জরুরি সভা ডেকেছে বিসিবি। সেখানেই নিশ্চিত হওয়ার সম্ভাবনা ওয়ানডে দলের নেতৃত্ব উঠছে কার হাতে। শুধু ওয়ানডে নয়, পরিবর্তন আসতে পারে টেস্ট দলের নেতৃত্বেও। তবে সব সম্ভাবনা আর সমীকরণের উত্তর মিলবে আজ মঙ্গলবার বেলা ২টার সভা শেষে।
তামিম ইকবালের অব্যাহতির পর ‘পরবর্তী অধিনায়ক কে?’ সবার মুখে ঘুরেফিরে একই প্রশ্ন। তিন-চারদিনের মাঝেই এই প্রশ্নের উত্তর মিলবে বলা হলেও এখনো তা মেলেনি। এদিকে এশিয়া কাপ ও বিশ্বকাপও দরজায় কড়া নাড়ছে। ফলে আর দেরি করতে চায় না বোর্ড।
নতুন ওয়ানডে অধিনায়ক হিসেবে সাকিব আল হাসান যে বিসিবির প্রথম পছন্দ, সেটা আগেই জানা গিয়েছিল। দুই দিন আগে সংবাদমাধ্যমের সাথে আলাপকালেও এমনটাই জানিয়েছিলেন বিসিবি সভাপতি। তবুও সিদ্ধান্ত ঘোষণায় দেরি কেন? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনটা কারণ জানা গেছে।
যার প্রথমটি হলো, সাকিব আল হাসান নেতৃত্ব নিতে ইচ্ছুক কিনা! ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যম গোপন সূত্রে সাকিবের অধিনায়ত্ব নিতে আগ্রহ নেই বলে খবর প্রকাশ করেছে। যার কারণ হিসেবে তারা বলেছিল, তামিমের সাথে তার যে দূরত্বের কথা শোনা যায়, সেই অস্থিরতা আর বাড়াতে চান না বলেই নেতৃত্ব গ্রহণে অনাগ্রহী সাকিব।
যদিও বিসিবি সভাপতি বলেছিলেন, তারা সাকিবের কাছে অধিনায়কত্ব নিয়ে কোনো প্রস্তাব রাখেননি। তাই আনুষ্ঠানিকভাবে সাকিবের নেতৃত্ব গ্রহণ করতে না চাওয়া নিয়ে তাদের কিছু জানা নেই।
দ্বিতীয়, সাকিবকে অধিনায়ক ঘোষণা করতে দেরি হওয়ার কারণ হিসেবে বিসিবি উল্লেখ করেছিল, সাকিব দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনার অংশ হতে রাজি কি না, এই সম্পর্কে নিশ্চিত না হওয়া। শনিবার এই সম্পর্কে বিসিবি সভাপতি বলেছিলেন, ‘আপনি কি বলতে পারেন দুই বছর খেলবে সাকিব?’
‘জানি না ওর পরিকল্পনা, ওর সঙ্গেও তো বসতে হবে। আমরা একটু জেনে নিই। এটা নিয়ে কথাবার্তা বলতে হবে। বোর্ডের সবার সঙ্গে কথা বলতে হবে।’ যোগ করে নাজমুল হাসান পাপন আরো একটু সময় চেয়েছিলেন। কেননা সাকিব দেশে নেই এই মুহূর্তে। এলপিএল খেলতে শ্রীলঙ্কায় আছেন তিনি।
তৃতীয়, আরো একটা সিদ্ধান্তে পৌঁছুতে দেরি হওয়ায় অধিনায়ক ঘোষণা করতে পারছে না বিসিবি। সাকিব ওয়ানডে দলের দায়িত্ব নিলে তিন সংস্করণেই অধিনায়ক হয়ে যাবেন তিনি। আগে থেকেই টি-টোয়েন্টি এবং টেস্টের অধিনায়ক সাকিব ক্যারিয়ারের শেষ সময়ে এসে এই চাপ সামলে উঠতে পারবেন কিনা, তা নিয়েও ভাবছে বিসিবি।
তিন ফরম্যাটের ক্রিকেটে টানা খেলার ধকল এই সময়ে এসে সাকিব নিতে চাইবেন কি না, তা নিয়েও ভাবতে হচ্ছে। তাছাড়া, আগে থেকেই সাদা ও লাল বলে আলাদা অধিনায়কত্বে চলা বিসিবিও তাদের পরিকল্পনা মতোই চলতে চাচ্ছে। আলাদা দুই অধিনায়ক নিয়েই খেলতে চাচ্ছে।
যাই হোক, সাকিব যদি ওয়ানডের অধিনায়কত্ব নেন, তবে টেস্টের নেতৃত্ব কার ঘাড়ে উঠবে, এই নিয়েও সমাধানে পৌঁছাতে চায় বিসিবি। তবে ধারণা করা হচ্ছে, নতুন অধিনায়ক যেই হোক তার সাথে কথা বলে ও সম্মতি নিয়েই পরিচালকদের সঙ্গে বসবেন নাজমুল হাসান। আর সেখানেই ঘোষণা হবে নতুন অধিনায়কের নাম।
অবশ্য এছাড়া আর উপায়ও নেই। এশিয়া কাপের দল ঘোষণার জন্যে ইতোমধ্যেই সময় বেঁধে দিয়েছে এসিসি। আগামী ১২ আগস্টের মাঝে দল দিতে হবে সবাইকে। ফলে অধিনায়ক নির্ধারণ করে দল নির্বাচন করা এখন আবশ্যক হয়ে দাঁড়িয়েছে। কেননা একই কারণে আটকে আছে আনুষ্ঠানিক অনুশীলনও!