চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে স্বামীর ছুরিকাঘাতে তানজিনা আক্তার রিতু (২০) নামে এক গৃহবধূ প্রাণ হারিয়েছেন। এই ঘটনায় নিহত গৃহবধূর মা এবং ভাই গুরুতর জখম হয়েছেন। বুধবার রাতে উপজেলা ফরিদগঞ্জ দক্ষিণ ইউনিয়নের গৃদকালিন্দিয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ঘাতক জামাই আল মামুন মোহনকে (২৮) গণধোলাই দিয়ে পুলিশের হাতে সোপর্দ করেছে এলাকাবাসী।
নিহত গৃহবধূ তানজিলা আক্তার রিতু গৃদকালিন্দিয়া হাজেরা হাসমত কলেজের ২০২০ সালের এইচএসসি পরীক্ষার্থী ছিলেন।
স্বজন ও পুলিশ জানিয়েছে, বুধবার বিকেলে লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার শায়েস্তানগরের বাড়ি থেকে স্বামী আল মামুন মোহন শ্বশুরবাড়িতে যান। ইফতারের পর পারিবারিক বিষয় নিয়ে স্ত্রী তানজিলা আক্তার রিতুর সাথে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে উত্তেজিত হয়ে মোহন স্ত্রী রিতুকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করতে থাকে। এ সময় শ্বাশুড়ি পারভিন আক্তার (৪০) এবং শ্যালক প্রান্ত (১০) এগিয়ে আসেন। ক্ষিপ্ত মোহন তাদেরও ছুরিকাঘাত করে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাদের ফরিদগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে রিতু মারা যান এবং শ্বাশুড়ি পারভিন আক্তার ও শ্যালক প্রান্তকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ঘটনার পরপর এলাকাবাসী ঘাতক মোহনকে আটক করে গণধোলাই দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে। সংবাদ পেয়ে ফরিদগঞ্জ থানার ওসি আবদুর রকিব ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ সময় তার সাথে থাকা উপপরিদর্শক কাজী জাকারিয়া নিহতের লাশ উদ্ধার করেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার শায়েস্তানগর গ্রামের মমতাজ উদ্দিন মাস্টারের ছেলে আল মামুন মানিক গত তিন বছর আগে ফরিদগঞ্জ উপজেলার গৃদকালিন্দিয়া এলাকার সেলিম খানের মেয়েকে বিয়ে করেন। পরে মোহন সৌদি আরব চলে যান। সেখানে দেড় বছর বেকার থেকে গত কয়েক মাস আগে দেশে ফিরেন। নিহত রিতুর বাবা সেলিম খান নিজেও সৌদি আরব থাকেন। সেখানে তিনি এখন করোনায় আক্রান্ত।
ফরিদগঞ্জ থানার ওসি আবদুর রকিব জানান, মূলত স্বামী এবং স্ত্রী পরস্পরকে সন্দেহের চোখে দেখতো। এই নিয়ে তাদের মধ্যে প্রায়ই কলহ লেগে ছিল। সে কারণে বুধবার রাতে কথা কাটাকাটির জের ধরে এই হত্যাকাণ্ড ঘটে। এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে।