বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় কক্সবাজার উপকূলে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে সাগরের ঢেউয়ের তোড়ে কক্সবাজারের দৃষ্টি নন্দন মেরিন ড্রাইভ রোডে ভাংগনের সৃষ্টি হয়েছে। পুর্নিমা জোয়ারের প্রভাবে সাগরের পানি আজও স্বাভাবিকের চেয়ে ৩ থেকে ৪ ফুট উচ্চতায় বৃদ্ধি পেয়েছে।
সাগরের জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বিশাল উচ্চতায় ঢেউ আঘাত হানছে মেরিন ড্রাইভ রোডে। এতে সাগরের ঢেউয়ের তোড়ে দৃষ্টিনন্দন এই সড়কে ধরেছে ভাঙন। ছোট-বড় ১০টি স্থানে ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার মেরিন ড্রাইভ রোডের টেকনাফের পশ্চিম মুন্ডার ডেইল এলাকায় প্রায় ৬০ মিটার সড়ক সাগরের ঢেউয়ের তোড়ে ভেঙে গেছে। এ ছাড়া গত দুই দিনে টেকনাফের বাহারছড়া, হাদুরছড়া, দক্ষিণ মুন্ডার ডেইল এলাকায় সড়কের আরো ১০ স্থানে ভাঙন ধরেছে।
সাগরের পানির উচ্চতা বেড়ে যাওয়ায় সড়কের রক্ষাকবজ জিও ব্যাগ দুর্বল হয়ে গেছে।
স্থানীয়রা জানিয়েছে, কিছু প্রভাবশালী মহল সড়কের পাশ থেকে সাগরের বালু নিয়ে জমি ভরাট করেছেন। এ কারণে পানি বাড়লে সড়কে ভাঙন দেখা যায়।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুজ্জামান জানিয়েছেন, এখন বৈরী আবহাওয়ার কারণে সাগরের পানির উচ্চতা স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি। সাগরের ঢেউয়ে মেরিন ড্রাইভ সড়কের কয়েকটি স্থানে ভাঙন ধরেছে। ভাঙনরোধে কাজ শুরু করেছে সেনাবাহিনী। মেরিন ড্রাইভ রোডের নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে রয়েছে সেনাবাহিনীর প্রকৌশল বিভাগ।
অপর দিকে জোয়ারের ঢেউয়ের আঘাতে সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে ঝাউগাছ উপড়ে পড়ছে। সৈকতের লাবনী পয়েন্ট, সুগন্ধা পয়েন্ট, কলাতলী ও ডায়াবেটিক পয়েন্টে জোয়ারের ঢেউয়ের তোড়ে ভাঙন দেখা দিয়েছে। জোয়ারের পানি সৈকতে অবস্থিত ট্যুরিস্ট পুলিশের টাওয়ার বক্সের কাছাকাছি চলে আসছে। ট্যুরিস্ট পুলিশের পক্ষ থেকে সৈকতে আসা পর্যটকদের সতর্কতার সাথে গোসল করতে বলা হয়েছে। সৈকতে আসা পর্যটকদের গভীর পানিতে গোসল করতে নিষেধ করা হয়েছে। লাইফ গার্ড কর্মীরা পর্যটকদের সামলাতে হিমসিম খাচ্ছে।
আবহাওয়া অফিস কক্সবাজার সমুদ্র বন্দরকে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্কসংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। পূর্ণিমা ও বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্যের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ২-৩ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ু তাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে বলে আবহাওয়া অফিসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে। এছাড়া উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।