ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো বা লিওনেল মেসিরা বয়স ৩৫ পার করার পর ইউরোপের ক্লাব ছাড়লেও নেইমার ছেড়েছেন মাত্র ৩১ বছর বয়সে। এই বয়সে মেসি-রোনালদোরা ইউরোপ কাঁপিয়েছেন। এই দুই তারকাকে ছোঁয়ার মতো প্রতিভা নেইমারেরও ছিল। তাই এই ব্রাজিলিয়ানের প্রতি প্রত্যাশা ও প্রাপ্তিকে ধরা হয় প্রতিভার নিদারুণ অপচয় হিসেবেই। সৌদি আরবের টাকা ও বিলাসবহুল জীবনের হাতছানিতে ইউরোপকে বিদায় জানিয়েছেন বার্সেলোনার সাবেক এই খেলোয়াড়।
প্যারিসের সঙ্গে ৯০ মিলিয়ন ইউরোর চুক্তিতে নেইমারকে দলে ভেড়ায় সৌদি প্রো লিগের ক্লাব আল-হিলাল। দুই বছরের চুক্তিতে ক্লাবটিতে যোগ দিয়েছেন নেইমার। যেখানে তার বেতন আকাশছোঁয়া। প্রতি সপ্তাহে ২৫ লক্ষ পাউন্ড তাকে দেবে আল-হিলাল।
ইংলিশ দৈনিক দ্য সানের বরাতে হিন্দুস্থান টাইমস জানিয়েছে, নেইমার নাকি আল-হিলাল কর্তৃপক্ষের কাছে নিজের জন্য তিনটি বিলাসবহুল গাড়ি চেয়েছেন। এছাড়া তার কাছের মানুষজনের জন্য চারটি মার্সিডিজ জি ওয়াগন এবং চালকসহ একটি মার্সিডিজ ভ্যান চেয়েছেন। পরিবারের সদস্য এবং বন্ধুদের জন্য সার্বক্ষণিক একজন চালকও চেয়েছেন নেইমার। বিলাসবহুল গাড়ির তালিকায় রয়েছে, একটি বেন্টলি কন্টিনেন্টাল জিপি, একটি অ্যাস্টন মার্টিন ডিবিএক্স এবং একটি ল্যাম্বরগিনি হুরাকান। এছাড়া ফ্রিজভর্তি আকাই জুস ও সার্বিয়া ভিত্তিক পানীয় গুরানা চেয়েছেন নেইমার।
তাছাড়া নেইমার তার বাড়িতে তিনটি সনা (আরামের জন্য উচ্চ তাপমাত্রাযুক্ত কক্ষ) এবং তার ব্যক্তিগত ব্রাজিলিয়ান শেফকে সাহায্য করার জন্য একজন সাহায্যকারী শেফ চেয়েছেন। এছাড়া বার্সেলোনার সাবেক এই খেলোয়াড় তার হোটেল, রেস্তোরাঁ এবং ভ্রমণের সমস্ত খরচ আল হিলালকে বহন করার জন্য বলেছেন।
সংবাদমাধ্যম দ্য মিররের প্রতিবেদনে বলা হয়, নেইমারের জন্য প্রাসাদসম একটি বাড়ি বরাদ্দ করা হয়েছে যেখানে ২৫টি কক্ষ এবং একটি সুইমিং পুল থাকবে। জানা গেছে, প্রতি বছরে নেইমার ১৭৩.৮ মিলিয়ন পাউন্ড আয় করবেন। এই চুক্তির ফলে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো এবং করিম বেনজেমার পর সৌদি লিগের তৃতীয় সর্বোচ্চ বেতনভোগী খেলোয়াড়ে পরিণত হলেন নেইমার।
২০১৭ সালে রেকর্ড ট্রান্সফার ফি ২২ কোটি ইউরোর বিনিময়ে বার্সেলোনা থেকে পিএসজিতে নাম লেখান নেইমার। তবে ছয় বছরের অধ্যায়ে ক্লাবটির প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেননি তিনি। সবশেষ মৌসুমে তো সমর্থকদের দুয়োও শুনতে হয় তাকে। নেইমার পিএসজির জার্সিতে ১৭৩ ম্যাচ খেলেছেন। পাঁচটি লিগ ওয়ানসহ জিতেছেন ১৩টি ট্রফি। কিন্তু ক্লাবটির মূল চাওয়া চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শিরোপা খরা কাটানোয় ভূমিকা রাখতে পারেননি তিনি। ২০২০ সালে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে হেরে যায় প্যারিসের ক্লাবটি।