করোনা আতঙ্কে থাকা চিলমারীবাসী এবার বন্যার কবলে পড়ে দিশাহারা। তলিয়ে গেছে বাড়িঘর। ভয়ের উপর দুর্ভোগ তাদের জীবন যাপনে এনে দিয়েছে সংকট। বাড়িঘর তলিয়ে যাওয়ায় ভয়ে ভীত হাজার হাজার পরিবার। করোনার ভয়কে উপেক্ষা করে ঠাঁই নিয়েছে হেলিপ্যাড, রেল লাইন, কেচি সড়ক, বাঁধ, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানসহ উঁচু স্থানে। তাদের কাছে সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখা তো দুরের কথা শোয়ার স্থান টুকু নেই। দিন যাচ্ছে দুর্ভোগের পাল্লা দ্রুত বাড়ছে। চরম সংকটে দিন পার করছে বানভাসীরা।
কষ্ট আর সংকট সময় পাড় করলেও মেলেনি তাদের ভাগ্যে সরকারী বা বে-সরকারী কোন সহায়তা।
জানা গেছে, কুড়িগ্রামের চিলমারীতে করোনা প্রখর বাড়ার সাথে সাথে দু’দুবার বন্যায় আক্রান্ত হয়ে চরম দুর্ভোগে দিন পার করছেন উপজেলাবাসী। নদীর পানি কমতে শুরু করলেও প্রবল গতিতে বন্যার পানি শহরে প্রবেশ করছে তলিয়ে নিচ্ছে উপজেলা সদরসহ আশপাশ এলাকা। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় উপজেলা প্রবেশের প্রধান সড়ক, থানাহাট সদর বাজার সড়কসহ বেশকিছু সড়ক ইতি মধ্যে তলিয়ে গেছে। তলিয়ে গেছে বাসাবাড়ি। বাড়িঘর তলিয়ে যাওয়ায় মানুষজন হেলিপ্যাড, রেল লাইন, কেচি সড়কসহ বিভিন্ন উঁচু স্থানে আশ্রয় নিলেও অনেকের মেলেনি থাকার স্থান। বাড়িঘর ছেড়ে বিভিন্ন উঁচু স্থানে অনেকে আশ্রয় নিলেও খেয়ে না খেয়ে দিন পার করছে বানভাসীরা। উপজেলার মসজিদের পাড় এলাকার আয়নাল বলেন বউ, বাচ্চা আর গরু নিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন হেলিপ্যাড মাঠে খুব কষ্টে একটু ঠাঁই নিয়েছে কিন্তু শুয়ে রাত কাটবেন এর উপায় নাই।
একই অবস্থা আশ্রয় নেয়া ওয়াজেদ আলীর ঠাঁই পেয়েছেন কিন্তু দীর্ঘদিন থেকে হাতে কাজ না থাকায় ঘরের খাবারও শেষ করোনার জন্য যেতে পারেনি কোথাও এর উপর বন্যার কারনে ঘরবাড়ি ছেড়ে আশ্রয় নিলেও রয়েছেন খিদা কষ্টে। বাড়িতে বুক পানি তাই হোসনে আরা আশ্রয় নিয়েছে কেচি সড়কে সেখানেও পানি, শুক্রবার রাতে বৃষ্টিতে ভিজতে হয়েছে তাদের। কথা হয় বিজয় নগর কেচি সড়ক আশ্রয় নেয়া রবি দাশ, মঞ্জু মিয়ারসহ অনেকের সাথে তারা বলেন করোনার ভয়ে কাজের জন্য কোথায় যেতে পারি নাই এখানেও কাজ নেই আর এখন তো বন্যা সব তলিয়ে গেছে বউ বাচ্চাদের নিয়ে খুব কষ্টে আছি।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, ব্রহ্মপুত্রের পানি কমতে শুরু করলেও অনন্তপুর দিয়ে পানি প্রবেশ করে বুড়ি তিস্তা হয়ে উপজেলা সদরে পানি প্রবেশ করছে ফলে নুতুন নুতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। এলাকাবাসী জানান, গত বছরে বন্যায় ভেঙ্গে যাওয়া কাঁচকোল সড়ক মেরামত না করায় এবারেও কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে উপজেলা সদরসহ শতাধিক গ্রামের কয়েক হাজার পরিবারের। এদিকে শুক্রবার বিকালে উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ ডব্লিউ এম রায়হান শাহ্ বন্যা দুর্গতদের খবর নেয়ার পাশাপশি হেলিপ্যাড, কেচি সড়কসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে আশ্রয় নেয়া বানভাসীদের খোঁজ নেন এবং তাদের সমস্যার কথা শোনের এবং সমাধান করা হবে বলেও জানান।