শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:২০ অপরাহ্ন

গ্যাসভিত্তিক তিন বিদ্যুৎকেন্দ্রের মেয়াদ বাড়ছে ৫ বছর

এনবিডি নিউজ ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : সোমবার, ৭ আগস্ট, ২০২৩
  • ৯৯ বার

বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (বাপবিবো) আওতাধীন গ্যাসভিত্তিক তিনটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের মেয়াদ পাঁচ বছর বাড়ছে। বিদ্যুৎকেন্দ্রের ট্যারিফও নির্ধারণ করা হয়েছে। নতুন করে এই তিন কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ কেনা হলে পাঁচ বছরে ব্যয় হবে এক হাজার ১১৮ কোটি টাকা।

সূত্র জানায়,বর্তমানে এ তিনটি গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে মোট ৭১.৫৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। এর মধ্যে আশুলিয়ায় ৩৩.৭৫ মেগাওয়াট, মধাবদীতে ২৪.৩০ মেগাওয়াট ও চান্দিনায় ১৩.৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে, যা বাপবিবোর সদস্যদের সরবরাহ হয়ে আসছে।

জানা গেছে, এ তিনটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের মেয়াদ বাড়ানোর জন্য এর আগে বাপবিবো সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠায়। প্রাইভেট সেক্টরে পাওয়ার জেনারেশন পলিসি ১৯৯৬-এর আওতায় বেসরকারিখাতে বিল্ড ওন অপারেশন (বিওও) ভিত্তিতে আইপিপি হিসেবে ১৫ বছর মেয়াদে ঢাকা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর অধীনে আশুলিয়া ৩৩.৭৫ মেগাওয়াট, নরসিংদী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর অধীনে মাধবদী ২৪.৩০ মেগাওয়াট এবং কুমিল্লা বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর অধীনে চান্দিনা ১৩.৫০ মেগাওয়াট গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের জন্য সামিট পাওয়ার লি. (ভূতপূর্ব ইউনাইটেড সামিট পাওয়ার কোম্পানি লি.)-এর সাথে বাপবিবোর পাওয়ার পারচেজ অ্যাগ্রিমেন্ট (পিপিএ) স্বাক্ষর হয়। বিদ্যুৎকেন্দ্র তিনটি যথাক্রমে ২০০৭ সালের ৪ ডিসেম্বর ২০০৬ সালের ১৬ ডিসেম্বর ও ২০০৬ সালের ১৫ নভেম্বর তারিখে সিওডি অর্জন করে। মাধবদী ২৪.৩০ মেগাওয়াটের মেয়াদ ২০২১ সালের ১৫ ডিসেম্বর, চান্দিনার ১৩.৫০ মেগাওয়াটের মেয়াদ ২০২১ সালের ১৪ নভেম্বর ও আশুলিয়া ৩৩.৭৫ মেগাওয়াটের ২০২২ সালের ৩ ডিসেম্বর তারিখে উত্তীর্ণ হয়েছে।

সূত্র জানায়, সামিট পাওয়ার লিমিটেড আশুলিয়া ৩৩.৭৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্রের মেয়াদ একই শর্তে আরো ১০ বছর এবং মাধবদী ২৪.৩০ মেগাওয়াট ও চান্দিনা ১৩.৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র ২টির মেয়াদ একই শর্তে আরো পাঁচ বছর বাড়ানোর জন্য আবেদন করে। স্বাক্ষরিত পিপিএ-এর বিধান অনুযায়ী চুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে।

এই তিনটি বিদ্যুৎকেন্দ্র স্বাক্ষরিত পিপিএ অনুযায়ী বিদ্যুতের মূল্য ছিল বাল্ক সাপ্লাই ট্যারিফ (বিএসটি) থেকে ০.৩০ টাকা কম, অর্থাৎ চুক্তির সময় বিএসটি ছিল ২.০৫ টাকা এবং ট্যারিফ ছিল (২.৫০-০.০৩) = ২.০২ টাকা/কিলোওয়াট ঘণ্টা। চুক্তি অনুযায়ী প্ল্যান্ট ফ্যাক্টও ৬০ শতাংশ থেকে ৮০ শতাংশ। ট্যারিফে পৃথকভাবে কোনো ক্যাপাসিটি পেমেন্ট বা এনার্জি পেমেন্ট ছিল না। সে অনুযায়ী ২০১১ সালের নভেম্বর পর্যন্ত বিদ্যুৎকেন্দ্র তিনটির বিল পরিশোধ করা হয়েছে। জানা গেছে, পরবর্তী সময়ে ২০১১ সালের ডিসেম্বর মাসে বিএসটি বৃদ্ধি পাওয়ায় বিদ্যুৎকেন্দ্র তিনটির ট্যারিফ গ্যাস বেইজড আইপিপির ট্যারিফের চেয়ে যুক্তিযুক্ত প্রতীয়মান না হওয়ায় চুক্তি পুনঃমূল্যায়নের জন্য বাপবিবোর পক্ষ থেকে উদ্যোগ গ্রহণ করা হলেও বিষয়টির সমাধান হয়নি। ২০১১ সালের ডিসেম্বর থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত সামিট পাওয়ার লিমিটেড কর্তৃক বিভিন্ন সময়ে বর্ধিত বিএসটি হারে প্ল্যান্টের বিদ্যুৎ বিল দাবি করা হলেও ২০১১ সালের নভেম্বর মাসের ট্যারিফ অনুযায়ী বিদ্যুৎ বিল প্রদান করা হচ্ছে। এ বিষয়ে হাইকোর্ট বিভাগে রিট পিটিশন দাখিল করা হলে আদালত কর্তৃক সামিট পাওয়ার লিঃ-এর অনুকূলে রায় প্রদান করে। পরবর্তীতে রায়ের বিরুদ্ধে বাপবিবো সুপ্রিম কোর্টে আপিল দায়ের করা হয়। আপিল শুনানি শেষে ২০২৩ সালের ৯ মার্চ তারিখে সুপ্রিম কোর্ট বাপবিবোর দাবির পক্ষে রায় দেয়।

বাপবিবো ও সামিট পাওয়ার লিমিটেডের মধ্যে স্বাক্ষরিত পিপিএ-এর চুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর সুযোগ থাকায় আলোচ্য তিনটি গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের মেয়াদ ‘নো ইলেকট্রিসিটি নো পেমেন্ট’ ভিত্তিতে ট্যারিফ নেগোসিয়েশনের মাধ্যমে ১-৫ বছর অথবা সুবিধাজনক সময়ের জন্য বৃদ্ধির বিষয়ে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর (প্রধানমন্ত্রী) সম্মতি রয়েছে।

সূত্র জানায়, নেগোসিয়েশন কমিটি স্পন্সর কোম্পানির সাথে অনুষ্ঠিত কয়েকটি সভায় সামগ্রিক বিষয় বিবেচনা করে লেভেলাইজড ট্যারিফ ও চুক্তির শর্ত চূড়ান্ত করে। এর মধ্যে নন ফুয়েল কম্পোনেন্ট ১.৬৯ টাকা/কিলোওয়াট ঘণ্টা, ফুয়েল কম্পোনেন্ট ১.২৬ টাকা/কিলোওয়াট ঘণ্টা এবং লেভেলাইজড ট্যারিফ ২.৯৫ টাকা/কিলোওয়াট ঘণ্টা। এই তিনটি প্ল্যান্টের বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তির মেয়াদ মাধবদী চান্দিনা পাওয়ার প্ল্যান্টের জন্য ২০২২ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি এবং আশুলিয়া পাওয়ার প্ল্যান্টের জন্য ২০২২ সালের ৪ ডিসেম্বর থেকে পরবর্তী পাঁচ বছরের জন্য বাড়ানোর সুপারিশ করা হয়েছে।

সূত্র জানায়, নেগোসিয়েশন কমিটির সুপারিশের আলোকে প্রস্তাবিত বিদ্যুৎকেন্দ্র ৩টির চুক্তি নবায়ন করা হলে বিএসটি (৫.৮৯২৫ টাকা/কিলোওয়াট ঘণ্টা) অপেক্ষা ট্যারিফ কম থাকায় ইউনিট প্রতি ০.২৪২৫ (৫.৮৯২৫-৫.৬৫) টাকা সাশ্রয় হবে এবং বাপবিবো আর্থিকভাবে লাভবান হবে। এই প্ল্যান্ট তিনটি থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ অব্যাহত থাকলে সংশ্লিষ্ট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিগুলোর ৩৩ কেভি লাইন লস তথা সিস্টেম লস কম হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com