প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, শুরুতে কোটা সংস্কার আন্দোলনে জামায়াত-শিবির সন্ত্রাসীরা ঘাপটি মেরে থাকলেও পরে ভয়ংকরভাবে সামনে আসে।
আজ রবিবার সকালে প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবনে বাংলাদেশে নিযুক্ত স্পেনের রাষ্ট্রদূত গ্যাব্রিয়েল মারিয়া সিস্তিয়াগা ওচোয়া ডি চিনচেত্রু-এর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে এ কথা বলেন। পরে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব মো. নাঈমুল ইসলাম খান সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, কোটা সংস্কারের দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে প্রাথমিকভাবে জামায়াত-শিবির সন্ত্রাসীরা লো-প্রোফাইলে (ঘাপটি) থাকলেও একটা পর্যায়ে ভয়ংকরভাবে আবির্ভূত হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যে প্রতিষ্ঠানগুলো সরকারের সফলতা ও উন্নয়নের প্রতীক, জনসেবামূলক এবং যেখানে যেখানে সাফল্য সন্ত্রাসীরা সেসব প্রতিষ্ঠানে হামলা করে।
এ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, কোভিড হাসপাতাল, মেট্রোরেল, এক্সপ্রেসওয়ে, সেতু ভবন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ভবন এবং ডেটা সেন্টার; সবগুলো আমাদের উন্নয়নের প্রতীক। এসব প্রতিষ্ঠান জনগণকে সেবা দেয় এবং প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংসে তারাই আসল ক্ষতিগ্রস্ত।
সেনা মোতায়েন প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সেনা সদস্যরা সর্বোচ্চ ধৈর্য দেখিয়েছে।
শেখ হাসিনা জানান, এখন পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী সাম্প্রতিক সংঘাতে তার দল আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ২১ জন মারা গেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি দলমত নির্বিশেষে সংঘাতে নিহত ও আহতদের সহযোগিতা করছেন। সহযোগিতা করার ক্ষেত্রে তিনি দল বিবেচনা করতে আগ্রহী নন।
সাম্প্রতিক সহিংসতায় নিহতদের পরিবারের সদস্য এবং আহতদের জীবন-জীবিকা এবং বিনামূল্যে আহতদের সুচিকিৎসায় সরকারের নেওয়া পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
শান্তি ও সমৃদ্ধির স্বার্থে সেনা মোতায়েন এবং কারফিউ আরোপের প্রশংসা করে বাংলাদেশে নিযুক্ত স্পেনের রাষ্ট্রদূত গ্যাব্রিয়েল মারিয়া সিস্তিয়াগা ওচোয়া ডি চিনচেত্রু বলেন, এখন ধীরে ধীরে সবকিছুর উন্নতি হচ্ছে।
স্প্যানিশ রাষ্ট্রদূত বলেন, শান্তি ও অগ্রগতি নিশ্চিত করার জন্য যে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তিনি তা বোঝেন।
মারিয়া সিস্তিয়াগা বলেন, তিনি টেলিভিশনে সবকিছু দেখেছেন। তবে ভাষাগত পার্থক্যের কারণে সেগুলো বুঝতে পারেননি। তিনি সংবাদপত্র থেকে ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ ও সংঘাতের বিষয়টি জানেন।
গত ১৬ বছরে বাংলাদেশে উন্নয়ন হয়েছে তা খুবই দৃশ্যমান উল্লেখ করে মারিয়া সিস্তিয়াগা বলেন, গত ১৬ বছরে উন্নয়ন অত্যন্ত বাস্তব, চাইলে যে কেউ যাচাই করতে পারে।
বাংলাদেশে শিক্ষা, স্বাস্থ্য খাতে এবং সামাজিক নিরাপত্তা খাতে বাজেট বরাদ্দের প্রশংসা করে স্প্যানিশ রাষ্ট্রদূত বলেন, এসব বরাদ্দ জনগণের কল্যাণে সরকারের আন্তরিকতা নিশ্চিত করে। এসব খাতে অনেক দেশে এ ধরনের আলাদা বাজেট সাপোর্ট থাকে না।
সৌজন্য সাক্ষাতে অন্যদের মধ্যে অ্যাম্বাসেডর অ্যাট লার্জ মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।