হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার হৃদযন্ত্রে পেসমেকার বসানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা: এ জেড এম জাহিদ হোসেন।
আজ রোববার সন্ধ্যায় এ তথ্য জানান তিনি।
ডা: জাহিদ বলেন, ‘ম্যাডামের হৃদরোগের সমস্যা আগে থেকেই ছিল। হার্টে ব্লক ধরা পড়েছিল। সেখানে একটা স্টেন্টও (রিং) লাগানো ছিল। সবকিছু পর্যালোচনা করে মেডিক্যাল বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কিছুক্ষণ আগে তার হার্টে পেসমেকার বসানো হয়েছে।’
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে গত শুক্রবার দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এভারকেয়ার হাসপাতালে করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে অধ্যাপক এফ এম সিদ্দিকী, অধ্যাপক শামসুল আরেফিন, অধ্যাপক এ কিউ এম মহসিনসহ মেডিক্যাল বোর্ডের সদস্যরা খালেদা জিয়ার দেখভাল করছেন।
সাবেক প্রধানমন্ত্রীর চিকিৎসায় মেডিক্যাল বোর্ড কয়েক দফা বৈঠক করেছে। তার চিকিৎসায় দেশী-বিদেশী চিকিৎসকদের সমন্বয়ে গঠিত মেডিক্যাল বোর্ড পেসমেকার বসানোর সিদ্ধান্ত নেন। গতকাল নেয়া সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে আজ রোববার দুপুরে থেকে পেসমেকার লাগানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়। এজন্য খালেদা জিয়াকে নেয়া হয় বিশেষায়িত কক্ষে।
বিএনপি চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত চিকিৎসক জাহিদ হোসেন জানান, মেডিক্যাল বোর্ডের সভাগুলোতে লন্ডন থেকে খালেদা জিয়ার পুত্রবধূ ডা: জোবাইদা রহমান এবং যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়ার কয়েকজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ভার্চুয়ালি যুক্ত থাকছেন। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা তার শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার রিপোর্টগুলো পর্যালোচনা করে তাৎক্ষণিক যা করণীয় সেই ব্যবস্থা নিচ্ছেন।
চিকিৎসা-সংক্রান্ত সূত্রমতে, ৭৯ বছর বয়সী বিএনপি চেয়ারপারসন আর্থ্রাইটিস, হৃদরোগ, ফুসফুস, লিভার, কিডনি, ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন জটিলতায় ভুগছেন।
এবারের আগে ২ মে তাকে হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। তখন খালেদা জিয়া সিসিইউতে দুই দিন চিকিৎসাধীন ছিলেন।
এর আগে গত বছরের ৯ আগস্ট হাসপাতালে ভর্তি হয়ে পাঁচ মাসের বেশি সময় চিকিৎসা নিয়েছেন তিনি। বাসায় ফেরেন এ বছরের ১১ জানুয়ারি। তখন উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে নিতে পরিবার থেকে সরকারের কাছে আবেদন করা হলেও আইনি জটিলতায় অনুমতি মেলেনি।
এমন পরিপ্রেক্ষিতে লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত বিএনপি চেয়ারপারসনের রক্তনালিতে অস্ত্রোপচার করা হয় গত বছরের ২৭ অক্টোবর। যুক্তরাষ্ট্রের তিনজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ঢাকায় এসে এই অস্ত্রোপচার করেন।