পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জীকে সামাজিকভাবে বয়কটের ঘোষণা দিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাজভবন থেকে এক ভিডিও বার্তায় এমন ঘোষণা দেন রাজ্যপাল।
আরজি করে কর্মরত অবস্থায় এক নারী চিকিৎসকে ধর্ষণের পর খুনের ঘটনার মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জীর নাম না করে লেডি ম্যাকবেথ বলে কটাক্ষ করেছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস।
কলকাতার রাজভবন থেকে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস বলেন, ‘রাজ্যে যা ঘটনা ঘটছে তাতে আমি রাজ্যপাল হয়ে মুখ ফিরিয়ে থাকতে পারি না। বাংলার সমাজের পাশে দাঁড়িয়ে আমি স্থির করেছি, আমি মুখ্যমন্ত্রীকে সামাজিকভাবে বয়কট করবো। আমি মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কোনো সরকারি মঞ্চে থাকবো না। কোনো সরকারি অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী যুক্ত থাকলে সেখানে আমি থাকবো না।’
এদিকে জনসম্মুখে করজোরে ক্ষমা চেয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। এমনকি জনস্বার্থে পদত্যাগেও রাজি তিনি। জানিয়েছেন, তার ক্ষমতার প্রয়োজন নেই।
আর জি করে নারী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় বৃহস্পতিবার, এক ভিডিওবার্তায় দেশ ও বিশ্ববাসীর কাছে ক্ষমা চান এই নেত্রী।
কার্যত হতাশা প্রকাশ করে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ওরা বিচার চায় না, ওরা চেয়ার চায়। আমি মানুষের স্বার্থে পদত্যাগ করতেও রাজি। মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ার আমার চাই না। কিন্তু তিলোত্তমা বিচার পাক।’
মমতা ব্যানার্জি বলেন, যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তার জন্য তিনি কলকাতার বাসিন্দাদের কাছে তো বটেই, বিশ্বজুড়ে তাদের সমর্থকদের কাছেও ক্ষমাপ্রার্থী। সবাইকে চিকিৎসকদের প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখতে বলেন তিনি। আর চিকিৎসকদের অনুরোধ করেন সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী কাজে ফিরে যেতে।
তবে দাবি মেনে না নেওয়া পর্যন্ত প্রতিবাদ-বিক্ষোভ চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমাকে অনেক অসম্মান করা হয়েছে। আমাদের সরকারকে অনেক অসম্মান করা হচ্ছে। সোশাল মিডিয়ায় অনেক কুৎসা, অপপ্রচার হয়েছে। মানুষ তিলোত্তমার বিচার চাইতে এসেছে। আশা করি মানুষ বুঝতে পারছেন ওরা বিচার চায় না। ওরা চায় চেয়ার। আমি মানুষের স্বার্থে পদত্যাগ করতে রাজি আছি। আমার মুখ্যমন্ত্রীর পদ চাই না। আমি চাই তিলোত্তমা বিচার পাক। সাধারণ মানুষ চিকিৎসা পাক।’
মমতার সঙ্গে বৈঠক করতে চিকিৎসকদের একটি দল সচিবালয়ের গেইট পর্যন্ত এসেছিল। তাদের সঙ্গে মমতার বিকাল ৫টায় বসার কথা ছিল। চিকিৎসকরা শেষ পর্যন্ত বৈঠক করেননি কারণ তারা বৈঠকের সরাসরি সম্প্রচারের যে দাবি জানিয়েছিলেন সেটি মানেনি রাজ্য সরকার।
মুখ্যমন্ত্রী মমতার দাবি, চিকিৎসকরা বাইরের শক্তির নির্দেশে চলছে। এ কারণে শেষ পর্যন্ত তারা তার সঙ্গে বৈঠক করেনি। তিনি বলেছেন, ‘আমি জানি প্রতিনিধি দলে অনেকেই আলোচনা করতে চেয়েছিল। কিন্তু দুই-তিনজন বাইরে থেকে নির্দেশনা দিচ্ছে। আমাদের কাছে সব (তথ্য) আছে। আমরা এটি দেখতে পাচ্ছি কারণ সংবাদপত্রে এগুলোর রেকর্ড আছে। তারা নির্দেশনা দিচ্ছে আলোচনা করো না, বৈঠকে যেও না।’