মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক বিপর্যয়ের জন্য যারা দায়ী, তাদের শাস্তির হুঁশিয়ারি দিলেন আমেরিকান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। জানালেন, এর জন্য প্রত্যেককে জবাবদিহি করতে হবে।
আমেরিকার ষোড়শ বৃহত্তম ব্যাংক ছিল সিলিকন ভ্যালি। গত শুক্রবার ব্যাংকটি বন্ধ হয়ে গেছে। দেউলিয়া হয়ে যাওয়ার পর ব্যাংকটির গচ্ছিত অর্থ অধিগ্রহণ করেছে সরকার। ২০০৮ সালের বিশ্বব্যাপী আর্থিক মন্দার পর, একেই খুচরো ব্যাংকিং ব্যবস্থায় সবচেয়ে বড় ব্যর্থতা বলা হচ্ছে।
সিলিকন ভ্যালি প্রসঙ্গে রোববার রাতে একটি বিবৃতিতে বাইডেন বলেন, ‘আমাদের ঐতিহাসিক এবং অর্থনৈতিক সম্পদকে রক্ষা করার জন্য কী ভাবে ব্যাংকিং ব্যবস্থাকে আরও উন্নত করা যায়, তা নিয়ে আমরা আলোচনা করব। একইসাথে, যারা এই ব্যাংকিং ব্যবস্থার বিপর্যয়ের জন্য দায়ী, তাদের জবাবদিহি করতে হবে।’
সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক আমেরিকায় অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল। বহু মানুষ এই ব্যাংকের ওপর ভরসা করে তাদের কষ্টার্জিত অর্থ সঞ্চয় করেছিলেন। কিন্তু সিলিকন ভ্যালি দেউলিয়া হয়ে যাওয়ার ফলে আমেরিকার ব্যাংকিং ব্যবস্থার প্রতি সাধারণ নাগরিকদের আস্থা টলে গিয়েছে। তা পুনরুদ্ধারে সচেষ্ট হয়েছেন বাইডেন। সোমবার নাগরিকদের আশ্বস্ত করার জন্য তিনি ব্যাংকিং ব্যবস্থার উন্নতির বিষয়ে আলোচনা করবেন বলে জানিয়েছেন।
প্রযুক্তিভিত্তিক স্টার্টআপগুলোতে বিনিয়োগের মাধ্যমে অল্প সময়ে বিপুল অর্থ সঞ্চয় করেছিল সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক। আমেরিকার বন্ডেই এই ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ বিনিয়োগ করেছিলেন। কিন্তু মুদ্রাস্ফীতির হার কমাতে ফেডারেল রিজার্ভ গত বছর সুদের হার বাড়াতে শুরু করে, যার ফলে বন্ডের দর কমে যায়। স্টার্টআপগুলোও করোনা মহামারীর পর থেকে ক্রমে দুর্বল হয়ে পড়ে। আস্থা হারিয়ে ব্যাংক থেকে গ্রাহকেরা তড়িঘড়ি সঞ্চিত অর্থ তুলে নিতে শুরু করেন।
গ্রাহকদের টাকার জোগান দিতে ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে নিজেদের শেয়ার বিক্রি করতে হয়। ফলে অচিরেই ব্যাংকের তহবিলে টান পড়ে। কিছু দিন আগেই সিলিকন ভ্যালি ব্যাংকের তরফে যে পরিসংখ্যান দেখানো হয়েছিল, তাতে বলা হয়, ব্যাংকটি গত কয়েক দিনে প্রায় ২০০ কোটি ডলার খুইয়েছে। ওই ব্যাংকে সঞ্চিত গ্রাহকদের অর্থের ভার নিয়েছে ক্যালিফোর্নিয়ার ফেডেরাল ডিপোজিট ইনসিওরেন্স কর্পোরেশন (এফডিআইসি)।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা