গত বিশ্বকাপের সুখস্মৃতিটা ফেরাতে পারল না বাংলাদেশ। ইংল্যান্ডের কাছে ১৩৭ রানে হারল সাকিব বাহিনী। গত বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচে বাংলাদেশের জয়ের দুই নায়ক ছিলেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ও রুবেল হোসেন। আজকের একাদশে দুজনের কেউ-ই ছিলেন না। তারা আজ আড়ালে থেকে দেখলেন দলের অসহায় আত্মসমর্পন।
জিততে হলে অবশ্য অবিশ্বাস্য কিছুই করতে হতো টাইগারদের। লিখতে হতো রূপকথা, গড়তে হতো ইতিহাস; টপকাতে হতো ৩৬৫ রানের পাহাড়সম লক্ষ্য। তবে তা থাকলো স্বপ্ন হয়েই, ৪৮.২ ওভারে মাত্র ২২৭ রানেই গুটিয়ে গেল বাংলাদেশ। ধর্মশালায় বাংলাদেশের হার ১৩৭ রানে।
রিস টপলি, ক্রিস ওকসদের কোনো জবাবই ছিল না তামিম-শান্তদের কাছে। বাংলাদেশ ধুঁকতে থাকে ৯ ওভারে মাত্র ৪৯ রানেই ৪ উইকেট হারিয়ে। দুই অংকে পৌঁছাতে পারেননি শীর্ষ পাঁচ ব্যাটারের চারজনই। অধিনায়ক সাকিবও পারেননি প্রত্যাশা পূরণ করতে।
পাহাড়সম লক্ষ্য তাড়ায় যেভাবে শুরুর প্রয়োজন ছিল, তার ধারেকাছেও যেতে পারেনি টাইগাররা। দ্বিতীয় ওভারেই হারায় দুই উইকেট। তানজিদ তামিমকে ২ বলে ১ রানে বেয়ারেস্টোর ক্যাচ বানানোর পর, কিছু বুঝে উঠার আগে পরের বলেই রিস টপলি গোল্ডেন ডাক উপহার দিয়েছেন নাজমুল শান্তকে।
অধিনায়ক সাকিবকে নিয়ে বিপর্যয় সামলে উঠার চেষ্টা করেন লিটন। তবে প্রতিরোধ গড়তে দেননি টপলি, ষষ্ঠ ওভারে ফের আঘাত হানেন তিনি। এবার ফেরান সাকিব আল হাসানকে। ৯ বলে ১ রান আসে সাকিবের ব্যাটে।
আগের ম্যাচে তিনি নামলেও আক পাচেঁ নামেন মেহেদী মিরাজ। তবে দারুণ ছন্দে থাকা এই ব্যাটারও পারেননি দুই অংকের ঘরে পৌঁছতে।
৮.২ ওভারে মাত্র ৪৯ রানেই ৪ উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
শুধুই ব্যতিক্রম লিটন দাস, ঘোর ব্যর্থতায় শুধু প্রাপ্তি তার তার ফিরে আসা। পাঁচ মাস পর তিনি পেয়েছেন ফিফটির দেখা। ছুটছিলেন শতকের দিকেও। তবে তা আর হয়নি, ২১তম ওভারে ক্রিস ওকসের দ্বিতীয় শিকার তিনি। আউট হবার আগে খেলেন ৬৬ বলে ৭ চার ২ ছক্কায় ৭৬ রানের ইনিংস।
ফিফটির দেখা পান মুশফিকও, তবে ইনিংস বড় করতে পারেননি। ৬৪ বলে ৫১ রান করে টপলির চতুর্থ শিকার হন তিনি। তখনো বাংলাদেশ লক্ষ্য থেকে পিছিয়ে আছে ২০০ রানে।
শেষ দিকে তাওহীদ হৃদয়ের করা ৩৯ রান শুধু হারের ব্যবধান কমিয়েছে। তাছাড়া তাসকিন ১৫, শেখ মেহেদী ১৪ ও শরিফুল করেন ১২ রান। টপলি একাই নেন ৪ উইকেট, ২ উইকেট নিয়েছেন ক্রিস ওকস।
এর আগে বাংলাদেশী বোলারদের তালগোল পাকিয়ে ফেলার সুযোগ নিয়ে ইংলিশ টপ অর্ডার হয়ে উঠে আগুনে। মিডল অর্ডার যদিও ব্যর্থ, তবুও ইংলিশরা পেয়ে যায় ৩৬৫ রানের বিশাল সংগ্রহ। বাংলাদেশের সর্বোচ্চ সংগ্রহই যেখানে ৩৩৯, সেখানে ৩৬৫ দূরূহ নিঃসন্দেহে।
এদিন ধর্মশালায় বল হাতে ধারালো হয়ে উঠতে পারেননি তাসকিন-মোস্তাফিজরা। আফগানিস্তানের পর ইংল্যান্ডের বিপক্ষেও পাওয়ার প্লেতে নিষ্প্রাণ তারা। রান বিকিয়েছেন বড়লোকের বিগড়ে যাওয়া ছেলের মতো করে। আফগানিস্তানের বিপক্ষে ভালো করা স্পিনাররাও দেখেছেন চোখে সর্ষেফুল।