দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত মানুষের নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষা কমে যাওয়ায় বেশ কিছু দিন ধরেই নানা সমালোচনা চলছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে পরীক্ষাগার বাড়ানোর পরেও কেন করোনার নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষা কমে গেল তার ব্যাখ্যা দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
আজ সোমবার দুপুর আড়াইটায় মহাখালী থেকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত অনলাইন স্বাস্থ্য বুলেটিনে দেশে করোনা পরিস্থিতির সর্বশেষ তথ্য জানান স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা।
তিনি বলেন, ‘আমরা তথ্য বিশ্লেষণে দেখছি আমাদের নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষার সংখ্যা পূর্বের তুলনায় কিছুটা কমেছে। এর কারণ হিসেবে অনেকগুলো ব্যাখ্যা দেওয়া যায়। যেমন, রিকভারি বা সুস্থতার সংজ্ঞা অনুযায়ী, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নিয়মানুযায়ী এখন আর সুস্থতা ঘোষণা করার জন্য দ্বিতীয়বার পরীক্ষা করার দরকার হচ্ছে না। এ জন্য পরীক্ষার সংখ্যা কিছুটা কমেছে।’
করোনা পরীক্ষার ফি নির্ধারণও একটা কারণ হতে পারে জানিয়ে অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা বলেন, ‘স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক নির্ধারিত একটা ফি ধার্য করা হয়েছে পরীক্ষা করার জন্য। সে কারণেও কিছুটা কমতে পারে।’
‘তাছাড়াও মানুষের মধ্যে আতঙ্কটাও অনেকটাই কমে গেছে। মানুষ অনেকটা রিলাক্ট্যান্ট হয়েছে বলা যায়। বা পরীক্ষা করার বিষয়ে আগ্রহ কম দেখাচ্ছে’ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা বলেন, ‘আমাদের যেসব বুথের মাধ্যমে নমুনা সংগ্রহ করা হয়, যেখানে আগে ১১টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত নমুনা সংগ্রহের সময় ধার্য ছিল এবং ৩টার পর অনেকেই লাইনে দাঁড়িয়ে নমুনা দেওয়ার জন্য থাকতে। কিন্তু এখন ১টার পরই বুথগুলো শূন্য হয়ে যায়। নমুনা পরীক্ষা করার জন্য কেউ আসে না। নমুনা পরীক্ষা করার বিষয়ে মানুষের আগ্রহ অনেকটাই কমে গেছে। সে কারণে পরীক্ষাগারে নমুনা আসছে না এবং নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা কমে গেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সবাইকে বলবো যাদের নমুনা পরীক্ষা করার দরকার, তারা অবশ্যই যেখানে নমুনা সংগ্রহ হয় সেখানে যাবেন, নমুনা দেবেন এবং পরীক্ষা করাবেন। দরিদ্রদের জন্য এখনো নমুনা ফি সেই যেই প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে নির্ধারণ করা হয়েছিল সেখানে উল্লেখ আছে। কাজেই আপনারা এই সুবিধা অবশ্যই গ্রহণ করতে পারেন এবং যাদের দরকার অবশ্যই নমুনা দিয়ে পরীক্ষা করাবেন।’
করোনা প্রতিরোধে সবাই সচেতন থাকার আহ্বান জানিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) বলেন, ‘সবাই সচেতন থাকবেন যাতে এই রোগটাকে প্রতিরোধ করা যায়। রোগ প্রতিরোধের জন্য অবশ্যই সঠিকভাবে সকলেই মাস্ক ব্যবহার করবেন। বারবার সবান-পানি দিয়ে ২০ সেকেন্ড ধরে হাত ধোবেন। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখবেন এবং জনসমাগম এড়িয়ে চলবেন। নিজের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার, ফলমূল, টাটকা শাকসবজি, প্রাণিজ প্রোটিন গ্রহণ করবেন।’
করোনার সর্বশেষ পরিস্থিতি সম্পর্কে তিনি জানান, দেশে একদিনে করোনাভাইরাস সংক্রমিত কোভিড-১৯ রোগে আরও ৩৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ২ হাজার ৩৯১ জনে। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে ৩ হাজার ৯৯ জন এবং সুস্থ হয়ে উঠেছে ৪ হাজার ৭০৩ জন।