রাজধানীর মতিঝিলের আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের কলেজছাত্রীকে জোরপূর্বক বিয়ে ও ধর্ষণের অভিযোগে মামলায় গভর্নিং বডির দাতা সদস্য খন্দকার মুশতাক আহমেদকে ছয় সপ্তাহের আগাম জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট।
একইসাথে খন্দকার মুশতাক আহমেদকে বিয়ে করা আইডিয়ালের ছাত্রীকে নিরাপদ হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) বিচারপতি শেখ জাকির হোসেন ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালত বলেছেন, আইডিয়ালের ছাত্রীর বয়স নিয়ে আসামিপক্ষ ও রাষ্ট্রপক্ষ পরস্পরবিরোধী বক্তব্য দিয়েছেন। তাই ভিকটিমের বয়স নির্ধারণ করা জরুরি। বয়স নির্ধারণ না হওয়া পর্যন্ত ভিকটিম ছাত্রী নারী ও সমাজসেবা অধিদফতরের অধীনে সেইফ হোমে (নিরাপদ হেফাজতে) থাকবে।
এর আগে আদালত আসামি খন্দকার মুশতাক আহমেদ, আইডিয়ালের ছাত্রী ও তার বাবার বক্তব্য শোনেন।
আদালতে আসামির পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সাঈদ আহমেদ রাজা। রাষ্ট্রপক্ষে জামিনের বিরোধিতা করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আবুল হাশেম ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মাহফুজুর রহমান লিখন। ছাত্রীর বাবার পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ।
সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মাহফুজুর রহমান লিখন জানান, ভিকটিম হচ্ছে মাইনর গার্ল। আসামিপক্ষ বলছে বয়স ১৮। এখানে বয়স নিয়ে ডাউট দেখা দিয়েছে। উভয়পক্ষের বক্তব্য শুনে আদালত বয়স নির্ধারণ না হওয়া পর্যন্ত ভিকটিমকে নিরাপদ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। আর আসামিকে ছয় সপ্তাহের জামিন দিয়েছেন।
গত ১৬ আগস্ট এ মামলায় খন্দকার মুশতাক আহমেদের জামিন আবেদন শুনতে অপারগতা প্রকাশ করেন হাইকোর্টের অপর একটি বেঞ্চ।
গত ১ আগস্ট ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৮-এর বিচারক বেগম মাফরোজা পারভীনের আদালতে কলেজছাত্রীর বাবা এ মামলা করেন। গত ১০ আগস্ট বাদিপক্ষের আইনজীবী ওমর ফারুক ফারুকী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, আদালত বাদির জবানবন্দি গ্রহণ করে গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে অভিযোগটি এজাহার হিসেবে গণ্য করে নিয়মিত মামলা হিসেবে গ্রহণের আদেশ দিয়েছেন।
মামলায় এই অপরাধে সহযোগিতার জন্য ওই কলেজের অধ্যক্ষ ফাওজিয়া রাশেদীকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার আরজিতে বাদি উল্লেখ করেন, তার মেয়ে (ভিকটিম) মতিঝিল আইডিয়ালের একাদশ শ্রেণীর ছাত্রী। আসামি মুশতাক বিভিন্ন অজুহাতে কলেজে আসতেন এবং ভিকটিমকে ক্লাস থেকে প্রিন্সিপালের কক্ষে ডেকে আনতেন। খোঁজ-খবর নেয়ার নামে আসামি ভিকটিমকে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে প্রলুব্ধ করতেন। কয়েকদিন পর আসামি মুশতাক ভিকটিমকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে কুপ্রস্তাব দেন। এতে রাজি না হওয়ায় ভিকটিমকে তুলে নিয়ে গিয়ে জোরপূর্বক বিয়ে এবং তাকে ও তার পরিবারকে ঢাকাছাড়া করবে বলে হুমকি দেন মুশতাক।