রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:০৫ অপরাহ্ন

বিদেশে থাকা ৫ নেতার নির্দেশে দেশকে অস্থিতিশীল করার পরিকল্পনা আ’লীগের

বিডি ডেইলি অনলাইন ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : সোমবার, ১২ আগস্ট, ২০২৪
  • ২৭ বার

– অস্থিতিশীল করতে হাজার কোটি টাকার পরিকল্পনা
– হাতিয়ার বানাতে চায় সংখ্যালঘুদের
– সংখ্যালঘুদের বাড়ি উপাসনালয়ে হামলার নির্দেশ

রাজধানীসহ সারা দেশ উত্তপ্ত করতে সদ্য ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের পাঁচ নেতার তত্ত্বাবধানে হাজার কোটি টাকার প্রজেক্ট নিয়েছে দলটি। প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্ব পাওয়া পাঁচ নেতা হলেন সজীব ওয়াজেদ জয়, সালমান এফ রহমান, হাসান মাহমুদ, বাহাউদ্দীন নাসিম ও মাহবুবুল আলম হানিফ। আওয়ামী লীগের এ পরিকল্পনার অংশ হিসেবে প্রধান টার্গেট করা হয়েছে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে।

গোপনীয়তা রক্ষা করে ছদ্ম পরিচয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের উপধর্মবিষয়ক সম্পাদক আমীর হামজার সাথে কথা বলে জানা যায়, সারা দেশে সংখ্যালঘুদের বাড়িঘরে গোপনীয়তা রক্ষা করে হামলার নির্দেশ আছে বিদেশে পলাতক নেতাদের কাছ থেকে। আশ্বাসও আসছে বড় পুরস্কারের।

ছাত্রলীগের ওই নেতা আরো জানান, আওয়ামী লীগ যেহেতু এখন মাঠে নামার কোনো ইস্যু ও সাহস পাচ্ছে না সেহেতু সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা চালিয়ে ইস্যু তৈরি করার চেষ্টা চলছে। এজন্য ব্যবহার করা হচ্ছে পদ-পদবি বিহীন ছাত্রলীগ ও যুবলীগের তরুণ কর্মীদের। পুরাতন বিভিন্ন সময়ের বড় সমাগমের সাথে আওয়ামী লীগের স্লোগানজুড়ে দিয়ে চালানো হচ্ছে ভার্চুয়াল গুজব। এর জন্য খরচ করা হচ্ছে মোটা অঙ্কের অর্থ।

আমীর হামজার কাছ থেকে আরো জানা যায়, সংখ্যালঘুদের বাড়িঘরে হামলার পরিকল্পনা সফল হলে আওয়ামীপন্থী বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন ও সুশীল সমাজের লোকদের দিয়ে সংখ্যালঘুদের রক্ষার ইস্যু দিয়ে মাঠে নামানো হবে। সেখানে আস্তে আস্তে যোগ দিবে পরিচয়হীন আওয়ামী লীগের কর্মী-সমর্থকরা। সমাগম কন্টিনিউ করতে পারলে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে আস্তে আস্তে সারা দেশে নেতাকর্মীদের মাঠে নামানোর পরিকল্পনা রয়েছে দলটির।

রাজধানীর কাঁটাবন এলাকায় ভিন্ন পরিচয়ে স্বেচ্ছাসেবক লীগের আরেক নেতার কাছ থেকে জানা যায়, সংখ্যালঘুদের বৈষম্যবিরোধী ছাত্রসমাজ ও বিএনপি-জামায়াতের বিরুদ্ধে দাঁড় করাতে কাজ করছেন ছাত্রলীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও যুবলীগের প্রচার সম্পাদক জয়দেব নন্দী। এ কাজের জন্য সংখ্যালঘু ও সুশীল সমাজের কিছু ব্যক্তির কাছে টাকা পৌঁছে দিতে জয়দেব নন্দীকে অর্থ দিচ্ছেন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো: আব্দুর রাজ্জাক। আব্দুর রাজ্জাক ২০১২ সালে চট্টগ্রামের বহদ্দারহাটে নির্মাণাধীন ফ্লাইওভারের গার্ডার ধসে ১৩ জন নিহতের ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত। তথ্য দাতা এ নেতা আব্দুর রাজ্জাকের অনুসারী।

আওয়ামী লীগের এ পরিকল্পনার অংশ হিসেবে গত শুক্রবার ও শনিবার রাজধানীর শাহবাগে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার দাবিতে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের সহসভাপতি স্থপতি ইকবাল হাবিবের নেতৃত্বে একটি গ্রুপ শাহবাগে জড়ো হয়। একটি বিশ্বস্ত সূত্র বলছে, স্থপতি ইকবাল হাবিব আগামী ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে নির্ধারিত ছিলেন। এমনকি সারা দেশে সহিংসতা করতে যে হাজার কোটি টাকার পরিকল্পনা করা হয়েছে তার অর্ধেকটাই বরাদ্দ পেয়েছে বাপা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাপার এক কর্মকর্তা নয়া দিগন্তকে বলেন, চলমান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যখন গণহত্যা চলেছে তখন বাপা ও বাপার কোনো কর্মকর্তা এ বিষয়ে কথা বলেননি। অতীতেও কোনো গুম, খুন ও নির্যাতন নিয়ে বাপা কথা বলেনি। এটা বাপার কাজও না। এবারই প্রথম বাপাকে এসব নিয়ে কথা বলতে দেখা যাচ্ছে।

ওই কর্মকর্তা আরো জানান, মোটা অঙ্কের অর্থনৈতিক সুবিধা দিয়ে ইকবাল হাবিব এ কর্মকাণ্ডের বাপার অনেক কর্মকর্তাকে সম্পৃক্ত করেছেন।
বিশ্বস্ত একটি সূত্র নয়া দিগন্তকে জানায়, এনএসআই -এর সদ্য সাবেক ডিজি ডিএম যোবায়েরের তত্ত্বাবধানে ও তার ভায়রা দুবাই প্রবাসী ব্যবসায়ী আব্দুল কাইয়ুমের মাধ্যমে ঢাকার এসব সমন্বয়কারীদের কাছে বাজেটের এক তৃতীয় অংশ টাকা ইতিমধ্যে ঢাকায় পৌঁছানো হয়েছে। কিছু টাকা গত দু-তিন দিনের মধ্যেই সালমান এফ রহমানের এপিএস শফিকুল ইসলামের মাধ্যমে স্থপতি ইকবাল হাবিবের কাছে পৌঁছায় বলে সূত্রটি নিশ্চিত করেছে। এরই মধ্যে গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের দুই নেতার কাছে এ প্রকল্পের অর্থ পৌঁছে দিয়েছে যুবলীগের সাবেক চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ মিরপুর বিআরটিএর নিয়ন্ত্রক ও শেওড়াপাড়া আওয়ামী লীগ নেতা শামীম। ৬ আগস্টের পর থেকে গোপালগঞ্জে অবস্থান করছে শামীম। এ টাকার সংস্থান করেছে ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও গাইবান্ধা-৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মাহমুদ হাসান রিপন। এ ছাড়া উত্তরাঞ্চলে নেতাকর্মীদের মাঠে নামাতেও টাকার মজুদ পৌঁছে দেয়ার দায়িত্ব রয়েছে এ নেতার ওপর।

এদিকে রাজধানীর শাহবাগ চত্বরকে টার্গেট করে বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনকে মাঠে নামানোর চেষ্টা করছে দলটি। এসব সামাজিক সংগঠনকে জনবল দেয়ার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সাবেক সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাটের ওপর। সম্্রাট অর্থের বিনিময়ে রাজধানী ও আশপাশ এলাকা থেকে অপেক্ষাকৃত কম পরিচিত ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও আওয়ামী লীগের কর্মীদের এনে এসব কর্মসূচিতে দাঁড় করাচ্ছেন।

 

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com