বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৩৭ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
ইসকন ইস্যুতে দেশি-বিদেশি ইন্ধন থাকতে পারে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা চট্টগ্রামে আইনজীবী হত্যা, যে নির্দেশ দিলেন প্রধান উপদেষ্টা স্বৈরাচার পালিয়ে গেলেও তাদের লেজ রেখে গেছে : তারেক রহমান আইনজীবীকে ‘কুপিয়ে হত্যা করল’ ইসকন সদস্যরা অনির্দিষ্টকালের জন্য সেন্ট গ্রেগরি হাইস্কুল বন্ধ ঘোষণা অহিংস গণঅভ্যুত্থানের আহ্বায়কসহ ১৮ জনকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ ঢাকা ও চট্টগ্রামে ১০ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন রাষ্ট্রদ্রোহের ঘটনায় যুক্ত থাকলে ছাড় দেয়া হবে না : আসিফ মাহমুদ চিন্ময়কে গ্রেফতারের নিন্দা জানিয়ে ভারতের বিবৃতি মানুষ কেন তাদের ওপর বিক্ষুব্ধ, গণমাধ্যমের তা স্পষ্ট করা উচিত : নাহিদ ইসলাম

১০ মাসে রিজার্ভ থেকে সোয়া লাখ কোটি টাকার ডলার বিক্রি

এনবিডি নিউজ ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ৯ মে, ২০২৩
  • ৫৫ বার

-নগদ টাকার জোগান কমছে, বাড়ছে ধারের ওপর নির্ভরশীলতা
-রিজার্ভ নেমে এলো ২৯ বিলিয়ন ডলারে আইএমএফ বলছে ২১ বিলিয়ন

ব্যাংকগুলোর ডলার সঙ্কট কাটছে না। বরং দিন দিন এ সঙ্কট বেড়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে এ সঙ্কট মেটাতে সরকারি ব্যাংকগুলোর কাছে গত ১০ মাস ৮ দিনে (জুলাই-৮ মে) ডলার বিক্রি করেছে এক হাজার ১৯৪ কোটি ডলার, যা স্থানীয় মুদ্রায় প্রায় সোয়া লাখ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ১০৪ টাকা হিসেবে)। গতকাল সোমবারও চার কোটি ৭০ লাখ ডলার বিক্রি করা হয়েছে রিজার্ভ থেকে। সঙ্কটে পড়া ব্যাংকগুলোর কাছে ডলার বিক্রির বিপরীতে ব্যাংকগুলোর কাছ থেকে সমপরিমাণ স্থানীয় মুদ্রা টাকা তুলে নেয়া হয়েছে। আর এ কারণে এক দিকে নগদ অর্থ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভল্টে চলে যাওয়ায় ব্যাংকগুলোর নগদ অর্থে টানা পড়েছে। অপর দিকে ব্যাংকগুলোর কাছে ডলার বিক্রি করায় রিজার্ভও কমে যাচ্ছে। গত ১০ মাস ৮ দিনে প্রায় সাড়ে ১৩ বিলিয়ন ডলার কমে গেছে। গতকাল কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ কমে নেমেছে ২৯.৮ বিলিয়ন ডলারে। যদিও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল আইএমএফের হিসাব অনুযায়ী রিজার্ভ ২১ বিলিয়ন ডলারের ঘরে নেমে গেছে। আইএমএফ বলছে ঋণের কিস্তি ছাড় পেতে হলে নিট রিজার্ভ ২৪ বিলিয়ন ডলারের ওপর রাখতে হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে যেটুকু ডলার আহরণ করতে পারবে ব্যাংকগুলোকে ওইপরিমাণ পণ্য আমদানির জন্য এলসি খুলতে হবে। তবে, সরকারি ব্যাংকগুলোর ক্ষেত্রে ভিন্ন। কারণ, সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পে অতি প্রয়োজনীয় পণ্য কেনাকাটা করতে পণ্য আমদানির জন্য এলসি খুলতে হয়। কিন্তু সরকারি ব্যাংকগুলো আমদানি দায় মেটাতে সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা আহরণ করতে পারে না। এ কারণে বাধ্য হয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক তার রিজার্ভ থেকে সরকারি ব্যাংকগুলোকে ডলার সরবরাহ করতে হচ্ছে। গতকালের সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে গতকাল ৮ মে পর্যন্ত ১ হাজার ১৯৪ কোটি ডলার বিক্রি করা হয়েছে রিজার্ভ থেকে। এ হিসাবে গড়ে প্রতি মাসে বিক্রি করা হয়েছে প্রায় ১২০ কোটি ডলার। আর এ ডলার বিক্রির ধারা অব্যাহত রয়েছে। গতকালও কয়েকটি ব্যাংকের কাছে রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করা হয়েছে চার কোটি ৭০ লাখ ডলার। রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি বেড়ে যাওয়ায় কমে যাচ্ছে রিজার্ভের পরিমাণ।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল আইএমএফের কাছ থেকে ঋণ নেয়ার শর্ত হিসেবে আন্তর্জাতিক রীতি অনুযায়ী নিট রিজার্ভ গণনা করতে হবে। ইতোমধ্যে ৮ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করা হয়েছে পুনঃঅর্থায়ন তহবিল নামে। আর এ ৮ বিলিয়ন ডলার বাদ দিতে বলছে আইএমএফ। আর এ অর্থ বাদ দিয়ে নীট রিজার্ভ ২৪ বিলিয়ন ডলারের ঘরে রাখার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। আইএমএফের হিসাব আমলে নিলে নিট রিজার্ভ ২১ বিলিয়ন ডলারের ঘরে নেমে যাবে। এটাই বড় উদ্বেগের কারণ বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। কারণ, ব্যাংকগুলো প্রতিনিয়তই ডলার সঙ্কট কাটাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে হাত পাতছে। সরকারি কেনাকাটার দায় মেটাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাধ্য হয়ে রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করছে। সামনে এটা অব্যাহত থাকবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

এ দিকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নগদ অর্থে ব্যাংকগুলোর কাছে ডলার বিক্রি করছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হিসেবে গতকাল পর্যন্ত চলতি অর্থবছরের এক হাজার ১৯৪ কোটি ডলার বিক্রি করেছে। গতকাল কেন্দ্রীয় ব্যাংক ১০৪ টাকা ৫০ পয়সা দরে ৪ কোটি ৭০ লাখ ডলার বিক্রি করেছে। আর এ দর হিসেবে নিলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক গতকাল পর্যন্ত ডলার বিক্রি করে বাজার থেকে প্রায় সোয়া লাখ কোটি টাকা তুলে নিয়েছে। আর এ অর্থ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভল্টে চলে গেছে। যদিও কেন্দ্রীয় ব্যাংক, রেপো, বিশেষ রেপো ও বিশেষ তারল্য সহায়তার আওতায় ব্যাংকগুলোকে আবার ধার দিয়ে আসছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাজার থেকে ডলার বিক্রি করে টাকা তুলে নেয়ায় নগদ টাকার টান পড়েছে অনেক ব্যাংকের। এ কারণে, ওইসব ব্যাংকগুলো এখন কলমানিসহ বিভিন্ন উপায় উপকরণের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ পরিসংখ্যান মতে, ৯ মাসে (জুলাই-এপ্রিল) বাজারে উদ্বৃত্ত তারল্য কমেছে ৬৩ হাজার কোটি টাকার। চার লাখ ৪২ হাজার কোটি টাকা থেকে উদ্বৃত্ত তারল্য তিন লাখ ৭৯ হাজার কোটি টাকায় নেমে গেছে। ব্যাংকগুলোর তারল্য কমে যাওয়ার অর্থ হলো বিনিয়োগ সক্ষমতা কমে যাওয়া। ইতোমধ্যে ব্যাংকগুলো আমানত সংগ্রহ করতে সুদহার বাড়িয়ে দিচ্ছে। বিপরীতে ঋণের সুদহার বাড়াতে না পারলেও বিভিন্ন সার্ভিস চার্জের নামে গ্রাহকের কাছ থেকে বাড়তি অর্থ নিচ্ছে। এতে ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগ ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে। এর সরাসরি প্রভাব পড়ছে পণ্য উৎপাদন তথা মূল্যস্ফীতিতে।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com