ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে হাজার হাজার গরু চর্মরোগে আক্রান্ত হয়েছে। এরই মধ্যে এ চর্মরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে প্রায় অর্ধশত গরু। খামারি ও কৃষকদের অভিযোগ, উপজেলা প্রাণি সম্পদ কার্যালয় থেকে তেমন কোনো চিকিৎসা সেবা বা পরামর্শ পাচ্ছেন না তারা।
নারায়নপুর গ্রামের কৃষক কামাল হোসেন, হাসিবুর রহমান, বথপালিগাঁও এলাকার কামরুজ্জামান, সাইফুল ইসলাম, ভাকুড়া গ্রামের সাজ্জাদ হোসেন, নিয়ামতপুর গ্রামের জাহের আলী, আবির, রঘুনাথপুরের আসাদুজ্জামান, করনাইয়ের রফিকুল ইসলাম জানান, গরুর দেহের বিভিন্ন জায়গায় প্রথমে ফুলে উঠছে। কয়েকদিনের মধ্যেই তা সারা শরীরে ছেয়ে যাচ্ছে, গরু খাচ্ছে না। শরীরের অনেক জ্বর থাকছে। ওষুধ খাওয়ানোর পরও গরু মারা যাচ্ছে। প্রাণি সম্পদ অফিস থেকে কোনো প্রকার সহয়োগিতা বা চিকিৎসা সেবা পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ তাদের।
এই রোগের কারণে গত কয়েক সপ্তাহে হাজীপুর ইউনিয়নের পটুয়াপাড়া গ্রামে দুটি, সৈয়দপুর ইউনিয়নের নিয়ামতপুর গ্রামে একটি, সনগাঁও ইউনিয়নের বেলদহী গ্রামে দুটি, উপদইল গ্রামে একটি, বৈরচুনা গ্রামে দুটি, আজলাবাদ গ্রামে দুটি, জাবরহাট ইউনিয়নের রনশিয়া গ্রামে পাঁচটি, চন্দরিয়া গ্রামে তিনটি, হাটপাড়া গ্রামে দুটি, মাটিয়ানী গ্রামে দুটি, আমিরপাড়ায় একটি, সরকারপাড়ায় দুটি ও দৌলতপুর ইউনিয়নের সাগুনী গ্রামে একটিসহ উপজেলায় প্রায় অর্ধশত গরু মারা গেছে।
তবে এ অভিযোগ সঠিক নয় দাবি করে উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. অমল কুমার রায় বলেন, ‘লাম্পি স্কিন নামে এক ধরনের ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গরুর চর্মরোগ দেখা দিচ্ছে। এটি মশা ও মাছির কামড় থেকে ছড়ায়। এ রোগের এখন পর্যন্ত কোনো প্রতিষেধক বা টিকা বের হয়নি। আক্রান্ত হলে প্যারাসিটামল ও এন্টি হিসটামিন জাতীয় ওষুধ খাওয়ানোর পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। দপ্তরের হিসাব মতে উপজেলায় খামার এবং কৃষক পর্যায়ে গরুর সংখ্যা প্রায় ১ লাখ ৯০ হাজার। এর মধ্যে পাঁচ হাজারের মতো গরু আক্রন্ত হয়েছে।’ তবেন কোনো গরু মারা যাওয়ার খবর তার জানা নেই বলে জানান তিনি।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বথপালিগাঁও, নারায়পুর, ভাকুড়া, গণিরহাট, চন্ডিপুর, মালগাঁও, মহেশপুর, মোহাম্মদপুর, করনা, কৃষ্টপুর, চন্দরিয়া, বৈরচুনা, কলিযুগ, উপদইল, মল্লিকপুর, বনুয়াপাড়া, সাগুনী, সেনগাঁও, শাশোর খটশিংগা, বহড়া, পটুয়া পাড়াসহ উপজেলার আরও বেশ কয়েকটি গ্রামে ব্যাপক আকারে গরুর চর্মরোগ দেখা দিয়েছে।