উপকূলে ঘূর্ণিঝড় আমফানের প্রভাবে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসের পানিতে বিভিন্ন স্থানে বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে অর্ধশত গ্রাম ও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। ফলে এসব এলাকার ঘরবাড়ি ডুবে গেছে, হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে গেছে। এছাড়াও এ নদীর পানিতে ভেসে গেছে মাছের ঘের। তলিয়ে গেছে মুগডাল, চিনা বাদাম এবং ভুট্টাসহ সবজির ক্ষেতও।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সদর উপজেলার আয়লা-পাতাকাটা, বুড়িরচর, ছোট লবণগোলা এলাকার বিভিন্ন স্থানে বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে এলাকার নিম্নাঞ্চলে নদীর পানি প্রবেশ করেছে, এছাড়াও জেলার পাথরঘাটা উপজেলার গাব্বাড়িয়া, পদ্মা, খলিফার হাট, মাছের খাল, কালমেঘা, কাঁঠালতলীসহ বামনা, বেতাগী, তালতলী ও আমতলীতে বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে নদীর পানি প্রবেশ করে প্লাবিত হয়েছে।
সদর উপজেলার নলটোনা ইউনিয়নের ইউপি সদস্য সোহেল রানা বলেন, এই ইউনিয়নের কুমিরমারা এলাকায় বেশকিছু ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত ও আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
পাথরঘাটা উপজেলার বলেশ্বর নদীর তীরবর্তী কাঁঠালতলী ইউনিয়নের ইউপি সদস্য মনোরঞ্জন খরাতী বলেন, এই ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে দুটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এছাড়াও দুই গ্রামের কমপক্ষে দুই শ’ একর জমির মুগডাল পানি নিমজ্জিত হয়ে নষ্ট হয়েছে।
এ বিষয়ে জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৗশলী কাওছার আহমেদ বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে রাতে বরগুনায় সাড়ে ১১ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হয়েছে। এতে জেলার বিভিন্ন স্থানে কমপক্ষে ১৫টি পয়েন্টে বেড়িবাঁধ ভেঙে নদীর পানিতে এলাকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। তবে প্লাবিত এলাকা থেকে ইতোমধ্যেই পানি নেমে গেছে। আমরা ভেঙে যাওয়া বাঁধ দ্রুত মেরামত করার জন্য কাজ শুরু করেছি।
এদিকে বরগুনা জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মোঃ মনিরুজ্জামান বলেন, সদর উপজেলার একটি মুরগি খামারের আট শ’ মুরগি জলোচ্ছ্বাসের কারণে মারা গেছে। এতে এক লাখ ২৬ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে। এছাড়াও তালতলী উপজেলার একটি গাভীর খামারে ক্ষতি হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বরগুনায় ক্ষয়-ক্ষতি তালিকা চলমান রয়েছে।
এ বিষয়ে বরগুনার জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ বলেন, আমরা আগে থেকেই সতর্ক ও যথাযথ প্রস্তুতি গ্রহণ করায় এ জেলায় তেমন কোনো ক্ষতি হয়নি। তারপরও আমরা জেলার ক্ষতির তালিকা তৈরির কাজ শুরু করেছি।