কাজ থেকে ফিরে বিছানায় পিঠ ঠেকালেই দু’চোখ বুজে আসার কথা। তা নয়, উল্টো বিছানায় শুয়ে শুধু এ পাশ আর ও পাশ। মাথায় নানা রকম চিন্তা ভিড় করে আসছে। ভাবছেন, শুধু শুধু রাতে জেগে না থেকে বরং ৭-৮ পর্বের গোটা একটি সিরিজ দেখে কাটিয়ে দেয়া যেতেই পারে। আর এই অভ্যাসেই ঘটছে বিপত্তি। রাতে পর্যাপ্ত ঘুম না হলে দিনের বেলা ঘুমের ভাব, ক্লান্তি থেকে যাচ্ছে।
সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, দীর্ঘ দিন ধরে চলা এই অভ্যাস টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়িয়ে দিচ্ছে কয়েক গুণ। তথ্যটি ‘অ্যানালস অফ ইন্টারনাল মেডিসিন’ জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। বার্মিংহাম অ্যান্ড উইমেন’স হসপিটাল এবং হার্ভার্ড মেডিক্যাল স্কুলের গবেষক সিনা কিয়ানারসির নেতৃত্বাধীন একদল গবেষক এই বিষয়ে গবেষণা করেছেন।
শরীরের নিজস্ব একটি ঘড়ি আছে। যার ওপর নির্ভর করে শারীরবৃত্তীয় সমস্ত কাজকর্ম। ঘুম আনতে সাহায্য করে যে মেলাটোনিন হরমোন, তার ক্ষরণও নির্ভর করে এই ঘড়ির ওপর। তার সাথে তাল মিলিয়ে চলতে না পারলে ঘুমের স্বাভাবিক চক্র ব্যাহত হবেই। হাসপাতালে কর্মরত প্রায় ৬৫ হাজার সেবিকাকে নিয়ে এই গবেষণা করা হয়েছিল। পেশার তাগিদে তাদের রাত জাগতেই হয়। খাওয়া-ঘুম কোনো কিছুই সময় মেনে করতে পারেন না তারা। এমন কর্মক্ষেত্রের সাথে যুক্ত প্রত্যেকের রক্তেই শর্করার পরিমাণ বেশি বা অদূর ভবিষ্যতে তাদের ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে মত প্রকাশ করেছেন গবেষকেরা।
গবেষকেরা জানিয়েছেন, পর্যাপ্ত ঘুম না হলে শুধু ডায়াবেটিস নয়, হার্টের ধমনীতে ব্লকেজের সম্ভাবনা বেড়ে যেতে পারে। এছাড়াও স্ট্রোক বা বিভিন্ন কার্ডিওভাসকুলার রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও বাড়ে। রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে গেলে তা অন্যান্য মরণব্যাধির ক্ষেত্রে অনুঘটকের মতো কাজ করে। তাছাড়াও রাত জাগার সাথে ধূমপান এবং মদ্যপানের সম্পর্কও রয়েছে অনেকের। তবে ডায়াবেটিস কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই জিনের ওপরেও নির্ভর করে।