বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৩৩ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
ভারত থেকে চিন্ময়ের মুক্তি দাবি কিসের আলামত, প্রশ্ন রিজভীর আইনজীবী হত্যার ভিডিও ফুটেজ দেখে গ্রেফতার ৬ : প্রেস উইং চিন্ময় ইস্যুতে ভারতের বিবৃতি দেয়া অনধিকার চর্চা : উপদেষ্টা নাহিদ রয়টার্সের মনগড়া সংবাদের প্রতিবাদ জানালো সিএমপি হাইকোর্টের নজরে ইসকন-চট্টগ্রামের ঘটনা : আদালতকে পদক্ষেপ জানাবে সরকার ইসকন ইস্যুতে দেশি-বিদেশি ইন্ধন থাকতে পারে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা চট্টগ্রামে আইনজীবী হত্যা, যে নির্দেশ দিলেন প্রধান উপদেষ্টা স্বৈরাচার পালিয়ে গেলেও তাদের লেজ রেখে গেছে : তারেক রহমান আইনজীবীকে ‘কুপিয়ে হত্যা করল’ ইসকন সদস্যরা অনির্দিষ্টকালের জন্য সেন্ট গ্রেগরি হাইস্কুল বন্ধ ঘোষণা

যে পদ্ধতিতে শেখ হাসিনা ও তার পরিবারকে ৬০ কাঠার প্লট দেয় রাজউক

বিডি ডেইলি অনলাইন ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : বুধবার, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
  • ২২ বার

পরিকল্পিত শহর গড়তে পূর্বাচলকে বেছে নেয় রাজউক। আবেদনকারীদের মধ্যে লটারি করে প্লট বরাদ্দ দেয় সংস্থাটি। তবে সবার জন্যই একই পদ্ধতি নয়। সরকারি সিদ্ধান্তে বিশিষ্ট ব্যক্তিদের নামে প্লট বরাদ্দ দিতে আইনে একটি ধারা যোগ করা হয়। এই ধারা ব্যবহার করে নানা সময়ে যাকে-তাকে দেওয়া হয়েছে পূর্বাচলের প্লট। এমনকি এই তালিকায় ছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের ৫ সদস্যও। প্রত্যেকের নামে বরাদ্দ দেওয়া হয় দশ কাঠা করে মোট ছয়টি প্লট।

রাজউকের তৃতীয় মডিফেকেশন ম্যাপে সামাজিক অবকাঠামোর জন্য জায়গাটি বরাদ্দ ছিল। তবে ২০১২ সালে চতুর্থ মডিফিকেশনে সেখানে প্লট তৈরি করা হয়। বালু নদীর পাড়ে পূর্বাচল প্রকল্পের ডিপ্লোমেটিক জোনের ২৭ নম্বর সেক্টরে ২০৩ নম্বর রোডের একটি প্লট শেখ হাসিনাকে বরাদ্দ দেওয়া হয়। পাশেই শেখ রেহানার ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববির প্লট। পরের প্লটটি নেন শেখ রেহানা। পরের দু’টি প্লট শেখ হাসিনার দুই সন্তান সজীব ওয়াজেদ জয় ও সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের। সবশেষ প্লটটি বরাদ্দ দেওয়া হয় শেখ রেহানার মেয়ে আজমিনা সিদ্দিকের নামে।

কাঠা প্রতি ৩ লাখ টাকা হিসেবে প্রতিটি প্লটের মূল্য নির্ধারণ করা হয় মাত্র ৩০ লাখ টাকা। ৬০ কাঠার মোট মূল্য এক কোটি ৮০ লাখ টাকা পরিশোধ করেন শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যরা। বরাদ্দ দেওয়ার পরপরই প্রাচীর দিয়ে পুরো ৬০ কাঠা প্লটের চারপাশ ঘিরে ফেলা হয়। এসবের নিরাপত্তায় নিয়োজিত ছিল আনসার সদস্যরা। সরকার পতনের পর নিরাপত্তা উঠে গেলে উত্তেজিত জনতা প্রাচীরের মূল ফটক ভেঙে ফেলেন।

২০২২ সালের ৩ আগস্ট প্লটগুলোর বরাদ্দপত্র ইস্যু করে রাজউক। সেই সময় সংস্থাটির চেয়ারম্যান ছিলেন আনিসুর রহমান। পুরো প্রক্রিয়াটি সরকারের আদেশে হয়েছে বলে দাবি তার। তিনি বলেন, ‘সরকারের চিঠি অনুযায়ী রাজউক কাজ করেছে।’ এ বিষয়ে মৌখিকভাবে কোনো আদেশ দেওয়া হয়নি বলেও জানান তিনি।

এ বিষয়ে পূর্বাচলের প্রকল্প পরিচালক নুরুল ইসলাম গণমাধ্যমকে জানান, মাস্টারপ্ল্যান না মেনে প্লট করা হয়েছে। বিগত সরকারকে সুবিধা দিতেই এসব করা হয়েছে। এতে সবার যোগসাজশ ছিল বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

নগর পরিকল্পনাবিদ প্রফেসর আদিলুর রহমান জানান, ডিপ্লোম্যাটিক জোনে শেখ পরিবারের জন্য প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ম্যাপ দেখে বোঝা যায় এটি একটি সবুজ এলাকা ছিল। এটিকে নষ্ট করে এই প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে কিনা তদন্ত করে দেখা দরকার। ব্যক্তিবিশেষের জন্য নগরায়ণের পরিকল্পনা পরিবর্তন সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

মূলত, রাজউকের ১৩/এ ধারায় পূর্বাচলে নানা সময়ে বিভিন্ন জনকে প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়। এই ধারাটিরই যথেচ্ছ ব্যবহার করে রাজউক। ক্ষমতার অপব্যবহার করে এভাবে প্লট বরাদ্দ বন্ধ হওয়া উচিৎ বলে মনে করে টিআইবি।

টিআইবির পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান জানান, আমরা এই পুরো প্রকল্প বাতিল করার দাবি জানাই। এ সময় রাজউকের ১৩/এ ধারা বাতিলেরও দাবি জানান তিনি।

রাজউক জানায়, ২০১৮ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে ২৮৫ জনকে প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়। এরমধ্যে ১৪৯টিই বরাদ্দ পান তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের এমপি, দলীয় নেতাকর্মী ও উচ্চ পর্যায়ের আমলারা। গতকাল মঙ্গলবার পূর্বাচলে শেখ হাসিনা পরিবারের নামে বরাদ্দ ৬০ কাঠা জমির বরাদ্দ বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে রিটও করা হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com