বাংলা সাহিত্যের জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক ও চলচ্চিত্রকার হুমায়ূন আহমেদের বেদনাবিধুর চলে যাওয়ার অষ্টম প্রয়াণ দিবস আজ। আবেগাপ্লুত শ্রাবণ মেঘের এদিনে অঝোরধারায় কাঁদছিল আকাশ। বৃষ্টিবিলাসী হুমায়ূন আহমেদের এই চলে যাওয়াকে আজও মানতে পারেনি প্রকৃতি। প্রয়াণ দিবস উপলক্ষে লেখকের পরিবারের পক্ষ থেকে নুহাশ পল্লীতে আয়োজন করা হয় নানা কর্মসূচির। এ ছাড়াও থাকে বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের বিভিন্ন অনুষ্ঠান। কিন্তু এ বছর করোনার কারণে তেমন কোনো আয়োজন থাকছে না। পরিবারের পক্ষ থেকে কেবল নুহাশ পল্লীতে লেখকের সমাধিতে থাকছে শ্রদ্ধা নিবেদন ও বিশেষ দোয়া। তবে বিভিন্ন টিভি চ্যানেল প্রচার করবে নানা অনুষ্ঠান, তার লেখা নাটক ও চলচ্চিত্র।
হুমায়ূন আহমেদ ১৯৪৮ সালের ১৩ নভেম্বর নেত্রকোনা জেলার মোহনগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা ফয়েজুর রহমান, মা আয়েশা ফয়েজ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন হুমায়ূনের লেখালেখির শুরু। ১৯৭২ সালে প্রকাশিত হয় প্রথম উপন্যাস নন্দিত নরকে। দ্বিতীয় উপন্যাস শঙ্খনীল কারাগার প্রকাশ হয় ১৯৭৪ সালে। বই দুটি প্রকাশের পর শক্তিশালী লেখক হিসেবে পাঠক মহলে সমাদৃত হন তিনি। জীবনে আর থামার গল্প নেই, শেষ পর্যন্ত দুই শতাধিক বই তার বাজারে এসেছে।
দীর্ঘ প্রায় পাঁচ দশক লেখালেখির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন হুমায়ূন আহমেদ। বাঙালি সমাজ ও জীবনধারার গল্প ভিন্ন আঙ্গিকে উপস্থাপিত হয়েছে তার লেখায়। তিনি সৃষ্টি করেছিলেন গল্প বলার এক নিজস্ব ভাষাভঙ্গি। মুক্তিযুদ্ধ নিয়েও লিখেছেন বেশ কয়েকটি উপন্যাস, নির্মাণ করেছেন নাটক ও চলচ্চিত্র। পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন শিক্ষকতাকে। প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে। পরে যোগ দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। তবে লেখালেখিকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করে শিক্ষকতা থেকে অবসর নেন।
সাহিত্যে অবদানের জন্য হুমায়ূন আহমেদ একুশে পদক, বাংলা একাডেমি পুরস্কার, মাইকেল মধুসূদন পদকসহ অনেক পুরস্কার লাভ করেন। ২০১১ সালে ক্যানসার ধরা পড়লে পরের বছরের মাঝামাঝি সময় যুক্তরাষ্ট্রের একটি হাসপাতালে তার অস্ত্রোপচার হয়। চিকিৎসকদের সর্বোচ্চ চেষ্টাতেও বাঁচানো যায়নি জনপ্রিয় এই লেখককে।