ঈদের আগে জমজমাট ব্যবসা হবে, তাই লাখ লাখ টাকার মালামাল উঠিয়েছেন বঙ্গবাজারের ব্যবসায়ীরা। কিন্তু আজ সকালের আগুনে তাদের সব আশা-আকাঙ্ক্ষা পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। আগুন লাগার খবর শুনে ব্যবসায়ীরা ঘটনাস্থলে ছুটে আসছেন। কিন্তু কোনো মালামালই দোকান থেকে বের করতে পারছেন না। শুধু চিৎকার করে কান্নকাটি করছেন।
এদিকে বাতাসের তীব্রতায় বঙ্গবাজারের আগুন ছড়িয়ে পড়েছে পাশের এনেক্সকো টাওয়ারে।
আবু জাফর নামে এক ব্যবসায়ী জানান, বঙ্গবাজারে তার দু’টি দোকান আছে। ২৪ বছর ধরে সেখানে ব্যবসা করছেন। ঈদের আগে দোকানে ৪০ লাখ টাকার মালামাল তুলেছিলেন।
কাঁদতে কাঁদতে বললেন, ‘আমার সব শেষ হয়ে গেছে।’
আরেক ব্যবসায়ী জানালেন তার খালাতো ভাই, মামাতো ভাই- সবার মিলে এক শ’র বেশি দোকান আছে। এটাই তাদের আয়ের উৎস এবং তাদের পরিবার এই আয়েই চলে।
তিনি বললেন, ‘দোকান থেকে কিচ্ছু বের করতে পারি নাই। নিঃস্ব হয়ে গেলাম ভাই।’
একই অবস্থা অ্যানেক্সকো মার্কেটের দোকানের মালিক আফসার হোসেন নাদিমের। বলেন, ‘মার্কেটের দোকান থেকে কোনো কিছু বের করতে পারি নাই। পুড়ে সব শেষ হয়ে গেছে।’
আরেক দোকান মালিক আল মামুন বলেন, ‘আগুন লেগেছে বঙ্গবাজার থেকে। আমার দোকান অ্যানেক্স মার্কেটে। দুই ঘণ্টা হলো এখানে এসেছি। ভয়ে কিছুই বের করতে পারিনি। এখন আমার দোকানও শেষ।
অন্য ব্যবসায়ীরা জানান, ঈদ উপলক্ষে শাড়ি, জিন্সের প্যান্টসহ বিপুল কাপড়ের স্টক ছিল তাদের দোকানে। সব দোকানে কাপড় থাকায় আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে।
আজ সকাল ৬টা ১০ মিনিটে বঙ্গবাজারে আগুন লাগে। এর পর থেকে বিভিন্ন জায়গায় আগুন ছড়িয়ে পড়ে। ফায়ার সার্ভিসের প্রথম ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছায় ৬টা ১২ মিনিটে। পর্যায়ক্রমে একের পর এক ইউনিট ঘটনাস্থলে যায়।
আগুন নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে বিমান বাহিনীর ফায়ার সার্ভিস। সকাল পৌনে ৮টার দিকে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় তারা। এছাড়া ঢাকার সবগুলো ফায়ার সার্ভিস ইউনিটকে ঘটনাস্থলে ডাকা হয়েছে বলে কর্মকর্তারা জানান।
আগুন নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনীর সম্মিলিত সাহায্যকারী দলের অংশ নেয়ার বিষয়টি আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতরের (আইএসপিআর) পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের ৫১টি ইউনিট।