বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা আজ বৃহস্পতিবার ‘রিমেমবারিং আওয়ার হিরোজ’ অর্থাৎ ‘আমাদের বীরদের স্মরণ’ নামে নতুন কর্মসূচি পালন করার ঘোষণা দিয়েছে।
রিফাত রশিদ নামে এক সহ-সমন্বয়কের পাঠানো বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী কর্মসূচিতে নয় দফা দাবি আদায়ের জন্য ‘নির্যাতনের ভয়ংকর দিন-রাতগুলোর স্মৃতিচারণ’, ‘শহীদ ও আহতদের নিয়ে পরিবার ও সহপাঠীদের স্মৃতিচারণ’, ‘চিত্রাঙ্কন/গ্রাফিতি, দেওয়াল লিখন, ফেস্টুন তৈরি, ডিজিটাল পোট্রেট তৈরি’ এবং ‘ক্যাম্পাস ও এলাকা ভিত্তিক প্রতিবাদ ও সাংস্কৃতিক আয়োজন’-এর মতো কর্মসূচি পালনের কথা বলা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকসহ সব শ্রেণিপেশার মানুষকে নতুন কর্মসূচি পালনের আহবান জানানো হয়েছে।
রিফাত রশিদের পাঠানো বিজ্ঞপ্তিটি এখানে দেয়া হলো :
প্রিয় দেশবাসী,
আমাদের প্রিয় বাংলাদেশ আজ সন্ত্রাসের কালো ছায়ায় আচ্ছন্ন। শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সরকার এই দেশের সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর রাষ্ট্রযন্ত্র, পুলিশ, র্যাব, বিজিবি, সেনাবহিনী ও তাদের দলের সন্ত্রাসীদের ব্যবহার করে বর্বর গণহত্যা চালিয়েছে। আমাদের ঝলমলে দিনগুলো আজ আঁধারে ছেয়ে গেছে। রাতগুলো হয়ে গেছে গণগ্রেফতারের আতঙ্কে আরও অন্ধকার। সরকার ও তার মদদপুষ্ট ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও যৌথবাহিনীর মধ্যযুগীয় বর্বরতায় শাহাদাত বরণ করেছে শিশুসহ শত শত সাধারণ নাগরিক। চলছে রাতের আঁধারে বাড়ি বাড়ি গিয়ে হানাদার বাহিনীর কায়দায় গণগ্রেফতার, সেইসাথে চলছে গ্রেফতার বাণিজ্য। সাধারণ শিক্ষার্থী ও নাগরিকদের রাস্তায় ধরে মোবাইল চেক, হয়রানির ও নির্বিচার গ্রেফতারের মতো মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা প্রতিদিনের চিত্র।
এছাড়াও আগামীর বাংলাদেশ গড়ার কারিগর জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানিত শিক্ষকমন্ডলির উপর ক্যাম্পাসের ভেতরে হামলা করেছে পুলিশের সন্ত্রাসীরা। এমনকি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের শ্রদ্ধেয় শিক্ষিকা শেহরীন আমিন মোনামী ও নুসরাত জাহান চৌধুরীর গায়েও হাত তুলেছে পুলিশের কিছু কর্মকর্তা। আমরা এসকল ন্যাক্কারজনক ঘটনার জন্য তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। একটি স্বাধীন দেশে এমন নজিরবিহীন মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা জাতির জন্য অত্যন্ত লজ্জাজনক।
এমন ভয়ানক অন্ধকার পরিস্থিতিতে সারাদেশে ছাত্র-জনতার উপর গণহত্যা, গণপ্রেপ্তার, হামলা-মামলা, গুম-খুন ও শিক্ষকদের উপর ন্যাক্কারজনক হামলার প্রতিবাদে, জাতিসংঘ কর্তৃক তদন্তপূর্বক বিচারের দাবিতে এবং ছাত্র সমাজের ৯ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে আগামীকাল (০১.০৮.২০২৪) রোজ বৃহস্পতিবার বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন “Remembering Our Heroes” কর্মসূচি ঘোষণা করছে।
কর্মসূচিতে পালণে করণীয় :
১। নির্যাতনের ভয়ংকর দিন-রাতগুলোর স্মৃতিচারণ;
২। শহীদ ও আহতদের নিয়ে পরিবার এবং সহপাঠীদের স্মৃতিচারণ
৩। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোনলে হওয়া নির্যাতনের ঘটনা নিয়ে চিত্রাংকন/গ্রাফিতি, দেওয়াল লিখন, ফেস্টুন তৈরী, ডিজিটাল পোট্রের্ট তৈরি প্রভৃতি।
শহীদদের স্মরণে উপরের যেকোনো কন্টেন্ট/লেখা লিখে নিম্নোক্ত হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করে অনলাইনে ও অফলাইনে প্রচার করা।
#JulyMassacre
#RememberingOurHeroes
শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবক, বুদ্ধিজীবী, পেশাজীবী, শ্রমজীবী, ব্যবসায়ীসহ সকল শ্রেণী পেশার মানুষের প্রতি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নতুন কর্মসূচী পালনে সর্বাত্মক অংশ্রহণের জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করছি।