বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস দাবি করেছেন, দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের মাথায় ইউরেনিয়াম ঢেলে দেওয়ার হুমকি দিয়ে আওয়ায়ামী লীগ সধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের মূলত তাদের হত্যার হুমকি দিয়েছেন। ৯০-এর স্বৈরাচারবিরোধী গণঅভ্যুত্থানের শহীদ নাজির উদ্দিন জেহাদের ৩৩তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আজ মঙ্গলবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
মির্জা আব্বাস বলেন, ‘টুপ করে পদ্মা সেতু থেকে ফেলে দেবেন– এটা কি আমরা ভুলে গেছি? আবার বলছেন, মাথায় ইউরেনিয়াম ঢেলে দেবেন। এটা আপনারা (আওয়ামী লীগ) কী শুরু করছেন! রাজনীতি করেন যেহেতু, তাই রাজনৈতিক কাজকর্ম করেন। রাজনৈতিক ভাষায় কথা বলেন। শিষ্টাচার শেখেন। বিএনপি একটা ভদ্রলোকের দল। আর আওয়ামী লীগ করে অসভ্য লোকরা। এটা কোনো সভ্য লোকের দল না।’
ওবায়দুল কাদেরের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘ইউরেনিয়াম কত প্রকার ও কী কী সেটা কি আপনি জানেন? এ বিষয়ে আপনার কোনো জ্ঞান আছে? একজন উন্মাদ ব্যক্তির প্রলাপ! ইউরেনিয়াম যদি কারও মাথায় দিয়ে দেওয়া হয়, তাহলে এর যে তেজস্ক্রিয়তা তাতে মানুষ মারা যেতে পারে। তাহলে কি আপনি হুমকির আসামি হলেন না? মির্জা ফখরুল এবং মির্জা আব্বাসকে হত্যার হুমকি দিয়েছেন আপনি। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যদের আপনি হত্যার হুমকি দিয়েছেন।’
মির্জা আব্বাস বলেন, ‘আজ আমরা একটা নতুন স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছি। তাদের নতুন বলা যাবে না, এটা ১৫ বছরের পুরান। তারা ১৫ বছর ধরে অত্যাচার করছে। তাদের স্বৈরাচারও বলা যাবে না, তারা হলো কর্তৃত্ববাদী। তত্ত্বাবধায়ক সরকার বা নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনে যেতে তাদের সমস্যাটা কী? আমরা কী ৯৬ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার দেই নাই? তাহলে তারা কেন যেতে চাচ্ছেন না। কারণ তারা জানেন, বাংলাদেশের জনগণ তাদের আর পছন্দ করে না। তাই ক্ষমতায় থাকার জন্য যে ধরনের সরকার দরকার তারা সেই সরকার ব্যবস্থা রাখতে চায়।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, ‘আমাদের প্রায় ৪০ লাখ নেতার বিরুদ্ধে মামলা আছে। এত লোককে জেলে দেওয়ার জায়গা নাই। কিন্তু আমি জানি, জেলখানায় ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ লোকের জায়গা দেওয়া সম্ভব। আমার যে ভাইদের সরকার জেলে নেবে, যারা বাইরে থাকবেন আপনারা আন্দোলন করে সরকারকে তছনছ করে দেবেন। ৯০-এ স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে আমি যুবদলের প্রেসিডেন্ট ছিলাম। যখন আমি গ্রেপ্তার হই, তখন সারাদেশের যুবদলের নেতাকর্মীরা জ্বলে উঠেছিল। সারাদেশ তছনছ করে দিয়েছিল।’
শহীদ জেহাদ স্মৃতি পরিষদ আয়োজিত স্মরণসভায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য হাবিবুর রহমান হাবিব। এ সময় আরও ছিলেন বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানীসহ বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতারা।