অবশেষে স্বস্তি। দাপুটে জয় দিয়েই সিরিজ শেষ করলো বাংলাদেশ। বিগত কয়দিনের জমানো ক্ষোভ যেন আজ ঢেলে দিলো টাইগাররা, ব্যাটে-বলে কোনো বিভাগেই দেয়নি যুক্তরাষ্ট্রকে পাত্তা। সেই সাথে এড়ালো ধবলধোলাইয়ের লজ্জাও৷
সিরিজের শেষ টি-টোয়েন্টিতে যুক্তরাষ্ট্রকে রীতিমতো উড়িয়ে দিয়েছে টাইগাররা। বুঝিয়ে দিয়েছে নিজেদের সক্ষমতা। প্রমাণ করেছে দুই দলের মাঝে রয়েছে কত ব্যবধান। ১০ উইকেটের বিশাল জয় সেই কথাই বলে। স্বাগতিকদের দেয়া ১০৫ রানের লক্ষ্য ১১.৪ ওভারেই পেরিয়েছে টাইগাররা।
বল হাতে মোস্তাফিজ তাণ্ডবের পর ব্যাট হাতে ঝড় তোলেন তানজিদ তামিম ও সৌম্য সরকার। দুজনে মিলে কোনো সুযোগই দেননি মার্কিন বোলারদের। ৭০ বলে ১০৮* রানের জুটিতে নিশ্চিত করেন জয়। যা উদ্বোধনী জুটিতে বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। তাতে টাইগাররা পায় বলের বিচারে সবচেয়ে বড় জয়।
তানজিদ তামিম তুলে নেন ফিফটি, সাত ম্যাচের টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে যা তৃতীয়। আজ অপরাজিত থাকেন ৪২ বলে ৫৮ রানে। আরেক ওপেনার সৌম্য সরকারও ছিলেন সুন্দর, ২৮ বলে ৪৩* রানের ইনিংস উপহার দেন তিনি। ৫০ বল হাতে রেখেই বাংলাদেশ পৌঁছেছে মাইলফলকে।
তবে আসল কাজটা করে দেন বোলাররাই। এক কথায় বললে মোস্তাফিজ। শনিবার টসে জিতে আগে ফিল্ডিং নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে ১০৪ রানে ধসিয়ে দেবার পেছনে বড় ভূমিকা এই বাঁ-হাতির। মাত্র ১০ রানে ৬ উইকেট নেন তিনি। যা তার ক্যারিয়ারসেরা বোলিং ফিগার।
তার এমন বোলিংয়ে মাথা তুলে দাঁড়াতেই পারেনি যুক্তরাষ্ট্র। অথচ শুরুটা দারুণ ছিল তাদের। টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে টাইগার বোলারদের শাসন করছিলেন দুই ওপেনার। শায়ান জাহাঙ্গীর ও আন্দ্রে গোস মিলে ৪.৫ ওভারে তোলেন ৪৬ রান।
তবে ওভারের শেষ বলেই তাদের দৌড় থামান সাকিব আল হাসান। উদ্বোধনী জুটি ভেঙে ফেরান আন্দ্রে গোসকে। সিরিজে যা সাকিবের প্রথম উইকেট। গোস আউট হন ১৫ বলে ২৭ রানে। তাতে সাকিব পূরণ করেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিজের সাত শ’ উইকেটের মাইলফলক।
পরের ওভারে মোস্তাফিজ দেখা দেন ভয়ংকর রূপে। কোনো রান না দিয়ে ফেরান শায়ানকে। ২০ বলে ১৮ করেন এই ব্যাটার। ৭ বলের মাঝে জোড়া উইকেট হারিয়ে ধাক্কা খায় যুক্তরাষ্ট্র।
এরপর চাপ ধরে রাখেন রিশাদ। উইকেট তুলতে না পারলেও তুলে নেন মেইডেন ওভার। তবে উইকেট আসে ১০ম ওভারে মোস্তাফিজের হাত ধরে। নিতিশ কুমারকে ফেরান ৩ (৯) রানে। তাতে ৯.৪ ওভার শেষে যুক্তরাষ্ট্রের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৩ উইকেটে ৫৬ রান।
তবে এরপরও ছাড় দেয়নি টাইগাররা৷ দ্রুত আরো দুটো উইকেট তুলে নেন রিশাদ-তানজিম মিলে৷ মার্কিন অধিনায়ক এন্ড্রু জোনসকে ৭ বলে মাত্র ২ রান তুলতেই ফেরান তানজিম সাকিব। ১২.২ ওভারে এসে মিলিন্দ কুমারকে (৭) ঝুলিতে পুরেন রিশাদ।
১৮তম ওভারে এসে জোড়া উইকেট শিকার করেন মোস্তাফিজ। ১৭.৩ ওভারে সিধলেকে ১২ রানে ফেরানোর পর ১৭.৫ ওভারে ফেরান সাবেক কিউই অলরাউন্ডার কোরি আন্ডারসনকে। ১৮ বলে ১৮ রান করে বোল্ড হন তিনি৷ ৯৪ রানে ৭ উইকেট হারায় যুক্তরাষ্ট্র।৷
শেষ ওভারে এসে আবারো জোড়া আঘাত আনেন মোস্তাফিজ। জশদ্বীপ সিং ও নিসর্গ প্যাটেলকে ফেরান তিনি। তাতে ৯ উইকেটে ১০৪ রানে শেষ হয় যুক্তরাষ্ট্রের ইনিংস।
মোস্তাফিজ ছাড়াও ইনিংস জুড়ে দারুণ বল করেন রিশাদ। একটার বেশি উইকেট না পেলেও চার ওভার বল করে মাত্র ৭ রান দেন তিনি।