বুধবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৪, ০৩:২১ অপরাহ্ন

সুন্দর ও অর্থবোধক নাম রাখা ইসলামের নির্দেশনা….

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : শুক্রবার, ২৫ অক্টোবর, ২০১৯
  • ৩৪৯ বার

পৃথিবীতে সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর তাকে সম্বোধন করে ডাকার জন্য যে পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়; তাই ইসম বা নাম। অন্যভাবেও বলা যায়, কোনো মানুষকে অপরাপর মানুষ থেকে পার্থক্য করার জন্য যে বিশেষ শব্দের মাধ্যমে ডাকা হয়; তাই নাম। আর এ নাম রাখার ব্যাপারে ইসলামে অত্যধিক গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। প্রতিটি মানুষের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িয়ে রয়েছে তার নাম, উপনাম কিংবা উপাধি। হাদিসে নাম রাখার ব্যাপারে রাসুল (সা.) শিশুর জন্মের সপ্তম দিন নবজাতকের উত্তম ও সুন্দর অর্থবোধক নাম রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। (তিরমিজি)। সুন্দর নাম রাখার তাগিদ দিয়ে রাসুল (সা.) এরশাদ করেছেনÑ‘কেয়ামতের দিন তোমাদের নিজ নাম ও পিতার নামে ডাকা হবে। সুতরাং তোমরা সুন্দর নাম রাখো।’ (আবু দাউদ)।
ইসলামে নামের গুরুত্ব সম্পর্কে নিম্নোক্ত বিষয়গুলো প্রণিধানযোগ্য। যেমন:Ñ
১. আল্লাহর নির্দেশ: নাম রাখার গুরুত্ব সম্পর্কেও ইসলামে রয়েছে সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেনÑ‘হে জাকারিয়া, আমি (আল্লাহ) তোমাকে একপুত্রের সুসংবাদ দিচ্ছি। তার নাম হবে ইয়াহইয়া। এ নামে এর আগে আমি কারও নামকরণ করিনি।’ (সূরা মরিয়ম : ৭)।
২. সুন্দর ও অর্থবোধক নাম রাখা: সুন্দর ও অর্থবহ নাম রাখার ব্যাপারে রাসুল (সা.) গুরুত্বারোপ করেছেন। সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর সুন্দর ও অর্থবোধক নাম রাখা মা-বাবা ও অভিভাবকের ওপর অপরিহার্য কর্তব্য। আল্লাহ তায়ালার গুণবাচক নামের সঙ্গে সংযুক্ত করে এবং তাঁর প্রিয় বান্দাদের নামে নামকরণ করা উত্তম।
৩. ইসলামের বিধান: নাম রাখা ইসলামের অন্যতম বিধান। তবে কাফের-মোশরেক এবং কুখ্যাত পাপীদের নামানুসারে নাম রাখা হারাম। যেসব সাহাবির কুৎসিত ও আপত্তিকর নাম ছিল, রাসুল (সা.) তা পরিবর্তন করে ফের সুন্দর ও যথার্থ অর্থবোধক নাম রেখে দিয়েছিলেন।
৪. নবীদের নামে নাম রাখার প্রতি উৎসাহ: রাসুল (সা.) এর উপাধি ও উপনাম সর্বব্যাপারে পরিব্যাপ্ত ছিল। কেননা সবধরনের নামই ব্যক্তি বা বস্তুর ওপরে এমনকি চরিত্রের ওপরও ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করে। শব্দের প্রভাব রয়েছে বলেই গালাগাল বা কটুশব্দ অপরকে উত্তেজিত করে থাকে।
৫. পরিচয়ের মাধ্যম: নাম মানুষের পরিচয়ের মাধ্যম। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয় হলো, বর্তমান মুসলিম সমাজ ইসলামের দৃষ্টিতে নাম রাখার এ মহান গুরুত্ব পরিহার করে দিন দিন উদাসিনীতার দিকে ছুটছে। ইহুদি, খ্রিষ্টান, হিন্দু ও বৌদ্ধদের নামে মুসলমানরা নিজেদের সন্তান-সন্ততির নামকরণ করছে। নাম শুনে বোঝা যায় না, মানুষটি মুসলিম কি না। আবার অনেক সময় দেখা যায়, মূল নাম আরবি ও অত্যন্ত সুন্দর হলেও বাবা-মা তথা অভিভাবকরা ডাক নাম এমন শব্দের রেখেছেন, যা অনেক ক্ষেত্রে অর্থহীন এবং বিজাতীয় সংস্কৃতির অনুসরণ প্রমাণ করছে। যেমনÑজর্জ, মাইকেল, জ্যাকার, ডলি, মলি, রতন, বিদ্যুৎ, বিউটি, বল্টু, মন্টু, নান্টু, পিন্টুব,রঞ্জন, রবি, শশী ইত্যাদি।
পরিশেষে বলতে চাই, নাম হলো একজন মানুষের পরিচয়ের অন্যতম মাধ্যম। সেজন্য সুন্দর ও অর্থবোধক নাম রাখা প্রত্যেক বাবা-মা কিংবা অভিভাবকদের ওপর দায়িত্ব এবং কর্তব্য।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com