শনিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৪৩ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :

৬৯ শতাংশ গার্মেন্টকর্মী পরিবারকে টাকা পাঠানো বন্ধ করে দিয়েছেন : সমীক্ষা

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : শুক্রবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২০
  • ২৭৩ বার

প্রাদুর্ভাবের পর পোশাক কারখানাগুলোর কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় প্রায় ৬৯ শতাংশ গার্মেন্টকর্মী গ্রামে তাদের পরিবারের কাছে টাকা পাঠানো বন্ধ করে দিয়েছেন। সাম্প্রতিক এক সমীক্ষায় এ তথ্য উঠে আসে। গবেষণা, কারিগরি সহায়তা ও প্রকল্প ব্যবস্থাপনা সেবা বিষয়ক ঢাকা-ভিত্তিক আন্তর্জাতিক পরামর্শ সংস্থা ‘ইনোভেশন কনসাল্টিং’ এর এক সমীক্ষায় দেখা যায়, করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের পর ৬৬ শতাংশ নারী শ্রমিক এবং ৬১ শতাংশ পুরুষ শ্রমিক গ্রামে তাদের পরিবারের কাছে টাকা পাঠাতে পারেনি।

সমীক্ষায় প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, এপ্রিল মাসের বেতন না পেলে ৯৭ শতাংশ শ্রমিক তাদের গ্রামে টাকা পাঠানো বন্ধ করবেন।

উত্তরদাতা পুরুষ ও নারী শ্রমিকদের ৫২ শতাংশ জানিয়েছেন যে, তারা গ্রামে টাকা পাঠাতে না পারলে তাদের পরিবারের সদস্যরা না খেয়ে থাকবে। তাদের পাঠানো টাকার মধ্যে ৭ শতাংশ শিক্ষায়, ১৪ শতাংশ ঋণ পরিশোধে, ১১ শতাংশ পোশাক কেনাকাটায়, ৯ শতাংশ বিনোদনের জন্য ব্যয় হয়। এছাড়া ৪ শতাংশ সঞ্চয় করা হয়।

স্বল্প আয়ের পেশাজীবী শ্রেণিদের জীবিকা নির্বাহে কোভিড-১৯ এর প্রভাব মূল্যায়নের জন্য বাংলাদেশের বাছাইকৃত (৮৪ জন) ‘গার্মেন্ট কর্মীদের’ ওপর সমীক্ষাটি পরিচালনা করা হয়।

গবেষণা সংস্থাটি জানায়, ‘গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ এবং ময়মনসিংহের সাতটি পোশাক কারখানার ৮৪ জন গার্মেন্টকর্মীর ওপর আমরা সমীক্ষা চালিয়েছি। এসব কারখানার শ্রমিকদের অবস্থানকে প্রগতিশীল হিসেবে চিহ্নিত করা যেতে পারে।’

এই কারখানাগুলো পেশাগত স্বাস্থ্য ও সুরক্ষা (ওএইচএস), শ্রমিকদের স্বাস্থ্য, ক্ষমতায়ন ও অধিকার সম্পর্কিত বিষয়ে উন্নয়ন অংশীদারদের সাথে কাজ করছে।

সংস্থাটি ৭-৯ এপ্রিলের তথ্য সংগ্রহ করেছিল। এটি জরিপের জন্য কম্পিউটারের সহায়তা ব্যক্তিগত সাক্ষাৎকার (সিএপিআই) পদ্ধতি ব্যবহার করেছিল। ফোনে জরিপের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করতে এটি ‘কোবো টুলবক্স’ও ব্যবহার করেছিল।

সমীক্ষার ফলাফল লকডাউনের প্রভাবে নিম্ন-আয়ের মানুষের আয় ও ব্যয়ের ধরণ কিভাবে পরিবর্তিত হচ্ছে, পরিবারগুলো কিভাবে পরিস্থিতি মোকাবিলা করছে এবং তাদের সহায়তা করার জন্য কী ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত সে সম্পর্কে গভীরতর অন্তর্দৃষ্টি সরবরাহ করে।

সমীক্ষায় দেখা গেছে, প্রায় ৮৫ শতাংশ উত্তরদাতা বলেছেন, আর মাত্র কয়েকদিন জীবিকা ধারনের জন্য তাদের হাতে সামান্য পরিমাণ নগদ টাকা রয়েছে।

‘এই উত্তরদাতাদের হাতে নগদ হিসেবে গড়ে ৩ হাজার ৬৮৬ টাকা রয়েছে। যা দিয়ে তাদের পরিবারের ব্যয় ১৬ দিন পর্যন্ত চলতে পারে।’

উত্তরদাতা সকল গার্মেন্টকর্মী জানিয়েছেন, তাদের কারখানাগুলো বর্তমানে বন্ধ রয়েছে (৬-৯ এপ্রিলের তথ্য)। উত্তরদাতাদের ২৪ শতাংশ ইতোমধ্যে তাদের গ্রামের বাড়িতে ফিরে গেছেন এবং ৭৬ শতাংশ এখনও তাদের কর্মস্থলের আশপাশে বসবাস করছেন।

সমীক্ষায় উল্লেখ করা হয়, পুরুষ শ্রমিকের ৩৩ শতাংশ ও নারী শ্রমিকদের ১৪ শতাংশ গ্রামে ফিরেছেন।

খাবারের পেছনে ব্যয় সম্পর্কে উত্তরদাতারা বলেছেন, তারা এ খাতে খরচ ২৭ শতাংশ পর্যন্ত কমিয়েছেন। কাজ বন্ধ হওয়ার আগে শ্রমিকরা প্রতিদিন খাবারের জন্য গড়ে ২৬৬ টাকা ব্যয় করতেন, যা কমিয়ে ১৯৩ টাকা করেছেন।

মোবাইল-ব্যাংকিং অ্যাকাউন্ট রয়েছে কিনা সে সম্পর্কে উত্তরদাতারা জানান, প্রায় ৭৯ শতাংশের এটি রয়েছে, যার মধ্যে ৮৩ শতাংশ পুরুষ শ্রমিক এবং ৭৪ শতাংশ নারী শ্রমিক।

উত্তরদাতাদের মধ্যে প্রায় ৫৪ শতাংশকে বর্তমানে নগদ অর্থে বেতন দেয়া হয়েছে। এছাড়া ৩৩ শতাংশকে মোবাইল অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে এবং ১৩ শতাংশ ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে বেতন প্রদান করা হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com