চলমান তাপপ্রবাহের মধ্যে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ে স্কুল ও মাদ্রাসা আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। তবে হাইকোর্টের এমন এখতিয়ার আছে কি না, সে প্রশ্ন তুলে আদালতেই বিষয়টি সুরাহা করা হবে বলে জানালেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী। আজ সোমবার বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিজ্ঞান কমপ্লেক্সে আয়োজিত এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়ার প্রবণতা দেশের জন্য সঠিক নয় এবং এই ধরনের চাহিদা বা অনুরোধগুলো আসলে আমরা মনে করি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে, যথাযথ নয়। যে সমস্ত জায়গায় এই সময়, শুষ্ক মৌসুমেই একটা পড়ালেখার সুযোগ থকে। যেমন হাওরাঞ্চল, চরাঞ্চল- যেখানে বন্যার সময় প্লাবিত হয়ে যায়, বৃষ্টির সময়- সেখানে তো পড়াশুনা বিঘ্নিত হয়। সেখানে শুষ্ক মৌসুমে কেন বন্ধ থাকবে?’
তিনি বলেন, ‘তাপমাত্রা বাড়লে সেটা আমরা আবহাওয়া অধিদপ্তরের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেব, কিন্তু হঠাৎ করে কেউ সিদ্ধান্ত নির্বাহী বিভাগের ওপর চাপিয়ে দিতে পারে কি না, এ বিষয়টি আমরা আদালতেই সুরাহা করার চেষ্টা করব।
মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, ‘রমজান মাসেও দেখেছি কিছু ব্যক্তি আদালতে গিয়ে বুঝিয়ে একটা আদেশ নিয়ে এসেছিলেন, কিন্তু আমাদের সর্বোচ্চ আদালত থেকে বলা হয়েছে, এটা আদালতের এখতিয়ার নয়। ইতোমধ্যে সর্বোচ্চ আদালত থেকে কিন্তু আমরা একটা রায় পেয়েছি। যেখানে বলা হয়েছে যে, সংবিধান অনুসারে ছুটি ঘোষণার এখতিয়ার হচ্ছে সরকারের নির্বাহী বিভাগের। রুলস অব বিজনেসে সাধারণ ছুটির বিষয়ে সেখানে তো সরাসরি আছে যে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এখতিয়ারভুক্ত। সেক্ষেত্রে সেটা আমরা আদালতে উত্থাপন করব, দেখব সেখানে কি হয়।’
হাইকোর্টের দেওয়া নির্দেশনা শিক্ষা মন্ত্রণালয় অনুসরণ করবে কি না, জানতে চাইলে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘এই মুহূর্তে আমাদের কাছে যেহেতু কোনো রায় আসেনি।আমাদের যে সিদ্ধান্ত দিয়েছি, সেটাতে এই মুহূর্তে আমরা স্থির আছি। অন্যকিছু দেখলে সে অনুযায়ী আমরা সিদ্ধান্ত নেব।’
গতকাল রবিবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গিয়ে অনেক শিক্ষক-শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়েছেন বলে সংবাদমাধ্যমে যে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন মহিবুল হাসান চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘যারা অসুস্থ হয়েছেন, তারা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নাকি অন্যত্র ছিলেন, তাও দেখার বিষয়।’
এর আগে আজ প্রাথমিক, মাধ্যমিক স্কুল ও মাদ্রাসার ক্লাস আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
এর আগে রমজানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা রাখা নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত বাতিল করে রায় দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। সেই রায় নিয়েও তখন প্রশ্ন তোলেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী। তখন তিনি বলেন, ‘সংবিধান অনুযায়ী বিদ্যালয়গুলোর ছুটি ঘোষণা নির্বাহী এখতিয়ার। কয় দিন ছুটি থাকবে বা থাকবে না এটা একটা বিশেষায়িত বিষয়। এটা উচ্চ আদালতের এখতিয়ার নয়।’