ভারতের রাজধানীতে সংবধিান সংশোধনী আইনের বিরোধিতা কেন্দ্র করে মুসলিমবিরোধী যে সহিংসতা হয়, তার প্রতিবাদ ওঠছে সারা দুনিয়ায়। পৃথিবীজুড়ে দিল্লি সহিংতার প্রতিবাদে সরব সাধারণ মানুষ। রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ প্রদর্শন চলছে সর্বত্র।
এমনকি ভারতের ভিতর প্রতিবাদ হচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গ, কেরালাসহ সর্বত্র দিল্লি হিংসার প্রতিবাদে রাস্তায় নেমেছেন সাধারণ মানুষ, ছাত্ররা। এ বার দিল্লির ঘটনা নিয়ে সরব হলেন গোটা পৃথিবীর ভারতীয় বংশোদ্ভূতরা। তাদের শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদে অংশ নিয়েছেন বিদেশি নাগরিকেরাও।
শনি ও রোববার শুধুমাত্র ইউরোপেই ১৮টি শহরে দিল্লি সহিংসতার প্রতিবাদে মিছিল-মিটিংয়ের আয়োজন হয়। ব্রাসেলস, বার্লিন, মিউনিখ, প্যারিস, স্টকহোম, হেগ, ডাবলিন, গ্লাসগো ও লন্ডনে শয়ে শয়ে মানুষ রাস্তায় নামেন। অধিকাংশ জায়গাতেই ভারতীয় দূতাবাসের বাইরে গিয়ে প্রতিবাদ দেখান মূলত ভারতীয় বংশোদ্ভূতরা। তবে প্যারিস, ডাবলিনে বহু অভারতীয়কেও প্রতিবাদে যোগ দিতে দেখা যায়। প্রতিবাদীরা কোথাও কালো জামা পরে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। কোথাও আবার মিছিলে হাঁটতে হাঁটতে তাঁরা গেয়েছেন ‘হাম দেখেঙ্গে’। প্যারিসে মিছিল শেষে নীরবতা পালন করেছেন প্রতিবাদীরা। রাস্তার উপরে রেখেছেন সাদা গোলাপ। সাদা গোলাপ ইউরোপীয় প্রতিবাদের ইতিহাস ফ্যাসিবাদ বিরোধী প্রতীক। মিছিল থেকে আরএসএস এবং বিজেপির বিরুদ্ধেও স্লোগান ওঠে।
বাংলাদেশের বিশিষ্ট নাগরিকদের বিবৃতি
বাংলাদেশের ১২ জন বিশিষ্ট নাগরিক ভারতে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বৃহস্পতিবার বিবৃতি দিয়েছেন৷ তাঁরা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় দ্রুত পদক্ষেপ নিতে ভারত সরকার ও নাগরিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন৷ ভারত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্যর্থ হলে প্রতিবেশী দেশগুলোতে শান্তি, গণতন্ত্র, উন্নয়ন ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট হওয়ার মতো পরিবেশ তৈরি হতে পারে বলেও বিবৃতিতে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তাঁরা৷
দিল্লি সহিংসতার প্রতিবাদ হয়েছে ভারতেও। বস্তুত সিএএ এবং এনআরসি নিয়ে গত কয়েক মাস ধরে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিক্ষোভ চলছে। প্রতিবাদকারীদের একটি বড় অংশ কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা। বস্তুত, সেই আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলেন বিদেশ থেকে ভারতে পড়তে আসা ছাত্রছাত্রীরাও। আগেই এমন এক জার্মান ছাত্রকে দেশে ফিরে যেতে বলেছিল ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। গত শুক্রবার আরো দুই বিদেশি ছাত্রকে দেশে ফিরে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে। একজন পোল্যান্ডের, অন্যজন বাংলাদেশের। যদিও নির্দেশ পাওয়ার পরে ওই দুই ছাত্রই সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি। তবে তাদের বন্ধুরা জানিয়েছেন, দু’জনেই দেশে ফিরে গিয়েছেন।
সূত্র : ডয়চে ভেলে