গত কয়েক দিনের ঘটনাগুলো প্রমাণ করেছে বাংলাদেশের নিরাপত্তা কতটা ভঙ্গুর- এমন মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। পার্বত্য চট্টগ্রামের ঘটনা সম্পর্কে এ সময় তিনি বলেন, ‘দুর্ভাগ্য যে এখনো আমাদের সরকার বলতে পারছে না, এটার সাথে কারা সম্পৃক্ত।’
রোববার (৭ এপ্রিল) গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে গুম-খুন ও নির্যাতনের শিকার ব্যক্তিদের পরিবারের সম্মানে অ্যাসোসিয়েশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশের (অ্যাব) ইফতার মাহফিলে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
‘মিয়ানমার সীমান্ত ভয়াবহভাবে আক্রান্ত’- এমন মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘গত দুই-তিন দিনে পার্বত্য চট্টগ্রামে ব্যাংক লুট হয়েছে, থানা আক্রান্ত হয়েছে। কি দুর্ভাগ্য আমাদের, এখনো আমাদের সরকার বলতে পারছে না, এটার সাথে কারা সম্পৃক্ত। কেউ বলে মিয়ানমারের যুদ্ধারত কোনো সংগঠন, কেউ ভিন্ন ইঙ্গিত করে বলে জঙ্গিরা জড়িত, আহ্! যখন কোনো কিছু করতে পারে না, বের করতে পারে না, যখন দোষ চাপাতে হয়, তখন এই জঙ্গি খুঁজে বের করে। গত কয়েকদিনের এই ঘটনাগুলো প্রমাণ করেছে বাংলাদেশের নিরাপত্তা কতটা ভঙ্গুর। সরকার ১৩ বছর ধরে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান করতে পারেনি। পানির সমস্যা, সীমান্ত হত্যাকাণ্ড কোনোটাই সমাধান করতে পারেনি।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘বীরের রক্তস্রোত আর মায়ের অশ্রুধারা কখনো বিপথে যেতে পারে না, বিফলে যেতে পারে না, কখনো না। আমাদের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সংগ্রাম, কথা বলার সংগ্রাম, এটা ন্যায়সঙ্গত সংগ্রাম। সত্যের পথের সংগ্রাম, সত্যকে ফিরে পাওয়ার সংগ্রাম। কখনো কোনো কারণে ব্যর্থ হয় না।’
তিনি বলেন, ‘১৫ বছর ধরে সরকার অত্যন্ত কৌশলে গণতন্ত্র ধ্বংসের সব কাজ করে যাচ্ছে। একদলীয় শাসন কায়েম করতে সংবিধান পরিবর্তন করেছে। এই সরকার অনেক তরুণদের হত্যা করেছে। সব কিছুর অতিমাত্রা ছেড়েছে তারা। যখন কোনো বিরোধী দলীয় নেতাকে পুলিশ বাসায় পায়নি, তখন বাসা থেকে স্ত্রী অথবা মাকে তুলে নিয়ে গেছে। নির্যাতন করেছে।’
‘সরকার সব দিক দিয়ে ব্যর্থ, রাষ্ট্র পরিচালনায়, জনগণকে পথ দেখাতে, স্বাস্থ্য ও শিক্ষাখাতে ব্যর্থ হয়েছে। এমন কোনো বিশ্ববিদ্যালয় নাই যে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ সন্ত্রাসী দ্বারা নিয়ন্ত্রিত নয়। বুয়েটে শিক্ষার মান ভালো হলেও এখন ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা তা গ্রাস করতে চায়,’ বলেন তিনি।
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটি সদস্য বেগম সেলিমা রহমান, ভাইস-চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রম, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা কাউন্সিল সদস্য প্রকৌশলী এ আ হ আকতার হোসেন, অ্যাবের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি প্রকৌশলী আশরাফ উদ্দিন বকুল, অ্যাব মহাসচিব প্রকৌশলী আলমগীর হাসিন আহমেদ , প্রকৌশলী মোস্তফা জামান সেলিম, প্রকৌশলী মাহবুব আলম, প্রকৌশলী আসাদুজ্জামান চুন্নু, শহীদ নুরে আলম ভূইয়া তানুর স্ত্রী কানিজ ফাতিমা আঁখি প্রমুখ।
উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডক্টর আব্দুল মঈন খান, সহ-প্রচার সম্পাদক কৃষিবিদ শামীমুর রহমান, সহ-স্থানীয় সরকারবিষয়ক সম্পাদক শাম্মি আক্তার, প্রকৌশলী মো: আবদুল মতিন খান, প্রকৌশলী মো: হানিফ, চেয়ারপারসনের একান্ত সচিব এ বি এম আব্দুস সাত্তার প্রমুখ।