বিয়ের দাবিতে কীটনাশক হাতে অনশনে বসেছেন এক তরুণী (১৯)। অনশনের খবর শুনে প্রেমিক বাড়ি থেকে পালিয়ে গেছে। ঘটনাটি ঘটেছে নেত্রকোনা জেলার মদন উপজেলার তিয়শ্রী ইউনিয়নের ধুবাওয়ালা গ্রামে।
গতকাল রোববার বেলা ১১টার দিকে মেয়েটি তার প্রেমিকের বাড়িতে আসে। বর্তমানে এ তরুণী উপজেলা ভাইস-চেয়ারম্যান তোফায়েল আহমেদের হেফাজতে রয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আট বছর আগে একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে এ তরুণীর দেখা হয় মদন উপজেলার তিয়শ্রী ইউনিয়নের ধুবাওয়ালা গ্রামের মেনু ভূঁইয়ার ছেলে রুমেলের সঙ্গে। তরুণীর বাড়িও একই ইউনিয়নের তিয়শ্রী উত্তর পাড়া গ্রামে।তখন থেকে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
দীর্ঘদিন তাদের মধ্যে মন দেওয়া-নেওয়া চলছিল। গত কয়েকদিন যাবৎ প্রেমিক রুমেলকে বিয়ে করার জন্য চাপ সৃষ্টি করে প্রেমিকা। তবে বিষয়টি প্রেমিকের পরিবারের লোকজন মেনে না নেওয়ায় প্রেমিকা নিরুপায় হয়ে রোববার সকালে প্রেমিকের বাড়িতে এসে অনশন শুরু করেন। বিয়ে না করলে আত্মহত্যা করবেন বলেও হুমকি দিচ্ছেন। এ নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
ওই তরুণী বলেন, ‘গত ৮ বছর আগে একটি বিয়ে অনুষ্ঠানে রুমেলের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পারিবারিক ভাবে আমার বিয়ের প্রস্তাব দেওয়া হলেও রুমেলের পরিবার আমাদের বিয়ে মেনে নেবে না এমন কথা বলে আসছে। সে (রুমেল) একটি কোম্পানিতে চাকরি করে। শুনেছি ঈদের ছুটিতে বাড়িতে এসেছে। এ খবর শুনেই আমি তার বাড়িতে এসেছি। তার ঘরে প্রবেশ করতেই আমাকে তাদের পরিবারের লোকজন হেনস্তা করেছেন। আমার আসার খবর পেয়েই তার পরিবারের লোকজন রুমেলকে পালিয়ে যেতে সহযোগিতা করেছে। রুমেলসহ তার পরিবারের লোকজন বিয়ের বিষয়টির সুরাহা না করা পর্যন্ত অনশন চলবে। তারা বিয়ে মেনে না নিলে আমি এখানেই আত্মহত্যা করবো।’
এ বিষয়ে প্রেমিকার বাড়িতে যোগাযোগ করা হলে তাদের পক্ষে স্থানীয় ইউপি সদস্য জানান, তার পরিবারের লোকজন বলেছে মেয়ে যেখানে গিয়েছে সেখানেই থাকবে। এটা তার ব্যাপার।
ওই প্রেমিকের বড় ভাই রাসেল জানান, ‘আমার পরিবারকে ফাঁসানো হয়েছে। এটি একটি চক্রান্ত।’ বিয়ের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি এড়িয়ে যান।
তিয়শ্রী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ফখর উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমি শুনেছি রোববার সকালে ধুবাওয়ালা গ্রামে বিয়ের দাবিতে অনশন করেছে। বর্তমানে ওই তরুণী উপজেলা ভাইস-চেয়ারম্যানের হেফাজতে রয়েছেন।’
মদন উপজেলা পরিষদের ভাইস-চেয়ারম্যান তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘ধুবাওয়ালা গ্রামে বিয়ের দাবিতে কীটনাশক জাতীয় বিষ হাতে নিয়ে এক তরুণী অনশন করেছেন। তিনি আত্মহত্যা করার জন্য চেষ্টা করায় জনপ্রতিনিধি হিসেবে সেখানে গিয়ে তাকে আমার হেফাজতে রেখেছি। বিষয়টি নিয়ে আমি নিজেও দুশ্চিন্তায় আছি।’
মদন থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) আলমগীর হোসেন বলেন, ‘অনশনের সংবাদের প্রেক্ষিতে রোববার বিকেলে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। প্রেমিকাকে অনশনে দেখলেও প্রেমিককে পাইনি। ওই তরুণী অভিযোগ করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’