রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে শনিবার রাতভর সংঘর্ষ হয়েছে।
হলের গেস্টরুমে বসাকে কেন্দ্র করে রাত ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সোহরাওয়ার্দী হল ও মাদার বখশ হলের মধ্যবর্তী স্থানে দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। চলে রাত ৩টা পর্যন্ত। পরে পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সহায়তা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে।
সোহরাওয়ার্দী হল সূত্রে জানা গেছে, রাত সাড়ে ১১টার দিকে হলের গেস্টরুমে বসাকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের সোহরাওয়ার্দী হল কমিটির সভাপতি নিয়াজ মোর্শেদের সাথে সহ-সভাপতি আতিকুর রহমানের কথা-কাটাকাটি হয়। আতিকুর রহমান রাবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাবুর অনুসারী।
এর জের ধরে দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি হয়। এক পর্যায়ে আতিকুর রহমানের কক্ষে ভাঙচুর চালানো হয়। পরে ক্যাম্পাসের বাইরে থেকে নিয়াজ মোর্শেদের অনুসারী ছাত্রলীগের কিছু কর্মী হলে প্রবেশ করেন।
এ ঘটনার পর রাবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের অনুসারী তিন শতাধিক নেতাকর্মী মাদার বখশ হলের সামনে অবস্থান নেন। পরে দুই গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া এবং ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এসময় দেশীয় অস্ত্রের মহড়াও দেখা গেছে।
শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের প্রাধক্ষ্য ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর বলেন, আমরা হল প্রশাসন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসনকে সাথে নিয়ে হলে প্রবেশ করেছিলাম। আমরা চেষ্টা করেছি সবার রুমে তল্লাশি করার। এছাড়াও আমরা যে রুমগুলোতে সন্দেহ করেছিলাম অস্ত্র থাকতে পারে সেগুলোতে তল্লাশি করি কিন্তু কোনো অস্ত্র পাইনি। ভাঙা ইট বা চেয়ারের ভাঙা হাতল পেয়েছি। কিছু শিক্ষার্থীর রুমে তালা লাগানো ছিল, আমরা ধারণা করছি তারা এই ঘটনার সাথে যুক্ত ছিল। ডাইনিংয়ের ছাদ দিয়ে তারা হল ত্যাগ করেছে। হলে বর্তমানে কোনো বহিরাগত নেই।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক বলেন, এমন ঘটনা দুঃখজনক। দুই গ্রুপের মধ্যে ইট পাটকেল নিক্ষেপ হয়েছে। আমরা চেষ্টা করেছি বিষয়টি সমাধান করার। আমরা দুই পক্ষেরই সাথে কথা বলেছি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আইন-শৃঙ্খলার বিষয়ে সব সময় সতর্ক। তারপরেও একটা দুর্ঘটনা ঘটেছে। কিছু ককটেল বিস্ফোরণ হয়েছে, লাঠি বা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মহড়া হয়েছে। তবে হলের মধ্যে যখন আমরা গেলাম তখন এ ধরনের কোনো নমুনা পাইনি। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত আছে।
পরবর্তীতে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, পরবর্তীতে যদি কোনো সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়া যায় তাহলে ব্যবস্থা নেব। অভিযোগটি যে কেউ করতে পারে। আমরা প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে ছাত্রদের জন্য যেটা ভালো হয় সেটা করব।
এ বিষয়ে মতিহার থানার ডিসি মধুসূদন রায় বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে যেন স্বাভাবিক এবং পড়াশোনার পরিবেশ বজায় থাকে, সাধারণ শিক্ষার্থীরা যেন নির্ভয়ে পড়াশোনা করতে পারে সেই লক্ষ্যে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সাথে কাজ করি। বিশ্ববিদ্যালয়ে পুলিশ চাইলেই সহজে হস্তক্ষেপ করতে পারে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের যদি কোনো সহযোগিতা লাগে আমরা সর্বদা প্রস্তুত। আজকের ঘটনায় আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের সাথে এক হয়ে কাজ করেছি। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।