ভাইস প্রেসিডেন্ট থাকার সময় বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ৫ মিলিয়ন ডলারের ঘুষ কেলেঙ্কারি সংক্রান্ত ফাইলটি এফবিআইয়ের কাছ থেকে চেয়েছেন হাউস ওভারসাইট কমিটির চেয়ারম্যান জেমস কামার।
রিপাবলিকান দলীয় সদস্য কামার এফবিআইয়ের পরিচালক ক্রিস্টোফার রের কাছে লেখা এক চিঠিতে প্রথমবারের মতো ঘুষের আকারটি প্রকাশ করেছেন। এতে তিনি জানিয়েছিলেন, ৩ মের মধ্যে ফাইলটি না দিলে তিনি অবমাননার কার্যক্রম শুরু করবেন।
ঘুষ-সংক্রান্ত ঘটনাটি ২০২০ সালের ৩০ জুনের। কাকতালীয়ভাবে এর মাত্র ১৭ দিন আগে তথা ওই বছরের ১৩ জুন ইউক্রেনের কর্মকর্তারা কিয়েভে এক সংবাদ সম্মেলন করে অভিযোগ করেছিলেন যে প্রকৃতিক গ্যাস কোম্পানি বারিসমার প্রতিষ্ঠাতা মাইকোলা লোচেভস্কির বিরুদ্ধে তদন্ত সমাপ্তি টানতে ৫ মিলিয়ন লাখ ডলার ঘুষ প্রদান করতে চাওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, এই বারিসমাই ২০১৪-২০১৯ সাল পর্যন্ত জো বাইডেনের বড় ছেলে হান্টার বাইডেনকে নিয়োগ দিয়েছিল এবং প্রতিষ্ঠানটির একজন নির্বাহী ২০১৫ সালের ১৬ এপ্রিল ওই সময়ের ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সাথে ওয়াশিংটনে ডিনারে মিলিত হয়েছিলেন।
ইউক্রেনের কর্মকর্তারা ২০২০ সালে যেসব নগদ অর্থ জব্দ করেছিলেন, সেগুলো আমেরিকান ১০০ ডলার নোটে প্রদান করা হয়েছিল। এটি জো বাইডেনের বিরুদ্ধে যে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ রয়েছে, তার সাথে মিলে যায়।
ইউক্রেনের দুর্নীতি দমন ব্যুরো ওই সময় জানিয়েছিল যে কিয়েভের তিন আমলাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এদের মধ্যে বর্তমান ও সাবেক কর কর্মকর্তাও রয়েছেন। আর মধ্যস্ততাকারী হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত একজনকে ১ মিলিয়ন ডলার প্রদানের প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছিল।
কামার বলেন, জো বাইডেন যখন ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন, তখন ঘুষের এই কেলেঙ্কারিটি ঘটে।
ইউক্রেনের দুর্নীতি দমন ব্যুরোর আইনজীবী নাজার খোলোদনিটস্কি এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন যে এই বিশেষ প্রক্রিয়ায় জো বাইডেন বা তার ছেলে হান্টার বাইডেনের নাম নেই।
তবে কামারের চিঠিতে বলা হয়েছে, আড়াই সপ্তাহ পর এফবিআইয়ের নথিতে ঘুষ ‘সৃষ্টি কিংবা সংশোধন’ করার জন্য জো বাইডেনকে অভিযোগ করা হয়েছিল।
ওভারসাইট কমিটি অবশ্য জানায়নি যে কোথায় বাইডেন ঘুষ গ্রহণ করেছিলেন। তবে তা চীনে সম্ভবত হয়নি। তা হয়ে থাকতে পারে রাশিয়া বা ইউক্রেনে। উল্লেখ্য, চীনে বাইডেন পরিবারের দুটি আকর্ষণীয় ব্যবসা ছিল।
তবে বারিসমার সাথে সম্পৃক্ত ওই ঘুষ কেলেঙ্কারি যদি ঘটেই থাকে, তবে তা মার্কিন নীতি নির্ধারণে কী প্রভাব ফেলেছিল, তা পরিষ্কার নয়।
তবে বাইডেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে যে তার ছেলে হান্টার বারিসমার বোর্ডে গোপনে যোগদানের পর তিনি ইউক্রেনের একটি প্রাকৃতিক গ্যাস শিল্পকে সমর্থন করেছিলেন।
আরো অভিযোগ রয়েছে যে বারিসমার ঘটনা তদন্তে নিয়োজিত আইনজীবীকে বরখাস্ত করতে ইউক্রেনকে চাপ দিতে ইউএস এইডকে ব্যবহার করেছিলেন হান্টার বাইডেন।
উল্লেখ্য, কোনো অভিজ্ঞতা না থাকলেও বারিসমার বোর্ডে নিয়োগ পেয়ে হান্টার বাইডেন বছরে ১ মিলিয়ন লাখ ডলার বেতন পেতেন।
তবে এফবিআই এ-সংক্রান্ত ফাইল দিতে অস্বীকার করে এই মর্মে যে এসব তথ্য গোপনীয়।
তবে হোয়াইট হাউস এ ব্যাপারে মন্তব্য করার অনুরোধে কোনো সাড়া দেয়নি।