সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৩০ পূর্বাহ্ন

তিস্তার তাণ্ডব, সিকিমে আকস্মিক বন্যায় মৃত্যু ১৪, নিখোঁজ ১২০

এনবিডি নিউজ ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ৫ অক্টোবর, ২০২৩
  • ৬৫ বার

ভয়াবহ বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে ভারতের রাজ্য সিকিম। বুধবার ভোরে মেঘভাঙা বৃষ্টির জেরে লোনক হ্রদ ফেটে হুড়মুড়িয়ে পানি নেমে আসে। সিকিমে হড়পা বানের বিপর্যয়ের শিকার হয়ে মৃত্যু হয়েছে অন্তত ১৪ জনের। সিকিমের সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, এখনো ২২ জন সেনাসদস্যসহ অন্তত ১২০ জন নিখোঁজ রয়েছে। প্রশাসনিক সূত্রে খবর, মৃত্যুর সংখ্যা আরো বাড়তে পারে। বুধবার সকালে ২৩ জওয়ানের নিখোঁজ হওয়ার খবর মিলেছিল। তাদের মধ্যে এখন পর্যন্ত একজন জওয়ানকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। উদ্ধার হওয়া ওই জওয়ানের শারীরিক অবস্থা আপাতত স্থিতিশীল বলে সেনাবাহিনী সূত্রে খবর।

উত্তর সিকিমের লোনাক হ্রদের উপর মেঘভাঙা বৃষ্টির জেরেই বিপত্তি ঘটেছে। ভেঙে গেছে সিকিমের চুংথাম বাঁধ। তাতেই অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেছে তিস্তার পানিস্তর। নদীর তাণ্ডবে আশপাশের এলাকা পরিণত হয়েছে ধ্বংসস্তূপে। পুজার মুখে সিকিমে এই বিপর্যয়ের জেরে ঘুরতে যাওয়া বহু পর্যটক আটকে পড়েছেন এ রাজ্যে। রাজ্য প্রশাসন সূত্রে খবর, পশ্চিমবঙ্গের অন্তত দু’হাজার পর্যটক সিকিমে আটকে পড়েছেন। জাতীয় সড়কে যান চলাচল বন্ধ। ফলে আপাতত অবরুদ্ধ ফেরার পথও। রাজ্য প্রশাসনের তরফে সিকিম সরকারের সাথে যোগাযোগ করে তাদের উদ্ধারের চেষ্টা চালানো হচ্ছে।

বাস, ট্রেন এবং বিমান ভরে পশ্চিমবঙ্গসহ ভারতের বিভিন্ন অংশ থেকে পর্যটকেরা বেড়াতে যান সিকিমে। প্রতিবার পুজার মুখে সেই ভিড় আরো বাড়ে। তেমনই পর্যটকবোঝাই সিকিমে তিলধারণের জায়গা ছিল না হোটেল, অতিথি নিবাসে। কিন্তু বুধবার সকাল দেখল এক অন্য সিকিমকে। তিস্তায় হড়পা বানের জেরে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পাকিয়ং, গ্যাংটক, নামচি এবং মঙ্গন জেলা। ভেসে গেছে বহু সেতু। পানিমগ্ন বাড়িঘর। কিছু জায়গায় পানির তোড়ে সম্পূর্ণভাবে ভেঙে পড়েছে বড় বড় বিল্ডিং। কাদাস্রোতের তলায় চাপা পড়ে রয়েছে বহু বসতি, রাস্তাঘাট, সেনাছাউনি। পরিস্থিতি জরিপ করে আগামী ৮ অক্টোবর পর্যন্ত পাকিয়ং, গ্যাংটক, নামচি এবং মঙ্গনের সমস্ত স্কুল বন্ধ করে দেয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। চালু করা হয়েছে একাধিক জরুরি পরিষেবার নম্বর।

সিকিম যাওয়ার সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য পথ ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক (সাবেক ৩১এ জাতীয় সড়ক) বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। ফলে বন্ধ রয়েছে শিলিগুড়ি থেকে সিকিমগামী যানবাহনের চলাচল। যার ফলে বহু যাত্রী, যারা সিকিমে যাওয়ার জন্য নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে নেমেছেন, তারা স্টেশনেই আটকে পড়েছেন। তাদের জন্য রাতের খাবারের ব্যবস্থা করে রেল পুলিশ। যাত্রী সোমলতা বসু বলেন, ‘দুপুরের ট্রেনে এনজেপি স্টেশনে নেমে সিকিমের ভয়াবহ পরিস্থিতির কথা জানতে পারি। আগামী কালের টিকিট কেটেছি। রাতটুকু স্টেশনে কাটিয়ে আগামীকাল ট্রেন। রাতের খাবারের বন্দোবস্ত করল রেল পুলিশ।’

এনজেপির আরপিএফ আইসি এমডি সোহেব আলম খান বলেন, ‘যাত্রী, জওয়ান ও পর্যটকদের জন্য আমরা খাবারের আয়োজন করেছি। সিকিম যাওয়ার জন্য বহু মানুষ এখানে অপেক্ষা করছেন। তাদের সাহায্য করাটাই সেটাই আমাদের কর্তব্য।’
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা

 

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com