হার দিয়েই শুরু হলো বাংলাদেশের এশিয়া কাপ মিশন। ইমার্জিং এশিয়া কাপের উদ্বোধনী ম্যাচে স্বাগতিকদের কাছেই পরাস্ত টাইগাররা। বাংলাদেশ এ দলের হার ৪৮ রানে। লঙ্কানদের দেয়া ৩৫০ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ৩০১ রানে থেমেছে সৌম্য-সাইফরা।
হারের পেছনে বড় কারণ বিশেষজ্ঞ বোলারের অভাব। দলে বোলার ছিলেন মোটে তিনজন। বাকি কাজটা সেরেছে অলরাউন্ডাররা মিলে। পর্যাপ্ত বিকল্প হাতে না থাকায় ধরা খেয়ে যায় টাইগাররা। যার ফলে স্বাগতিকরা পায় পাহাড়সম সংগ্রহ। ১৩৩ রানের ইনিংস খেলেন আভিস্কা ফার্নান্দো।
বড় লক্ষ্য তাড়ায় শুরুটা যেমন হওয়া উচিৎ ছিল, তেমনটাই করেছিল বাংলাদেশ। টপ অর্ডার একটা ভিত গড়ে দেয়ার চেষ্টা করে। দেড় শ’ রান উঠে আসে ২১ ওভারেই, মোটে ২ উইকেট হারিয়ে। দারুণ ব্যাট করেন তানজিদ তামিম, ৩৯ বলে ৫১ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। নাইম শেখের সাথে গড়েন ১০ ওভারে ৬৯ রানের জুটি।
আফগানিস্তান সিরিজ শেষ করেই শ্রীলঙ্কার বিমান ধরেন নাইম। একাদশেও জায়গা মেলে। তবে বড় কিছু করতে পারেননি, আউট হন ২৫ বলে ২২ রানে। তিনে নামা জাকির হাসান সাবলীল শুরু করলেও ইনিংস টানতে পারেননি। ২৪ বলে ২৬ করে ২১তম ওভারের শেষ বলে আউট হন তিনি।
২৪তম ওভারে সাইফ হাসানকে হারিয়ে বড় ধাক্কা খায় বাংলাদেশ। অধিনায়কের মতোই খেলছিলেন তিনি। তুলে নিয়েছিলেন অর্ধশতকও। তবে ৪৬ বলে ৫৩ করেই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে তাকে। পাঁচে নামা মাহমুদুল হাসান জয় (১১) দ্রুত ফিরলেও দারুণ ব্যাট করেন সৌম্য সরকার। ব্যাট হাতে করেন ৪৭ বলে ৪২ রান।
কিছুদিন আগে জাতীয় দলের ক্যাম্পে দেখা যাবার পরই বুঝা যাচ্ছিলো সৌম্যকে নিয়ে বিশেষ কোনো পরিকল্পনা আছে বোর্ডের৷ ইমার্জিং এশিয়া কাপের প্রথম ম্যাচেই যা প্রতিয়মান হলো। লোয়ার অর্ডারের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে সৌম্যকে। সুযোগ পেয়ে হতাশ করেননি তিনি। ব্যাটের আগে বল হাতেও সফল ছিলেন। দশের বেশি ইকোনমি হলেও শিকার করেন ৩ উইকেট।
সৌম্য ফেরার আগে ফেরেন আকবর আলি ও শেখ মেহেদী হাসান। আকবর গোল্ডেন ডাক মারলেও মেহেদীর ব্যাটে আসে গুরুত্বপূর্ণ ৩০ বলে ৩১ রান। দলীয় সংগ্রহ তখন ৩৯ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ২৪৯ রান। শেষ ১১ ওভারে প্রয়োজন দেখা দেয় ১০১ রানের। কঠিন এই সমীকরণ সামনে রেখেও হাল ছাড়েনি বাংলাদেশ।
রাকিবুল হাসান লড়াই চালান। বোলার রিপন মন্ডলকে নিয়ে যোগ করেন ৫৭ বল থেকে ৫২ রান। তবে ততক্ষণে ম্যাচ থেকে ফসকে যায় বাংলাদেশ। দুই ওভারে প্রয়োজন দেখা দেয় ৪৯ রানের। এরপর ৪৯তম ওভারের ২য় ও ৩য় বলে জোড়া উইকেট তুলে নিয়ে ইনিংসের সমাপ্তি টানেন মাদুশান।
এর আগে কলম্বোতে আগে ব্যাট করতে নেমে ওপেনিং জুটিতে ৫১ রান তোলে শ্রীলঙ্কা। লাসিথ ক্রসপুলে ২৮ বলে ৩১ রান করে ফিরে গেলেও, পথ হারায়নি লঙ্কানরা। তিনে নামা মিনোদ ভানুকাকে নিয়ে ১২৬ রানের দুর্দান্ত জুটি গড়েন আভিস্কা ফার্নান্দো। মিনোদ ৫৫ বলে ৫৭ রান করে বিদায় নেন।
এরপর পাঁচে নামা পাসিন্দু সোরিয়াবান্দারার সাথে ৭৫ রানের জুটি হয় আভিস্কার। সোরিয়াবান্দারা ফিরে যান ৩২ বলে ৪৩ রান করে। আভিস্কা পঞ্চম ব্যাটার হিসেবে আউট হবার আগে খেলেন ১৩৩ রানের ইনিংস। এরপর আশেন বান্দারা ২৫ বলে ৩৫ এবং অধিনায়ক দুনিথ ওয়েল্লালাগে ১৯ বলে ৩১ রান করলে সংগ্রহ ফুলে ফেঁপে ওঠে শ্রীলঙ্কা ইমার্জিং দলের।
বাংলাদেশের হয়ে পেসার রিপন মন্ডল ও সৌম্য সরকার নেন তিনটি করে উইকেট। রিপন ১০ ওভারে খরচা করেন ৭১ রান। এছাড়া রাকিবুল ও মেহেদি নেন একটি করে উইকেট।