সরকারের কাছে আর কোনো দাবি নয় মন্তব্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান বলেছেন, জনগণ আমাদের সাথে আছে, এখন থেকে আমরা লড়াই করে খালেদা জিয়াসহ সকল রাজবন্দিদের মুক্ত করব। এই লড়াই আমাদের চলছে, আন্দোলনও চলছে।
শনিবার দুপুরে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া, মির্জা আব্বাসসহ সকল রাজবন্দীর নিঃশর্ত মুক্তি ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশ তিনি এসব কথা বলেন।
সেলিমা রহমান বলেন, বাংলাদেশের মানুষ আজকে কথা বলতে পারে না, প্রতিবাদও করতে পারে না। আজকে মহান ভাষা দিবসের মাসেও কেউ কোনো কথা বলতে পারছে না। এই সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলতে গিয়ে, গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করতে গিয়ে কারাগারে গিয়েছেন বিএনপির অসংখ্য নেতাকর্মী। তারা এখনো কারাগারে নির্যাতন নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন।
তিনি বলেন, বেগম জিয়া জনপ্রিয়তার প্রতিহিংসার কারণে সরকার তাকে মিথ্যা মামলায় কারাবন্দি করে রেখেছেন। শুধু তাই নয়, খালেদা জিয়াকে তিলে তিলে মারার ষড়যন্ত্র করেছেন। আজকে তিনি জীবন মৃত্যুর সাথে লড়াই করছেন। তবুও সরকারের কাছে মাথানত করেনি। গৃহবন্দী থাকার পরও দেশনেত্রী বলছেন, দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও। ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে দেশের কোনো মানুষ ভোট দিতে যায়নি।
ওবায়দুল কাদেরের উদ্দেশ্য বিএনপির সিনিয়র এই নেত্রী বলেন, বিএনপি সন্ত্রাসী দল নয়, আওয়ামী লীগ সরকার সন্ত্রাসী দল। লাঠি, লগি বৈঠা দিয়ে তোমরা মানুষ মারো, বাসে আগুন দিয়ে মানুষ হত্যা করেছ। ছাত্রলীগের হাতে পিস্তল লাঠি দা তুলে দিয়েছ। তাই আজকে শিক্ষাঙ্গনে দেখা যায়, একদিকে টেন্ডারবাজি চলছে, অন্যদিকে মারামারি। সারাদেশে খুন-গুম করে বেড়াচ্ছে ছাত্রলীগ যুবলীগের ক্যাডাররা।
সেলিমা রহমান বলেন, সামনে রমজান আসছে। দ্রব্যমূল্য নিয়ে সাধারণ মানুষ চিন্তিত। জিনিসপত্রের দাম আগুন। সরকার প্রতিদিন বলছে, দাম কমাবে কিন্তু দাম কমছে না। এই সরকার সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করবে না। কারণ এর সাথে জড়িত সরকার দলীয় লোকজন।
ছাত্রসমাজ, নারীসমাজসহ দেশবাসীকে রাজপথে নেমে আহবান জানান সেলিমা রহমান।
প্রধান বক্তা বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু বলেন, আওয়ামী লীগের অধীনে বাংলাদেশ নিরাপদ নয়। চক্রান্ত করে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা বসিয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারের অ্যাজেন্ডা ছিল দেশকে রাজনৈতিক শূন্য করা, অর্থনীতিকে ধ্বংস করা। তারা দেশকে গৃহযুদ্ধের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। যতদিন এই সরকার ক্ষমতায় আছে, ততদিন দ্রব্যমূল্য কমবে না।
তিনি বলেন, মিথ্যা কথা বলার জন্য যদি কেউ নোবেল পুরস্কার পায়, তাহলে এই সরকার নোবেল পুরস্কার পাবে। এই সরকার সাংবিধানিক অধিকার, গণতান্ত্রিক অধিকার ও সামাজিক অধিকার ধ্বংস করছে। আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক দল নয়, এরা সন্ত্রাসী দল। তাই স্বাধীন ও সার্বভোমত্ব রক্ষা করতে, মানুষের মুক্তি ও গণতন্ত্রের জন্য পুনরায় আরেকটি মুক্তিযুদ্ধ করতে হবে। আওয়ামী দুর্বৃত্তায়নের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করতে হবে।
বাংলাদেশ নাগরিক অধিকার আন্দোলন এ বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে।
এতে বক্তব্য রাখেন নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নিপুণ রায় চৌধুরী, কৃষকদলের সহ-সভাপতি আ ন ম খলিলুর রহমান ভিপি ইব্রাহিম, তাঁতীদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ড. কাজী মনিরুজ্জামান মনির প্রমুখ।