানে এখন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়মিত বেতনভাতা পরিশোধেই কষ্টকর হয়ে পড়েছে।

পরিস্থিতি থেকে উত্তোরণে সাম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকে অনুষ্ঠিত ব্যাংকার্স বৈঠকে একসাথে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে অর্থ উত্তোলন না করতে এমডিদের পরামর্শ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ দিকে গতকাল বিএলএফসিএর নবনির্বাচিত নেতৃবৃন্দ বাংলাদেশ ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠক করেছেন। ওই বৈঠকে কিভাবে এ খাতের সঙ্কট উত্তোরণ করে সামনের দিকে এগোনো যায় সে নিয়ে পর্যালোচনা করা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।

এ বিষয়ে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর বাংলাদেশ ব্যাংকের দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী পরিচালক শাহ আলম নয়া দিগন্তকে জানিয়েছেন, বিএলএফসিএর নবনির্বাচিত নেতৃবৃন্দ এসেছিলেন। তাদের সাথে অনানুষ্ঠানিক কিছু মতবিনিময় করা হয়েছে। চলমান অবস্থা কিভাবে কাটানো যায় সে বিষয়ে বিএলএফসিএ নেতৃবৃন্দকে পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com