বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২:২৬ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
ইসকন ইস্যুতে দেশি-বিদেশি ইন্ধন থাকতে পারে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা চট্টগ্রামে আইনজীবী হত্যা, যে নির্দেশ দিলেন প্রধান উপদেষ্টা স্বৈরাচার পালিয়ে গেলেও তাদের লেজ রেখে গেছে : তারেক রহমান আইনজীবীকে ‘কুপিয়ে হত্যা করল’ ইসকন সদস্যরা অনির্দিষ্টকালের জন্য সেন্ট গ্রেগরি হাইস্কুল বন্ধ ঘোষণা অহিংস গণঅভ্যুত্থানের আহ্বায়কসহ ১৮ জনকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ ঢাকা ও চট্টগ্রামে ১০ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন রাষ্ট্রদ্রোহের ঘটনায় যুক্ত থাকলে ছাড় দেয়া হবে না : আসিফ মাহমুদ চিন্ময়কে গ্রেফতারের নিন্দা জানিয়ে ভারতের বিবৃতি মানুষ কেন তাদের ওপর বিক্ষুব্ধ, গণমাধ্যমের তা স্পষ্ট করা উচিত : নাহিদ ইসলাম

বিতর্কিতদের ঠাঁই দিতে প্রভাবশালীদের চাপ

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২০
  • ২০৫ বার

কৃষক লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটির তালিকা আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার দপ্তরে ইতোমধ্যে জমা হয়েছে। এ মাসের মধ্যেই কমিটি ঘোষণা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। নানা কা-ে বিতর্কিত চার নেতাকে কমিটির গুরুত্বপূর্ণ পদে রাখার জন্য একাধিক মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের তিন প্রভাবশালী কেন্দ্রীয় নেতার চাপ রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

জানা যায়, করোনা মহামারীর কারণে আটকে ছিল আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন কৃষক লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি। যে কারণে সম্মেলনের প্রায় ১০ মাস পরও কমিটি গঠন সম্ভব হয়নি। চলতি মাসের ১৫ তারিখের মধ্যেই পূর্ণাঙ্গ কমিটি জমা দেওয়ার নির্দেশনা ছিল আওয়ামী লীগের হাইকমান্ডের। নির্দেশনা মোতাবেক নির্ধারিত সময়ের আগেই কৃষক লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটির তালিকা জমা দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট নেতারা।

আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে পূর্ণাঙ্গ কমিটির খসড়া চাওয়ার পর থেকে কৃষক লীগ ও আওয়ামী লীগের নেতাদের বরাবর বেশ কয়েকটি অভিযোগ জমা পড়ে। সিরাজগঞ্জ জেলার রায়গঞ্জ উপজেলার ‘ব্রহ্মগাছা ইউনিয়ন মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির’ সদস্যরা একটি অভিযোগ জমা দেন কৃষক লীগ ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে। ওই অভিযোগপত্রে কৃষক লীগের সাবেক নেতা মো. সাখাওয়াত হোসেনের (সুইট) বিরুদ্ধে সরকারি এস্টেটভুক্ত জলাশয় রেজিস্ট্রি দলিল করে তা দখলের অভিযোগ করা হয়েছে। তিনি সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালনকালে কৃষক লীগের নিয়মিত প্রকাশনা ‘কৃষকের কণ্ঠ’

বিজ্ঞাপনের বিল সংগঠনের অ্যাকাউন্টে জমা না দিয়ে তার নিজের অ্যাকাউন্টে জমা দেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মো. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, এসব আমার নামে মিথ্যা অভিযোগ। জলাশয় বিষয়গুলো অনেক আগেই শেষ হয়ে গেছে। বিজ্ঞাপনের বিল আমার অ্যাকাউন্টে জমার অভিযোগও ভিত্তিহীন।

টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলা কৃষক লীগের কয়েকজন নেতা অভিযোগ তুলেছেন গত কমিটির তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক কাজী এটিএম আনিসুর রহমান বুলবুলের বিরুদ্ধে। তিনি ২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচনে টাঙ্গাইল-৬ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আনারস প্রতীকে নির্বাচন করেন। কৃষক লীগের গঠনতন্ত্র মোতাবেক দলীয় প্রতীকের বিরুদ্ধে প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ ও আওয়ামী লীগের সভাপতির বিরুদ্ধে বাজে মন্তব্য করায় তাকে বহিষ্কার করে কৃষক লীগ।

কৃষক লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আতিকুল হক আতিকের অনিয়ম ও দুর্নীতি থেকে সারাদেশের কৃষক লীগের নেতাকর্মীদের মুক্তি চেয়ে শীর্ষ পর্যায়ে চিঠি দেন কেন্দ্রীয় কৃষক লীগের সাবেক সদস্য মো. আরিফ হোসেন। চিঠিতে তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ কৃষক লীগের আয়োজিত পহেলা আগস্টের রক্তদান কর্মসূচিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কাছাকাছি থেকে দেখাব বলে আশা দিয়ে এক লাখ ৫০ হাজার টাকা নেন। পরবর্তী অনুষ্ঠানে দাওয়াত কার্ড না দিয়ে উল্টো আমাকে গালিগালাজ করেন এবং আমাকে এক লাখ টাকা না দিলে সাবেক সভাপতি মোতাহার হোসেন মোল্লার মাধ্যমে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করার হুমকি দেন।

অন্যদিকে আওয়ামী লীগের নেতাদের কাছে চিঠি দেন শর্মী চন্দ নামের নারী। তিনি কৃষক লীগের সাবেক নেতা সাকিলুর রহমান সোহাগের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। সেই মামলার কপি সংযুক্ত করে এই চিঠিটি দেন। কৃষক লীগ নেতা সোহাগের বিরুদ্ধে ১৭ মার্চ ভাটারা থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন সংশোধনী ২০০৩-এ বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ ও মারধরের অভিযোগে মামলা করেন। মামলা নম্বর ৩৭। শুধু তারা নয়, এ রকম অর্ধশতাধিক বিতর্কিত নেতা কৃষক লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে আনতে বিভিন্ন মন্ত্রী, এমপি ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের দিয়ে দায়িত্বপ্রাপ্তদের ওপরে চাপ দিচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

অভিযোগের বিষয়ে সাকিলুর রহমান সোহাগ ও আতিকুল হক আতিকের বক্তব্য জানতে তাদের ব্যক্তিগত ফোনে একাধিকবার কল দিয়েও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

বিভিন্ন নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে কৃষক লীগের সভাপতি কৃষিবিদ সমীর চন্দ আমাদের সময়কে বলেন, যারা বিগত কমিটির সময় বিভিন্ন রকম অপকর্ম করেছেন তারা নিজেরাই বাদ পড়ার আতঙ্কে ভুগছেন। তারা নিজেদের রক্ষার জন্য প্রভাবশালী আওয়ামী লীগের নেতাদের কাছে জোর লবিং চালাচ্ছেন বলে জনশ্রুতি রয়েছে। তবে আমরা খসড়া কমিটিতে পরিচ্ছন্ন, ত্যাগী নেতাকর্মীদের স্থান দেওয়ার চেষ্টা করেছি। যাচাই-বাছাই করার এখতিয়ার দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনার।

কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট উম্মে কুলছুল স্মৃতি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমরা কমিটি জমা দিয়েছি। তিনি যেভাবে দেবেন আমরা সেভাবে দেব। বিতর্কিতদের বিষয়ে সবাই জানে কোথায় কী হবে, না হবে। কোন নেতা আমাদের শেল্টারে থাকবে, কোন নেতা থাকবে না- এটা তো নেত্রীর কাছে জমা দেওয়াই আছে। এ বিষয়ে মন্তব্য করারও কিছু নেই।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com