অভিজাত ১৩টি ক্লাবসহ সারা দেশে অর্থের বিনিময়ে জুয়া খেলা অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের রায় স্থগিত করেননি আপিল বিভাগ। তবে আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ক্লাবগুলোতে অভিযান চালাতে পারবে না বলে আদেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
বৃহস্পতিবার ক্লাবগুলোর এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হাসানের নেতৃত্বাধীন সাত বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে ক্লাবগুলোর পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার এম আমির উল ইসলাম, ব্যারিস্টার তানিয়া আমির ও ব্যারিস্টার সুমাইয়া আজিজ।
এর আগে গত ১০ ফেব্রুয়ারি যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়া টাকা বা অন্য কিছুর বিনিময়ে তাস, ডাইস, হাউজি খেলাসহ সব ধরনের জুয়া খেলা নিষিদ্ধ ঘোষণা করে হাইকোর্ট রায় দেন।
রায়ে পাঁচ দফা নির্দেশনা দিয়ে বলা হয়, ক্লাবগুলোতে টাকা বা কোনো অর্থ ছাড়া যদি ওই সব খেলা পরিচালনা করা হয়, আর তাতে যদি অংশগ্রহণকারীরা পরিতৃপ্তি পান তবে তা খেলা যাবে।
রায়ে আদালত বলেন, যেসব খেলার ফলাফল দক্ষতার বদলে ‘চান্স’ বা ভাগ্য দিয়ে নির্ধারিত হয়, সেগুলোই জুয়া খেলা। হাউজি, ডাইস, থ্রি কার্ড, ফ্লাস, ওয়ান টেনসহ এ জাতীয় অন্যান্য খেলা দক্ষতার পরিবর্তে ভাগ্যের ওপর নির্ভরশীল। আইনে এসব খেলা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এসব খেলার আয়োজন করা অপরাধ। যারা এ ধরনের কর্মকাণ্ডে জড়িত, তারা আইনের দৃষ্টিতে অপরাধী। রায়ে পবিত্র আল কোরআনের সুরা আল বাকারার ২১৯ নম্বর আয়াত ও সুরা মায়েদার ৯০ ও ৯১ নম্বর আয়াত তুলে ধরে বলা হয়েছে, ধর্মীয়ভাবেও জুয়া খেলা নিষিদ্ধ।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সামিউল হক ও অ্যাডভোকেট রোকন উদ্দিন মোঃ ফারুকের করা এক রিট আবেদনের ওপর প্রাথমিক শুনানি শেষে হাইকোর্ট ২০১৬ সালের ৪ ডিসেম্বর এক আদেশে টাকা বা অন্য কিছুর বিনিময়ে ১৩টি ক্লাবে তাস, ডাইস ও হাউজি খেলার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেন। একই সাথে টাকা বা অন্য কিছুর বিনিময়ে জুয়া জাতীয় অবৈধ ইনডোর গেইম যেমন তাস, ডাইস ও হাউজি খেলা ও আয়োজকদের বিরুদ্ধে রুল জারি করেন। এই রুলের চূড়ান্ত শুনানি করে রায় দেন হাইকোর্ট।