দুই-একজনকে পদত্যাগ করিয়ে স্বাস্থ্যখাতের চলমান সংকটের সমাধান হবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পদত্যাগকারী মহাপরিচালক অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদের প্রসঙ্গ টেনে আজ শুক্রবার এক ভার্চ্যুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন তিনি। নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
রিজভী আহমেদ বলেন, ‘করোনা সংকটের কারণে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দূরাবস্থা জনগণের সামনে স্পষ্ট হয়ে পড়েছে। এই অবস্থায় দু-একজনকে গ্রেপ্তার, বদলি কিংবা পদত্যাগ করিয়ে কিংবা দুই একটা মন্ত্রণালয়ের রদবদল করে পরিস্থিতির উন্নয়ন ঘটানো সম্ভব নয়। অপ্রিয় হলেও সত্য নিশিরাতের ষড়যন্ত্রের যারা সক্রিয় ভূমিকা রেখেছিল তাদের মধ্যে থেকে ‘এধার কি মাল ওধার মে ঢাল’ কিংবা ‘চোরে চোরে মাসতুতো’ ভাইদের দিয়ে পরিস্থিতি উন্নয়নের আশা করে লাভ নেই। কারণ, এই ‘মাসতুতো’ ভাইয়েরা জানে তাদের ‘অবস্থা-অবস্থান-উত্থান’ ঘটেছে ‘দুর্নীতি প্রক্রিয়া, দুর্নীতিবাজদের মাধ্যমে দুর্নীতিবাজদের দ্বারা’।
রিজভী বলেন, ‘বাস্তবতা হলো; পরিস্থিতির উন্নয়ন ঘটাতে চাইলে জনগণের স্বার্থ রক্ষায় গোটা সরকারেরই খোলনলচে পাল্টাতে হবে। অর্থাৎ প্রধানমন্ত্রীসহ এই সরকারের পদত্যাগ করতে হবে।’
অর্থ পাঁচার ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে রিজভী বলেন, ‘জনগণের কাছে এখন স্পষ্ট এই সরকারের উদ্দেশ্য জনস্বার্থ নয়, এই উদ্দেশ্য জনগণের অর্থ সম্পদ লুটপাট ও টাকা পাচার। এদের আমলে দেশের ব্যাংকগুলো প্রায় দেউলিয়া অথচ বিদেশের ব্যাংকে জমছে বাংলাদেশ থেকে পাঁচার করা টাকা। আপনারা সুইস ব্যাংকে সাম্প্রতিক রিপোর্টে দেখেছেন, ২০১৯ সালে শুধুমাত্র সুইসজারল্যান্ডের কয়েকটি ব্যাংকে বাংলাদেশিদের গচ্ছিত টাকার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৪২৭ কোটি টাকা। কারা এসবের মালিক? তারা এত টাকা কেমন করে সেখানে পাঁচার করল? এই সরকারের গত এক দশকে দেশ থেকে ৯ লক্ষ কোটি পাঁচার হয়েছে। রাষ্ট্রের আনুকূলেই এই অর্থ লোপাট ও পাঁচারের কাজগুলো হয়েছে। এসব টাকা থাকলে সরকারকে এখন দেশের রিজার্ভের টাকার দিকে নজর দিতে হতো না।’
‘বিএনপি এখন মানসিকভাবে বিপন্ন, তারা নিজেরাই জনরোষের ভয়ে আতঙ্কে আছে’, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের দেওয়া বক্তব্যের কঠোর সমালোচনা করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘তার এই কথায় প্রতীয়মান হয় যে, সর্বক্ষেত্রে ব্যর্থতা আর সর্বগ্রাসী দুর্নীতি-লুটপাটে বেসামাল মিডনাইট সরকার দেশে-বিদেশে বিতর্কিত হয়ে পড়ায় অস্থির হয়ে পড়েছে। নিজেদের আয়না এখন কেবল জনগণের দল বিএনপিকে কল্পনা করছেন।’
রিজভী বলেন, ‘কাদের সাহেবের কথাটা হবে ‘আওয়ামী লীগ জনরোষে আতঙ্কে আছে’। কিন্তু তিনি উল্টো দিকে ঘুরিয়ে ফেলেছেন কথাটা। নিজেদের অবস্থাটা এখন অন্যের ভিতরে দেখতে চাচ্ছেন। অনুভব-অনুমান করছেন যে তাদের কী ভয়াবহ অবস্থা।’