লোকসানে থাকা রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলগুলোর প্রায় পঁচিশ হাজার স্থায়ী শ্রমিককে স্বেচ্ছা অবসরে (গোল্ডেন হ্যান্ডশেক) পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
গোল্ডেন হ্যান্ডশেকের পরিকল্পনার প্রতিবাদে সারা দেশের ২৬টি পাটকলের শ্রমিকদের আন্দোলনের ঘোষণার মধ্যেই বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী রোববার এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে আনুষ্ঠানিকভাবে বিষয়টি জানান।
পাটমন্ত্রী বলেন, ‘পাটকলগুলোতে লোকসান হচ্ছে, এজন্য সরকার চিন্তা করেছে শ্রমিকদের গোল্ডেন হ্যান্ডশেক দিয়ে এই খাতকে এগিয়ে নিতে।’
বস্ত্র ও পাট সচিব লোকমান হোসেন মিয়া বলেন, পাটকলগুলোতে ২৪ হাজার ৮৮৬ জন স্থায়ী কর্মচারী রয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন, গোল্ডেন হ্যান্ডশেকের মাধ্যমে শ্রমিকদের চাকরির অবসান করতে। পাটকল শ্রমিকদের গোল্ডেন হ্যান্ডশেক দেয়ার পর পিপিপির (সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব) আওতায় পাটকলগুলোর আধুনিকায়ন করে উৎপাদনমুখী করা হবে। তখন এসব শ্রমিক সেখানে চাকরি করার সুযোগ পাবেন।’
২০১৩ সাল থেকে এ পর্যন্ত ৮ হাজার ৯৫৪ জন পাটকল শ্রমিক অবসরে গেছেন জানিয়ে সচিব বলেন, ‘অর্থ সংকটে তাদের অবসর ভাতা দেওয়া এখনও সম্ভব হয়নি।’
প্রসঙ্গত, বর্তমানে বিজেএমসির আওতায় পাটকল রয়েছে ২৬টি। এর মধ্যে একটি (মনোয়ার জুট মিল) বন্ধ রয়েছে। পাটকলগুলোতে বর্তমানে স্থায়ী শ্রমিক আছেন ২৪ হাজার ৮৬৬ জন। এছাড়া তালিকাভুক্ত বদলি ও দৈনিকভিত্তিক শ্রমিকের সংখ্যা প্রায় ২৬ হাজার। বেসরকারি খাতের পাটকলগুলো লাভ করলেও নানা অব্যবস্থাপনা, অনিয়ম ও দুর্নীতিতে বছরের পর বছর লোকসান গুনছে সরকারি পাটকলগুলো।
লোকসানে থাকা পাটকলগুলোর অর্থায়নের বিষয়ে গত বছরের ১৪ মে সচিবালয়ে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছিলেন, ‘রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলগুলোকে গত ১০ বছরে ৭ হাজার কোটি টাকা দেয়া হয়েছে। পাটকলে আর কতদিন অর্থায়ন করব? গত ১০ বছরে তো আমরা ৭ হাজার কোটি টাকা দিয়েছি। এটা অনেক বড় টাকা।’