আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনের সংশোধনীতে কোনো রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করেত সুপারিশ করার বিধান থাকছে না বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল। আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন।
আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘আজ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনের সংশোধনী উপদেষ্টা পরিষদের সভায় উত্থাপন করা হয়েছিল, এটা গৃহীত হয়েছে। তবে উপদেষ্টা পরিষদ মনে করেছে, আমরা যে সংশোধনী করেছিলাম সেখানে মানবতাবিরোধী অপরাধে সংগঠনকে শাস্তি দেওয়ার বিধান ছিল। আমাদের প্রস্তাবিত সংশোধনীতে বলা হয়েছিল, কোনো সংগঠনকে যদি শাস্তি দেওয়া দরকার মনে করলে তাহলে ট্রাইব্যুনাল শাস্তি দেওয়ার সুপারিশ করতে পারবে উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের কাছে।’
তিনি বলেন, ‘আজকের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে বলা হয়েছে, আমরা এ বিচারকে অন্য কোনো বিষয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত করতে চাই না। রাজনৈতিক দল বা কোনো সংগঠনকে নিষিদ্ধ করার প্রশ্ন এলে এই আইনকে অযথাই প্রশ্নবিদ্ধ করার সুযোগ সৃষ্টি হবে। আমরা সেই সুযোগ দিতে চাই না। আমরা একদম ডিসেন্ট ওয়েতে, ফেয়ার ওয়েতে বিচারটা করতে চাই। এ জন্য এ প্রবিশনটা বাতিল করা হয়েছে।’
আসিফ নজরুল বলেন, ‘আমরা অনুভব করেছি, কোনো রাজনৈতিক দল বা অন্য কোনো সংগঠন তাদের অপরাধমূলক কার্যক্রমের জন্য নিষিদ্ধের করার প্রয়োজন হয় বা দাবি ওঠে সমাজে, তাহলে আমাদের অন্যান্য আইন রয়েছে, সে সব আইনে নিষিদ্ধ করার বিধান রয়েছে। সন্ত্রাস দমন আইন রয়েছে, নির্বাচনী আইনে রয়েছে, কাজেই এখানে এ বিধান নেই দেখে আমাদের সেই সুযোগ আর থাকল না, সেটা না। যুদ্ধাপরাধ বিচার আইনে থাকল না, তবে অন্যান্য আইনে রয়েছে। সেটা আমরা রাজনৈতিক ঐকমত্য হলে, জনদাবি এলে পরে বিবেচনা করা হবে।’
গতকাল মঙ্গলবার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে আইন উপদেষ্টা বলেছিলেন, ‘আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন সংশোধন করে রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ তৈরি করতে যাচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার। এ জন্য আগামীকাল বুধবার (আজ) উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল অধ্যাদেশের খসড়া অনুমোদনের জন্য উত্থাপন করা হবে।’
ব্রিফিংয়ে স্থানীয় সরকার এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ, উপদেষ্টা মাহফুজ আলম ও প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম উপস্থিত ছিলেন।