মঙ্গলবার, ০৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৪:৪৫ অপরাহ্ন

পারাপার বন্ধ, ফেরিতেই রাত কাটাবে ১০ হাজার যাত্রী

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ১৯ মে, ২০২০
  • ২১৯ বার

দুপুর সাড়ে ১২টা। এখানো ১০ হাজারের উপরে সাধারণ যাত্রী মাওয়া ঘাটে অবস্থান করছেন। সব ফেরি বন্ধ ঘোষণার পরও জনস্রোত বন্ধ হচ্ছে না। শিমুলিয়া ঘাটে হাজারো মানুষ ফেরিতে অপেক্ষা করছে। ফেরি না ছাড়লে তারা রাতে সেখানেই অবস্থান করবে বলে জানিয়েছে।

এর আগে রাত ১টার দিকে ফেরি ছাড়ার অপেক্ষায় দু’টি ফেরিতে তারা গাদাগাদি করে অপেক্ষা করছিল।

সোমবার বিকেল ৩টায় বন্ধ করে দেয়া হয় শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি রুটের ফেরি সার্ভিস। তখনও ঘাটে পণ্যবাহী দুই শ’ ট্রাক এবং ৫০টির মত প্রাইভেটকার ছিল।

মঙ্গলবার বেলা ১২টা পর্যন্ত লাইনে এখনো দেড় শ’ পণ্যবাহী ট্রাক অসংখ্য প্রাইভেটকার অপেক্ষমান। গভীর রাতে সীমিত আকারে তিন ঘণ্টায় ছয়টি ফেরি দিয়ে পণ্যবাহী ট্রাক ও অসংখ্য প্রাইভেটকার ও সাধারণ দিনমজুরদের পার করে দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। জনদুর্ভোগ যাতে না হয় সে জন্যই মানবিক দিক বিবেচনা করে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়েই দুর্ভোগে আটকে পরা জনসাধারণদের পারাপারের ব্যবস্থা করা হয়।

মুন্সীগঞ্জের বিভিন্ন প্রবেশ পথে চেক পোস্ট বসানো হলেও গাড়ি না আসলেও ভেঙে ভেঙে মানুষ আসা থামেনি। বহু মানুষ জড় হতে থাকে। এরই মধ্যে কাঁঠালবাড়ি থেকে একটি রোরো ফেরি শিমুলিয়া ঘাটে নোঙ্গর করে। তখনই হুমড়ি খেয়ে পড়ে অপেক্ষারত লোকজন।

 

পদ্মা পাড়ি দিতে ফেরি ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। ট্রলার, লঞ্চ এবং স্পীটবোট সবই বন্ধ। এরই মধ্যে আরো লোকজন ঘাটে এসে ভিড় করে। রাত ৯টার দিকে শিমুলিয়ার আরেক ঘাটে মাঝারি আকারের ফেরি ক্যামেলিয়া নোঙ্গর করে। সেখানেও অর্ধ সহস্রাধিক মানুষ উঠে যায়। এখন দুটি ফেরিই লোকে লোকারণ্য। কিন্তু ফেরি ছাড়ছে না। বিআইডব্লিউটিসির দায়িত্বশীলদেরও ফোন বন্ধ। অনিশ্চিত অপেক্ষায় গাদাগাদি করে বহু নারী-পুরুষ-শিশু বসে আছে ফেরিতে। মরণব্যাধি করোনা ঝুঁকি থাকা সত্তেও ঘরমুখো এই মানুষগুলো অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। তারা বলছেন, ফেরি না ছাড়লে তারা এখানেই রাত কাটাবেন।

এদিকে দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানিয়েছে, আটকে পড়া যানগুলো গভীর রাতে পার করে দেয়া হয়েছে। আর এর সাথে যেসব লোকজন আছে তারাও পার হয়ে গেছেন। তবে আর কোনো ফেরি চলবে না। পারাপারের সুযোগও আপততঃ থাকছে না। জনস্বার্থেই এটি করতে হচ্ছে।

এদিকে ফেরিঘাটে যাত্রীবাহী যান চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতেই ফেরিতে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয় হয়। ঈদকে সামনে রেখে ঘরমুখো মানুষের ভিড় সামলাতে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

মাওয়া ট্রাফিক পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (আইসি) হেলাল উদ্দিন জানান, ফেরি ছাড়ার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। কিন্তু ফেরিতে বসে থাকা লোকজন বলছেন, আমরা ফেরি বন্ধ না জেনেই এসে আটকে গেছি। ঢাকায়ও ফিরে যেতে পারছি না। তাই রোজার মধ্যে আমাদের এই কষ্ট বোঝাতে পারবো না।

বিআইডব্লিউটিসির সহকারী ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) সাফায়েত আহম্মেদ জানান, রাত ২টার পরে সীমিত আকারে তিন ঘণ্টার জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ছয়টি ফেরি চলাচল করেছে, তখন যাত্রী যা ছিল পার হয়ে গেছে। এখনো ১০ হাজারের বেশি যাত্রী পারাপারের অপেক্ষায়। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় প্রশাসনের অনুমতি পেলে ফেরি ছাড়া হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com