বিশ্বকাপের পর নেশনস লিগ আরো একবার ফাইনালে উঠেও ট্রফি হাতছাড়া লুকা মদ্রিচের। কাতার বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে ক্রোয়েশিয়া হেরেছিল আর্জেন্টিনার কাছে। বার বার ট্রফি জয়ের কাছে আসেন বিশ্বকাপে সোনার বল জয়ী মদ্রিচ, কিন্তু কাপ এবং ঠোঁটের মাঝের দূরত্বটা ঘোচানো হয় না। রোববার রাতে স্পেনের কাছে চিন্তার কারণ ছিলেন ওই মদ্রিচই। টাইব্রেকারে ক্রোয়েশিয়াকে ৫-৪ গোলে হারিয়ে ট্রফি নেশনস লিগ জিতে নিলো স্পেন। ২০২১ সালের নেশনসের লিগের ফাইনালে ফ্রান্সের বিরুদ্ধে হেরেছিল তারা। এবার জিতেই মাঠ ছাড়লেন দানি কারভাহালেরা।
গত বছর বিশ্বকাপে প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালে মরোক্কোর কাছে টাইব্রেকারে হেরেছিল স্পেন। তার পরেই দলের কোচ পদ থেকে সরে গিয়েছিলেন লুইস এনরিকে। তার জায়গায় দায়িত্ব নেন লুইস দে লা ফুয়েন্তে। রোববার ১২০ মিনিট শেষেও কোনো দল গোল করতে না পারায় খেলা গড়ায় টাইব্রেকারে। স্প্যানিশ সমর্থকদের মনে আশঙ্কা জাগায় ছয় মাস আগের বিশ্বকাপ থেকে বিদায়ের স্মৃতি। এর মধ্যে টাইব্রেকারে এমেরিক লাপোরতের শট ক্রসবারে লাগায় চাপ আরো বাড়ে স্পেনের। কিন্তু গোলরক্ষক ইউনাই সিমনের হাত স্প্যানিশ সমর্থকদের ট্রফি জয়ের স্বপ্ন ভাঙতে দেয়নি। টাইব্রেকারে দু’টি শট বাঁচিয়ে দেন তিনি। আর স্পেনের কারভাহালের শট জালে জড়িয়ে যেতেই চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি ৩৭ বছরের মদ্রিচ।
১১ বছর পর আন্তর্জাতিক ট্রফি স্পেনের ঘরে। গোটা ম্যাচে মদ্রিচ চেষ্টা করে গেলেন গোলের মুখ খোলার, কিন্তু বার বার ব্যর্থ হলেন সিমনের সামনে। টাইব্রেকারেও সিমনে বাঁচিয়ে দেন লোভ্রো মায়ের এবং ব্রুনো পেতকোভিচের শট। ফাইনালের আগে স্পেনের রদ্রি হার্নান্দেস বলেছিলেন যে জয়ের সংস্কৃতি ফিরিয়ে আনতে চান তারা। নেশনস লিগ দিয়েই সেটা শুরু করার কথা বলেছিলেন তিনি। সেই কথা মাথায় রেখেই ম্যাচের শুরুতেই আক্রমণে ওঠে স্পেন, কিন্তু আলভারো মোরাতার শট একটুর জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। ধীরে ধীরে ম্যাচের রাশ নিজেদের হাতে নিতে শুরু করেন মদ্রিচেরা। মাঝমাঠের দখল নেয় ক্রোয়েশিয়া। স্পেনের রক্ষণভাগ কিছুটা এগিয়ে খেলছিল। ওই সুযোগটাই কাজে লাগানোর চেষ্টা করেন মদ্রিচেরা। কিন্তু গোল করতে পারেননি। কখনো রক্ষণভাগে আটকে যান, কখনো গোলরক্ষক সিমনের হাতে।
ক্রোয়শিয়া অনেক বেশি ডিরেক্ট ফুটবল খেলার চেষ্টা করছিল। পায়ে বেশিক্ষণ বল রাখছিলেন না ইভান পেরিসিচেরা। ফুয়েন্তের দল সমস্যায় পড়ে যায় এমন প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে। ক্রোয়েশিয়ার ছক ভাঙতে পারছিল না স্পেন। এর মাঝে একমাত্র ব্যতিক্রম জোর্ডি আলবা। স্পেনের লেফট ব্যাক বার বার আক্রমণে ওঠেন। ক্রস তোলেন দুই স্ট্রাইকার মোরাতা এবং মার্কো আসেন্সিয়োর জন্য। কিন্তু তারা বল গোলের মধ্যেই রাখতে পারছিলেন না। ৯০ মিনিটের মধ্যে কোনও দলই গোল করতে পারেনি। পরে ৩০ মিনিটের অতিরিক্ত সময়েও গোল হয়নি। ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে। সেখানে ছয়টি পেনাল্টি শটের মধ্যে পাঁচটি জালে জড়ান স্পেনের ফুটবলাররা। ক্রোয়েশিয়ার দুই ফুটবলারের শট আটকে দেন গোলরক্ষক সিমনে। ট্রফি এনে দেন দেশকে।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা