ভারতীয় নারী ক্রিকেটার হারমানপ্রীত যেন ক্রিকেট বিশ্বকেই নাড়িয়ে দিয়েছেন। তার ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ মেনে নিতে পারছে না কেউই। নিন্দার ঝড় উঠেছে সর্বমহলে। নিজ দেশ ভারতেও হচ্ছেন ব্যাপক সমালোচিত। হারমানপ্রীতের এই আচরণকে ক্ষমার অযোগ্য বলে দাবি করেছেন ভারত নারী দলের সাবেক অধিনায়ক মিতালি রাজ।
শনিবার (২২ জুলাই) মিরপুরে বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে আম্পায়াররের সাথে অসৌজন্য আচরণ করেন হারমানপ্রীত। এমনকি বিদ্রুপ করেন ম্যাচ শেষেও। পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানেও আম্পায়ারদের প্রকাশ্য সমালোচনা করেন বেশ কড়া ভাষায়। শেষে এই ঘটনায় টেনে আনেন বাংলাদেশ ও বাংলাদেশী ক্রিকেটারদেরও।
ক্রিকেট ইতিহাসের বিরল এমন ঘটনায় সমালোচনার ঝড় উঠে। মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) তার শাস্তি ঘোষণা করে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি)। ঘটনা সমূহকে দু’টি ভিন্ন অপরাধ দেখিয়ে ম্যাচ ফির ৭৫ শতাংশ জরিমানা ও চার ডিমেরিট পয়েন্ট দিয়ে দুই ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয় তাকে।
তবে ভারতীয় অধিনায়কের এমন শাস্তিতে সন্তুষ্ট নন কিংবদন্তী অলরাউন্ডার শহিদ আফ্রিদি। ম্যাচ নিষেধাজ্ঞা যথাযথ হলেও আর্থিক জরিমানা কম হয়ে গেছে বলে মনে করেন তিনি।
সম্প্রতি পাকিস্তানের সামা টিভির ‘গেম সেট ম্যাচ’ অনুষ্ঠানে এ বিষয়ে কথা বলেন পাকিস্তানের সাবেক এই অলরাউন্ডার। যেখানে পুরো ঘটনা জানতে পেরে আফ্রিদি ‘ম্যাচ ফি’ জরিমানা কম হয়ে গেছে বলে উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, ‘আমি ঘটনাটি দেখিনি। তবে আপনার কাছে যা শুনলাম তাতে আমার মতে শতভাগ ম্যাচ ফি জরিমানার সাথে ১-২টা ম্যাচ সাসপেন্ড ভালো হতো।’
হারমানপ্রীতের এমন আচরণকে সীমা-ছাড়ানো বলেও অভিহিত করেন আফ্রিদি।
এর আগে ভারত নারী দলের সাবেক অধিনায়ক মিতালি রাজ বলেছিলেন, ‘ট্রফি নিয়ে ফটোসেশনের সময় বাংলাদেশের অধিনায়ক নিগার সুলতানার সাথে হারমানপ্রীত যেমন আচরণ করেছেন বলে শোনা যাচ্ছে, তা যদি সত্যিই হয়, তবে এর থেকে লজ্জার কিছু হতে পারে না।’
‘হিন্দুস্তান টাইমস’-এ লেখা এক কলামে মিতালি রাজ বলেন, ‘হারমানপ্রীত যে আচরণ করেছে তা মোটেও গ্রহণযোগ্য নয়। আগ্রাসী হওয়া ভুল নয়, একটি নির্দিষ্ট সীমা পর্যন্ত আবেগের বহিঃপ্রকাশ করা যায়। কিন্তু ভুলে গেলে চলবে না, যেকোনো ক্রিকেটারের ঊর্ধ্বে খেলা। তার যন্ত্রণা গ্রহনযোগ্য হলেও, এমন আচরণ ক্ষমার অযোগ্য। ম্যাচে যা হয়েছে তা ওখানেই রেখে আসা উচিত ছিল।’
সিরিজ শেষে ফটোসেশনে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের উদ্দেশে হারমানপ্রীত বলেছিলেন, ম্যাচটিতে বাংলাদেশ জেতেনি, জিতিয়েছে আম্পায়াররা। ফটোসেশনে যেন আম্পায়ারদেরও ডেকে নেয়া হয়। তখন বাংলাদেশ অধিনায়ক নিগার সুলতানা বাধ্য হয়ে দল নিয়ে চলে যান সেখান থেকে, পড়ে থাকে ট্রফি।