গাজীপুর মহানগরের টঙ্গী শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি তিন জন করোনা রোগীর কোন হদিস নেই। এ ব্যাপারে হাসপাতালটির তত্ত্বাবধায়ক ও আবাসিক মেডিক্যাল অফিসারের (আরএমও) পরস্পর বিরোধী বক্তব্য পাওয়া গেছে।
আরএমও ডাক্তার পারভেজ হাসান করোনা রোগী পালিয়ে যাওয়ার কথা অস্বীকার করে জানান, তারা করোনা আক্রান্ত একজন শিশু রোগীকে ঢাকা শিশু হাসপাতালে এবং অপর দুই জনকে উত্তরায় কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে রেফার করেছেন। অপরদিকে হাসপাতালটির তত্ত্বাবধায় ডা. নিজাম উদ্দিন জানান, আলোচিত তিন রোগীর একজনের রিপোর্ট এখনো আসেনি, করোনায় আক্রান্ত একটি শিশু রোগীকে ঢাকা শিশু হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে এবং অপর একজন করোনা রোগী হাসপাতাল থেকে পালিয়ে গেছে। তাকে খোঁজে বের করতে তার নাম ঠিকানা প্রশাসনের কাছে দেয়া হয়েছে বলেও তিনি জানান।
নির্ভরযোগ্য একটি সূত্রে জানা গেছে, করোনা সন্দেহভাজন ৪ জন রোগী টঙ্গী শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি ছিল। গত ১৯ এপ্রিল হাসপাতালটির সার্জারি বিভাগের একজন চিকিৎসক-সহ উক্ত চার রোগীর নমুনা পরীক্ষায় কভিড-১৯ পজেটিভ আসে। এর পর ওই চিকিৎসককে হোম আইসোলেশনে পাঠানো হয়। অপর একজন রোগী পুলিশ সদস্য হওয়ায় তাকে রাজারবাগ পুলিশ লাইন হাসপাতালে পাঠানো হয়। তিনি টঙ্গীতে বাস করেন এবং তার কর্মস্থল ঢাকার কেরানীগঞ্জ থানায় বলে জানা গেছে। অপরদিকে করোনা সনাক্তের খবর পেয়ে অপর তিন জন রোগী পালিয়ে যায়। তিন জনের মধ্যে একজনের বয়স ৩৫, অপর জনের ৫২ ও এক বছরের একটি শিশু রয়েছে।
শিশুটিকে ঢাকা শিশু হাসপাতালে রেফার করার দাবী করা হলেও সেখানে শিশুটিকে নেয়া হয়নি বলে সূত্রটি জানিয়েছে। অপরদিকে হাসপাতালে সংরক্ষিত পালিয়ে যাওয়া রোগীদের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে বলেও সূত্রটি জানিয়েছে।
এদিকে টঙ্গীর সাতাইশ এলাকায় প্রাণ-আরএফএল কোম্পানীর একজন কর্মচারীর শরীরে করোনা সনাক্ত হয়েছে। তাকে টঙ্গী গণস্বাস্থ্য হাসপাতাল থেকে কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে টঙ্গী গণস্বাস্থ্য হাসপাতালে যোগাযোগ করা হলে ডা. নাজিম উদ্দিন আহমেদ জানান, জ্বর, কাশি ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে বুধবার দুপুরে টঙ্গীর সাতাইশ থেকে ওই রোগী গণস্বাস্থ্য হাসপাতালে আসেন। হাসপাতালে রেপিড টেস্ট্রে তার কভিড-১৯ পজেটিভ আসে। হাসপাতালটিতে ভ্যান্টিলেটর না থাকায় শ্বাসকষ্টের কারণে ওই রোগীকে (৪৫) কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে রেফার করা হয়। কিন্তু সে কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে গেছে কিনা তা তিনি নিশ্চিত নন। যেখানেই যাক না কেন; তাকে (ডা. নাজিমকে) জানানোর জন্য রোগী ও তার স্বজনদেরকে বলে দেয়া হয়েছে। কিন্তু বুধবার সন্ধ্যায় এ রিপোর্ট পাঠানোর সময় পর্যন্ত ওই রোগী তার অবস্থান সম্পর্কে গণস্বাস্থ্য হাসপাতালের সাথে কোনো যোগাযোগ করেনি বলে জানান ডা. নাজিম।
এদিকে যোগাযোগ করা হলে জিএমপির টঙ্গী পূর্ব থানার ওসি আমিনুল ইসলাম নয়া দিগন্তকে জানান, টঙ্গীর শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতাল থেকে করোনা আক্রান্ত কোনো রোগী পালিয়ে যাওয়ার বিষয়টি তার জানা নেই ।