কয়েকদিনের ভারী বৃষ্টিপাত আর উজানের ঢলে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে তিস্তা তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।উজানের পানির চাপ সামলাতে ডালিয়া ব্যারাজের ৪৪টি গেট খুলে রেখেছে কর্তৃপক্ষ। তিস্তা নদী তীরবর্তী নিম্ন অঞ্চলের ঘরবাড়ি ও রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় গবাদি পশু নিয়ে বিপাকে পড়েছে তিস্তা তীরবর্তী অঞ্চলের লোকজন।
আজ শুক্রবার বিকেল ৩টায় পাউবো সূত্রে পাওয়া তিস্তার পানি প্রবাহের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, উজানে পানি কমলেও ভাটিতে পানি প্রবাহ বেড়েছে। বিকেল ৩টায় কাউনিয়া পয়েন্টে পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে ২৯.৩০ মিটার যা বিপৎসীমার ৫৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজের পয়েন্টে তিস্তার পানিপ্রবাহ কমে বিপৎসীমার ৪৭ সেন্টিমিটার রেকর্ড করা হলেও আগামী ৭২ ঘণ্টায় কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট ও নীলফামারী জেলার কতিপয় নিম্নাঞ্চলে স্বল্পমেয়াদী বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে এবং রংপুর জেলার কতিপয় নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা অবনতি হতে পারে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
তিস্তায় আকস্মিক পানি বৃদ্ধির ফলে লালমনিরহাট সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ ও আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা এলাকার তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে পানি ঢুকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এ অঞ্চলের মানুষ।
তিস্তার অববাহিকার চরাঞ্চলগুলোর ঘরবাড়ি ও ফসলি জমিতে পানি ঢুকে পড়ায় গবাদি পশু নিয়ে দুর্ভোগে রয়েছেন তারা। পানি বাড়ায় তিস্তা অববাহিকার নদী তীরবর্তী ও চরাঞ্চলে বসবাসরত মানুষজন বন্যা ও নদীভাঙন আতঙ্কে রয়েছেন। বিশেষ করে লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, শৈইলমারী, নোহালী, হাতীবান্ধা উপজেলার গড্ডিমারী, দোয়ানী, নিজ শেখ সুন্দর, বাঘের চর, ডাউয়াবাড়ী এবং পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম ইউনিয়নের তিস্তা তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে পানি কিছুটা কমতে শুরু করেছে। একদিকে পানির নিচে ফসলি জমি অন্যদিকে বাড়িতে পানি, গবাদি পশুর খাবার সংকট, তাদের ভাবিয়ে তুলছে। এসব এলাকায় সরকারি-বেসরকারিভাবে কোনো ত্রাণ তৎপরতা লক্ষ্য করা যায়নি।
এ বিষয়ে লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীল কুমার জানান, আগামী ৭২ ঘণ্টায় দেশের উত্তরাঞ্চলের নদীসমূহের পানি সমতল বৃদ্ধি পেতে পারে। আগামী ৭২ ঘণ্টায় কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট ও নীলফামারী জেলার কতিপয় নিম্নাঞ্চলে স্বল্পমেয়াদী বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে।