খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগে আবারো ভারী বর্ষণের পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, ভারী বর্ষণ এবং ভারত থেকে নেমে আসা প্রবল পানির স্রোতের কারণে ফেনী, কুমিল্লা ও চট্টগ্রামের অনেক স্থানে ভয়াবহ বন্যার সৃষ্টি হয়। ওই বন্যার দুর্ভোগ এখনো কমেনি।
জলবায়ু বিশেষজ্ঞ মোস্তফা কামাল পলাশ তার আবহাওয়া ওয়েবসাইটে এই পূর্বাভাস দিয়ে বলেছেন, খুলনা ও বরিশাল বিভাগে ঘূর্ণ্যমান মেঘের সৃষ্টি হয়েছে। নতুন করে সৃষ্ট এই মেঘ আবারো মৌসুমি লঘুচাপে পরিণত হতে পারে। এই লঘুচাপ আগামী বুধবার পর্যন্ত খুলনা, বরিশাল এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও উড়িশা রাজ্যের উপকূলে সক্রিয় থেকে খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম, ঢাকা বিভাগের জেলাগুলো এবং পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলোর ওপর প্রবল বৃষ্টিপাত ঘটাতে পারে।
পলাশ জানান, আজ সোমবার প্রায় সারা দিন বরিশাল, খুলনা, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের বেশিভাগ জেলার ওপরে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টি হতে পারে। আজ রাজশাহী, ঢাকা ময়মনসিংহ ও রংপুর বিভাগের বিভিন্ন জেলায় বৃষ্টি হতে পারে। তবে নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর জেলায় বৃষ্টি হতে পারে বেশি। এছাড়া বরিশাল ও খুলনা বিভাগের অনেক জেলায় বন্যা শুরু হতে পারে।
রোববার রাতে পলাশ তার ফেসবুকে এক পোস্টে জানিয়েছিলেন, খুব ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে খুলনা বিভাগের যশোর, চুয়াডাঙ্গা, ঝিনাইদহ, মাগুরা জেলা এবং সাতক্ষীরা ও খুলনা জেলার উত্তর দিকের উপজেলাগুলোতে। এই বৃষ্টি ভোর ৫টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকার প্রবল আশঙ্কা করা যাচ্ছে। ভোর ৪টার পর থেকে সকাল ৮টার মধ্যে সাতক্ষীরা, খুলনা ও বাগেরহাট জেলার উপরে দিয়ে হালকা থেকে মাঝারি মানের বৃষ্টিপাত অতিক্রমের সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে।
বন্যাদুর্গতের কষ্ট লাঘবে সকলকে একযোগে কাজ করার আহ্বান ড. ইউনূসের
দেশের বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলা ও পরবর্তী কার্যক্রমবিষয়ক জাতীয় টাস্কফোর্স সভা আজ প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে তার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সভায় প্রধান উপদেষ্টা বন্যায় পানিবন্দী মানুষকে উদ্ধার এবং জরুরী চিকিৎসাসহ প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদানে সংশ্লিষ্ট সকলকে জোর প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান।
ড. ইউনূস দেশের এই সঙ্কটকালে সকলকে ঐক্যবদ্ধ থেকে বানভাসী মানুষের দুর্দশা ও কষ্ট লাঘবে বিভিন্ন নির্দেশনা প্রদান করেন। এসময় উদ্ধার ও তাৎক্ষনিক ত্রাণকার্য পরিচালনার ব্যয়ভার মেটানোর জন্য তিনি ২০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়ার কথা উল্লেখ করেন। বরাদ্দকৃত টাকা ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের উদ্ধার ও ত্রাণকার্যে সুষ্ঠু ও যথাযথভাবে ব্যবহার করার নির্দেশ দেন প্রধান উপদেষ্টা। এছাড়া তিনি শিশু খাদ্য, পানি শোধক ট্যাবলেট, খাবার স্যালাইনসহ জরুরি দ্রব্যাদি ক্রয়ের পরামর্শ দেন।
বন্যা উপদ্রুত এলাকায় সম্প্রতি বিচ্ছিন্ন টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা দ্রুত চালু করতে নির্দেশ দেন প্রধান উপদেষ্টা। ইতোমধ্যে ২১ টি টাওয়ার চালু করা হয়েছে। পানি কমতে শুরু করায় বন্যাজনিত ক্ষয়ক্ষতি আরও পরিস্কার হতে শুরু করবে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার মানুষের কষ্ট লাঘবে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।