আগামী ২৭ দিন বিএনপিকে মাঠে দাঁড়াতে দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। আজ বুধবার বিকেলে গাজীপুরের টঙ্গীতে গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপির আন্দোলন ভুয়া, বিএনপির এক দফা, ২৭ দফা- সবই ভুয়া। ওদের ৫২ দল ভুয়া, তাদের গণতন্ত্র ভুয়া, তারা যে অক্টোবরে আন্দোলনের হুমকি দিচ্ছে, তা-ও ভুয়া। তাদের ঘরেই এখন ধস নেমেছে। ঘরের ভেতর ঘর তৈরি হয়েছে, ঘরে আগুন জ্বলছে, সে আগুনেই তারা পুড়ে শেষ হয়ে যাবে। তাই আমাদের এখন খেলা হবে বিএনপির অপশাসনের বিরুদ্ধে। আমাদের ক্যাপ্টেন এখন ওয়াশিংটন আছেন, তিনি দেশে আসলেই আসল খেলা শুরু হবে।’
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘দেশের স্বাধীনতাকে বাঁচাতে হলে, দেশের গণতন্ত্রকে বাঁচাতে হলে, দেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে শেখ হাসিনার কোনো বিকল্প নেই। কেননা বিএনপি ক্ষমতায় আসলে সবই ধ্বংস করে ফেলবে।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপি এখন বলছে এই অক্টোবরে নাকি সরকার ফেলে দেবে, তারা নাকি আমাদের ভাগ্য নির্ধারণ করবে। বিএনপি আমাদের কী ভাগ্য নির্ধারণ করবে? আমরা ১৫টি অক্টোবর দেখেছি, এবারও দেখব। আগামী বছর অক্টোবরের শেষে আমরাই ক্ষমতায় থাকব। তাই খেলা হবে অক্টোবরেই।’
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বিএনপিকে আমরা আলটিমেটাম দিয়েছি। আগামী ৩৭ দিন তাদের মাঠে দাঁড়াতে দেব না। সব জায়গা দখলে থাকবে শেখ হাসিনার কর্মীদের।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘নানান মতের জগাখিচুড়ি ঐক্যমত দিয়ে শেখ হাসিনা সরকারকে ফেলে দেওয়া যাবে না। বিএনপি এখন তলে তলে ঢাকা অবরোধ করতে চায়, আমরা সে অপেক্ষাতেই আছি জবাব দেওয়ার জন্য। আমরা হাসিনা ম্যাজিক দেখাতে চাই। আমরা বিএনপিকে হাসিনা ম্যাজিক দেখাব, একটু অপেক্ষা করেন। হাসিনার ম্যাজিক উন্নয়নের ম্যাজিক, মুক্তিযুদ্ধের ম্যাজিক, আমাদের জাতীয় পতাকার ম্যাজিক, স্বাধীনতার ম্যাজিক। হাসিনার ম্যাজিকেরই জয় হবে শেষ পর্যন্ত।’
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘এখন মির্জা ফখরুল কান্না করেন, এটা তার হতাশার কান্না। ইদানীং সভায় দাঁড়িয়েই কান্না শুরু করে দেন তিনি। এত কান্না এত দিন কোথায় ছিল?
মির্জা ফখরুলকে ব্যর্থ মহাসচিব উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, তারা খালেদা জিয়ার জন্য ৪৮ মিনিটের জন্য একটি আন্দোলনও করতে পারেনি। তাই মির্জা ফখরুলকে পদত্যাগের আহ্বান জানান তিনি।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘খালেদা জিয়ার সামনে বড় কথা বলার কোনো অধিকার নেই। সেটা আছে আমাদের নেত্রীর, কেননা মানবিকতা দেখিয়ে বাসায় থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন শেখ হাসিনা।’
তিনি বলেন, ‘আগামী জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে ফাইনাল খেলা। সে খেলায় আবারও আওয়ামী লীগ জয়ী হয়ে সরকার গঠন করবে।’
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমাদের মতো এত ছোটদের নিয়ে কেন ভাবেন? প্রেসিডেন্ট বাইডেন আপনি ক্ষমতায় থাকেন আমাদের কোনো প্রশ্ন নেই, তবে এর আগে ট্রাম্পকে থামান। আপনার নিজ দেশে জনপ্রিয়তায় এখনো ট্রাম্পই এগিয়ে।’
গাজীপুরের উন্নয়নের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এখন মেট্রো ধরে উত্তরা থেকে আগারগাঁও ৮ মিনিটে চলে যাওয়া যায়। এই উন্নয়ন করেছেন শেখ হাসিনা। আগামী মাসে মেট্রোরেল মতিঝিল পর্যন্ত চলে যাবে।’
দেশের উন্নয়নচিত্র তুলে ধরে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, ‘দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র টানেল আমরা নির্মাণ করেছি। সে টানেল চলতি ২৮ সেপ্টেম্বর উদ্বোধন করা হবে। শেখ হাসিনার কল্যাণে নারীরা দেশের সব স্তরে চাকরির সুযোগ পাচ্ছে। দেশের নারীর ক্ষমতায়ন হয়েছে শেখ হাসিনার হাত ধরেই।’
গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আজমত উল্ল্যা খানের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রহমান, সিমিন হোসেন রিমি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আল হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, গাজীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও মুক্তিযুক্তবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক, মির্জা আজম, এস এম কামাল হোসেন, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল, গাজীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন সবুজ, সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য বেগম শামসুন্নাহার ভূঁইয়া প্রমুখ।